মধু নষ্ট হওয়ার কারণ

চিনির বিকল্প এবং বিভিন্ন সমস্যার ঘরোয়া সমাধান হিসেবে মধু অত্যন্ত সুপরিচিত। ডায়বেটিস রোগী এবং যারা ওজন কমাতে চাচ্ছেন তাদের জন্য মধু পরম বন্ধু। তবে চাহিদা বাড়ার কারণে মধুতেও ভেজাল এসেছে, সঙ্গে এসেছে বিভিন্ন স্বাস্থ্যগত সমস্যা।

লাইফস্টাইল ডেস্কবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 24 June 2018, 08:35 AM
Updated : 24 June 2018, 08:41 AM

ফলে প্রশ্ন দাঁড়িয়েছে, মধুও কি নষ্ট হতে পারে?

স্বাস্থ্যবিষয়ক একটি ওয়েবসাইটে এই বিষয়ের ওপর প্রকাশিত প্রতিবেদন অবলম্বনে মধু নষ্ট হওয়ার কারণ ও সংরক্ষণে কী ধরনের সাবধানতা নিতে হবে সে সম্পর্কে জানানো হল।

মধু যেভাবে তৈরি হয়

মৌমাছি পুষ্পসুধা সংগ্রহ করে তাদের লালা ও অন্যান্য এনজাইমের সঙ্গে মিশিয়ে চাকে সংরক্ষণ করে। চাকে থাকতে থাকতে মধু পাকতে থাকে। তাই মধু যত পুরানো তার দাম তত বেশি, স্বাদও বেশি। মধুর বিভিন্ন রং ও স্বাদ হতে পারে, যা নির্ভর করে ফুল এবং মৌমাছির প্রজাতির ওপর। এতে থাকতে পারে ৮০ ভাগ পর্যন্ত চিনি আর সর্বোচ্চ ১৮ ভাগ পানি।

পুষ্টিগুণ

মধুতে থাকে ‘গ্লুটোনিক অ্যাসিড’, যা শরীরে অম্লের মাত্রা নিয়ন্ত্রণে সহায়ক। অপ্রক্রিয়াজাত মধুতে সামান্য পরিমাণে প্রোটিন, অ্যামিনো অ্যাসিড ও পটাশিয়াম থাকে। এর প্রধান পুষ্টিগুণ হল চিনি। প্রতি টেবিল-চামচে থাকে প্রায় ৬৫ ক্যালরি আর ১৭ গ্রাম চিনি।

ব্যাকটেরিয়ার বৃদ্ধি দমন করে

মধু অম্লীয় হওয়ায় ই-কোলি ও সালমোনেলা ধরনের ব্যাকটেরিয়া এর সংস্পর্শে আসলে নষ্ট হয়ে যায়। এছাড়াও এতে ব্যাকটেরিয়ারোধী উপাদানও রয়েছে যা অত্যন্ত ক্ষুদ্রাকার জীবাণুর বেড়ে ওঠা রোধ করে।

হতে পরে দূষিত

কিছু বিশেষ ক্ষেত্রে মধু নষ্ট হতে পারে। যেমন- মধু দূষিত হলে। এই দূষণের কারণ হতে পারে বাহক মৌমাছির হজমতন্ত্র কিংবা ফুলের চারপাশের পরিবেশ। দ্বিতীয় স্তরে মধু নষ্ট হওয়ার কারণ হল- যে বয়াম বা কৌটায় মধু সংরক্ষণ করা হয় সেটা যদি নোংরা হয় বা অস্বাস্থ্যকর হাতের সংস্পর্শে আসলে, কিংবা মধুতে নোংরা পানি মিশে গেলে।

পরাগায়নের কারণে বিষাক্ততা

পরাগায়নের সময় মৌমাছি যখন ফুলের ওপর বসে মধু আহরণ করে, তখন ওই গাছ থেকে বিষাক্ত কোনো উপাদান মৌমাছি গ্রহণ করে ফেলতে পারে। এই ধরনের উদ্ভিদ থেকে পাওয়া মধু খেলে বমিভাব, মাথা ঝিমঝিম এবং রক্তচাপজনীত জটিলতা দেখা দেয়।

সংরক্ষণে ভুল

গহীন বনে চাক কাটছেন মৌয়ালরা। ছবি: মুস্তাফিজ মামুন

কোন পাত্রে মধু সংরক্ষণ করা হচ্ছে তা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। সঠিক পাত্রে সংরক্ষণ করা না হলে মধুর ‘অ্যান্টি-মাইক্রোবায়াল’ উপাদান হারাবে, যা অণুজীব বেড়ে ওঠা রোধ করে।

ভেজালের মিশ্রণ

ধোঁয়া দিয়ে তাড়ানো হয়েছে মৌমাছি, এবার চাক কাটার পালা। ছবি: মুস্তাফিজ মামুন

মধু দীর্ঘদিন খাওয়ার যোগ্য রাখতে এবং তার পরিমাণ বাড়াতে বর্তমানে নানান ধরনের ভেজাল মেশানো হয়। এই পদ্ধতিতে মধুতে যোগ করা হয় পানি থেকে শুরু করে কর্ন সিরাপসহ বিভিন্ন উপাদান। ক্রেতার মনোরঞ্জনের জন্য পরিবর্তন আনা হয় মধুর প্রাকৃতিক প্রস্তুত প্রক্রিয়াতেও। আর একারণেই মধু দ্রুত খাওয়া অযোগ্য হয়ে যায়।

করণীয়

ধামা ভর্তি কাটা চাক নিয়ে ফিরছেন এক মৌয়াল। ছবি: মুস্তাফিজ মামুন

মধু সংরক্ষণ করতে হবে বায়ুরোধী পাত্রে। আর পাত্রটি রাখতে হবে ঠাণ্ডা এবং শুকনা জায়গায়।

আরও পড়ুন