যেসব কারণে শরীরে বিশ্রী গন্ধ হয়

শরীরের দুর্গন্ধ মানুষকে অস্বস্তি এবং বিব্রতকর অবস্থায় ফেলে। ঘাম ছাড়াও দেহে দুর্গন্ধ হওয়ার আরও কারণ রয়েছে।

লাইফস্টাইল ডেস্কবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 13 June 2018, 09:29 AM
Updated : 13 June 2018, 09:29 AM

স্বাস্থ্যবিষয়ক একটি ওয়েবসাইটে এই বিষয়ের ওপর প্রকাশিত প্রতিবেদন অবলম্বনে শরীরে দুর্গন্ধ হওয়ার বিভিন্ন কারণগুলো এখানে দেওয়া হল।

ব্যাকটেরিয়া: শরীরে দুই ধরনের ঘাম নিঃসরণকারী গ্রন্থি থাকে, ‘এক্রিন’ এবং ‘অ্যাপোক্রিন’। ‘এক্রিন’ গ্রন্থি আমাদের পুরো শরীরে ছড়িয়ে আছে যা শরীরের তাপমাত্রা নিয়ন্ত্রণ করে। এই গ্রন্থি থেকে নিঃসৃত ঘাম লবণ আর পানির ‍মিশ্রণ- যার কোনো গন্ধ নেই।

অপরদিকে ‘অ্যাপোক্রিন’ গ্রন্থি থাকে চুলের গোড়া, জননাঙ্গ, বগল এবং মাথার ত্বকে। এই গ্রন্থি থেকে নিঃসৃত ঘন ঘাম হল প্রোটিন এবং ‍লিপিডের মিশ্রণ।

ব্যাকটেরিয়া এই গ্রন্থির সংস্পর্শে আসলে রাসায়নিক বিক্রিয়া ঘটায়। এই বিক্রিয়ার বাজে গন্ধ থেকেই শরীরের দুর্গন্ধ হয়। উচ্চ তাপমাত্রা, মানসিক চাপ কিংবা অস্বস্তিতে পড়লেই আমরা শরীরের দুর্গন্ধ টের পাই।

ওজন: স্থূলকায় মানুষের শারীরে দুর্গন্ধ হতে দেখা যায় তুলনামূলক বেশি। এর কারণ হল মোটা মানুষের সবকাজেই পরিশ্রম বেশি হয়। আবার পুরু চামড়ার স্তরে অনেক সময় ঘাম আটকে থাকে, যা ব্যাকটেরিয়া বিস্তারে সহায়তা করে।

মানসিক চাপ: অবাক লাগলেও সত্যি কথা হচ্ছে, মানসিক চাপে থাকলে ঘাম বেশি হয়। আর মানসিক চাপগ্রস্থ অবস্থায় ‘অ্যাপোক্রিন’ গ্রন্থি থেকে ঘাম নির্গত হয়, ফলে শরীরে দুর্গন্ধ হয়।

ফিশ ওডোর সিনড্রোম: দুর্লভ একটি রোগ এই ‘ফিশ ওডোর সিনড্রোম’, যেখানে মানুষের শরীর থেকে মাছের গন্ধ বের হয়। ধারণা করা হয় জিনগত সমস্যা এই রোগের কারণ।

এই দুর্গন্ধ রোগাক্রান্ত ব্যক্তির শ্বাসপ্রশ্বাস, মূত্র এবং ঘামকেও প্রভাবিত করে। এক্ষেত্রে ব্যক্তিগত পরিচ্ছন্নতা মেনে চলা, মানসিক চাপ নিয়ন্ত্রণে রাখা, সুগন্ধি ব্যবহার ইত্যাদির মাধ্যমে শরীরের দুর্গন্ধ কমানো সম্ভব।

রোগ ও ওষুধ: বিভিন্ন শারীরিক রোগ এবং কিছু ওষুধের কারণেও শরীরে দুর্গন্ধ হতে পারে। যেমন–– হতাশা নিয়ন্ত্রক ওষুধ সেবনের কারণে শরীরে অদ্ভুত গন্ধ হতে পারে। আবার পাকস্থলী ও যকৃতের সমস্যা, ডায়াবেটিস থেকে ত্বকে অতিরিক্ত ব্যাকটেরিয়ার বিক্রিয়া থেকে শরীরে দুর্গন্ধ হয়ে থাকে। এক্ষেত্রে ত্বক পরিষ্কার রাখা এবং ঘাম এড়ানোর জন্য ত্বকে আলোবাতাস প্রবেশ করতে পারে এমন পোশাক পরা জরুরি।

খাবার: পেঁয়াজ, ফুলকপি, বাঁধাকপি ইত্যাদিতে থাকা ‘সালফার’ উপাদান ‘এক্রিন’ গ্রন্থির উপর বাজে প্রভাব ফেলে। ফলে এই গ্রন্থি থেকে নিঃসৃত ঘামেও গন্ধ হয়। তবে এই গন্ধ বেশিক্ষণ থাকে না।

অ্যালকোহল এবং মাংস থেকেও শরীরে দুর্গন্ধ হতে পারে। এক্ষেত্রে প্রচুর পানি পান করলে উপকার পাওয়া যায়।

আরও পড়ুন