নিঃসঙ্গতা যখন মরণ ফাঁদ

নিজের মতো একা থাকা আর একাকী বোধ করার মধ্যে যথেষ্ট পার্থক্য রয়েছে। নিঃসঙ্গতার বোধ হৃদয়ের জন্য বিপদ ডেকে আনতে পারে।

লাইফস্টাইল ডেস্কবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 12 June 2018, 10:17 AM
Updated : 12 June 2018, 10:17 AM

ডেনমার্কের ‘কোপেনহেগেন ইউনিভার্সিটি হসপিটাল’য়ের এক গবেষণায় দেখা গেছে একাকিত্ব হৃদযন্ত্রের জন্য ক্ষতিকর এবং মৃত্যু ঝুঁকি প্রায় দ্বিগুন করে তুলতে পারে।

একা থাকার তুলনায় নিজেকে একা অনুভব করা হৃদরোগীদের স্বাস্থ্যগত পরিস্থিতি আরও খারাপ করে তোলে।

ডেনমার্কের কোপেনগেহেন ইউনিভার্সিটি হসপিটালের পিএইচডি’র শিক্ষার্থী অ্যানি ভিনগার্দ ক্রিস্টেনসেন বলেন, “আগের তুলনায় বর্তমানে নিঃসঙ্গতা বোধ বেশি সমস্যা হয়ে দাঁড়িয়েছে। প্রচুর মানুষ একা বাস করেন।”

“আগের গবেষণায় দেখা গেছে, একাকিত্ব এবং সামাজিকভাবে একঘরে হয়ে থাকার সঙ্গে হৃদরোগ এবং স্ট্রোকের সম্পর্ক রয়েছে। তবে এই বিষয়টি বিভিন্ন ধরনের হৃদরোগীদের উপর পরীক্ষা করে দেখা হয়নি।”

এই গবেষণায় কাজ করা হয় ১৩ হাজার ৪৬৩ হৃদরোগীদের নিয়ে। এদের মধ্যে ছিল ইসকিমিক হৃদরোগী, ‘অ্যারিদমিয়া’ অর্থাৎ হৃদযন্ত্রের অস্বাভাবিক ছন্দ, হার্ট ফেইলুয়ার, হার্ট ভালভ ডিজিজ’য়ের রোগী। যারা সবাই ২০১৩ সাল থেকে ২০১৪ সালের মধ্যে ডেনমার্কের বিভিন্ন হৃদরোগের হাসপাতাল থেকে ছাড়পত্র পেয়েছেন।

তাদেরকে প্রশ্ন করা হয় মানসিক এবং শারীরিক স্বাস্থ্য, ধূমপান, সামাজিক সহযোগিতা ইত্যাদি বিষয়ে।

চিকিৎসার পরেও প্রত্যেকেরই পরবর্তী স্বাস্থ্যগত অবস্থা খারাপ হয়েছে; যার কারণ ছিল একাকীত্ব।

বিভিন্ন ধরনের হৃদরোগ, ভিন্ন বয়স, শিক্ষাগত যোগ্যতা, অন্যান্য রোগ, বডি ম্যাস ইনডেক্সের বিভিন্ন মাত্রা, ধূমাপান, অ্যালকোহল সবকিছু বিবেচনা করেও ফলাফল একই পাওয়া গিয়েছে।

নিঃসঙ্গতা নারীদের ক্ষেত্রে মৃত্যুর ঝুঁকি বাড়ায় প্রায় দ্বিগুন, পুরুষদের ক্ষেত্রে তা সামান্য কম। প্রতিটি নিঃসঙ্গ নারী কিংবা পুরুষের অস্বস্তি ও হতাশগ্রস্ত হয়ে পড়ার সম্ভাবনা তিনগুন বেশি। জীবনযাত্রা মানও তাদের নিঃসঙ্গ নয় এমন মানুষের তুলনায় উল্লেখযোগ্য মাত্রায় নিম্ন।

ভিনগার্দ ক্রিস্টেনসেন বলেন, “নারী ও পুরুষের অকাল মৃত্যুর জন্য একাকিত্ব একটি বড় কারণ। মানসিক সমস্যার থেকেও মারাত্বক।”

তিনি আরও বলেন, “সামাজিক সহযোগিতাহীন অবস্থায় যারা আছেন তাদের স্বাস্থ্যগত অবস্থা অবনতির দিকে যায়। কারণ তাদের জীবনযাত্রা অস্বাস্থ্যকর। তারা চিকিৎসা এবং চিকিৎসকের পরামর্শ মেনে চলেন কম এবং তারা মানসিক চাপগ্রস্ত অবস্থায় ক্ষতিগ্রস্তও হন বেশি।”

আরও পড়ুন