খাওয়া নিয়ন্ত্রণ করতে না পারলে ওজনও নিয়ন্ত্রণে রাখা সম্ভব না। তাই পেটের ‘ছুঁচোর ডাক’ বন্ধ করতে জানা থাকা চাই কয়েকটি পন্থা।
Published : 14 May 2018, 01:54 PM
ধরাবাঁধা খাদ্যাভ্যাসে নিজেকে বেঁধে রাখা প্রথমদিকে প্রায় অসম্ভব হয়ে দাঁড়ায় এই ক্ষুধার কারণে। আর সামনে যদি থাকে প্রিয় কোনো খাবার তবে তো গোল্লায় যায় ‘ডায়েট’।
স্বাস্থ্যবিষয়ক এক ওয়েবসাইটে প্রকাশিত প্রতিবেদন অবলম্বনে ক্ষুধা কমানোর কয়েকটি পন্থা এখানে দেওয়া হল।
পানি পান: শরীর আর্দ্র রাখতে পানি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। আর এই কাজে পানির সঙ্গে চা, লেবু পানি কিংবা গ্রিন টি কোনোটারই তুলনা চলে না। ক্ষুধা নিয়ন্ত্রণে প্রতিদিন পর্যাপ্ত পরিমাণ পানি পান করতে হবে। কারণ পিপাসা’কে ক্ষুধা ভেবে ভুল হয় অনেকেরই।
শরীরচর্চা: গবেষণা মতে, নিয়মিত শরীরচর্চা ক্ষুধা কমায়, বাড়ায় না। তাই ক্ষুধা নিয়ন্ত্রণে শরীরচর্চাও অত্যন্ত কার্যকর।
চুইংগাম: অস্বাস্থ্যকর স্ন্যাকসের বদলে চুইংগাম চিবানোর মাধ্যমে মস্তিষ্কর সঙ্গে চালাকি করা যেতে পারে। নিজের মস্তিষ্কের সঙ্গে প্রতারণা হলেও তা আপনাকে ওজন কমানোর পথে বাধাদানকারী খাবার থেকে দূরে রাখবে। তাই ‘সুগার ফ্রি’ চুইংগাম হতে পারে ক্ষুধা কমানোর ভালো একটি উপায়।
প্রোটিন: পেট অনেক্ষণ ভরা রাখতে প্রোটিনসমৃদ্ধ খাবার খাওয়া যেতে পারে। তবে প্রক্রিয়াজাত বা চর্বিযুক্ত মাংস দিয়ে নয়, প্রোটিনের জন্য খেতে পারেন দই, দুধ, পনির, মুরগির মাংস, মাছ, শুঁটি বা দানাদার খাবার, সবজি, ডাল ইত্যাদি।
নাস্তা: গোগ্রাসে নয়, স্ন্যাকস খেতে হবে রয়েসয়ে। পরিমাণ মতো খেলে স্ন্যাকসও স্বাস্থ্যকর এবং তা শরীরকে প্রয়োজনীয় জ্বালানি যোগাবে। তবে তা করতে হবে স্বাস্থ্যকর পদ্ধতিতে। যেমন দেড় থেকে দুই ঘণ্টা বিরতিতে স্ন্যাকস খাওয়া আদর্শ। এতে ক্ষুধাও নিয়ন্ত্রণে থাকবে।
নিজের জন্য আকর্ষণীয় খাদ্য: খাবারের স্বাদও ক্ষুধার জন্য দায়ী হতে পারে। যে ধরনের খাবার আপনার পছন্দ তা একেবারেই ত্যাগ করে যদি সবজিতে নিজেকে বেঁধে রাখেন তবে ক্ষুধা কমবে না, বরং বাড়বে। তাই যতটা সম্ভব ঘরের খাবার খাওয়ার চেষ্টা করতে হবে। ঘরে খেলেও মনে রাখতে হবে, সালাদ খাবেন বলে ডালকে দূরে ঠেলে দেওয়া চলবে না। খেতে হবে দুটোই। তবে পরিমাণ মতো।
চিনি: অতিরিক্ত প্রক্রিয়াজাত খাবারের মাধ্যমে প্রক্রিয়াজাত চিনি খেলে ক্ষুধা বাড়ে। তাই মিষ্টির প্রতি লোভ কোনোভাবেই সামলাতে না পারলে প্রাকৃতিক চিনির উৎস যেমন ফল, গুড় ইত্যাদি খান। আর মিষ্টি খেতে হবে অন্য খাবারের সঙ্গে মিশিয়ে। যাতে পরে আবার মিষ্টি খাওয়ার ইচ্ছা না জাগে।
খাবারে তৃপ্তি: মনোযোগ দিয়ে এবং ধীরগতিতে খাবার খেতে হবে। ধীরে খেলে তৃপ্তি মিলবে বেশি। পেট ভরা থাকবে দীর্ঘক্ষণ। ফলে ক্ষুধাও অনুভূত হবে কম।
সকালের নাস্তা: ওজন কমানোর জন্য একবেলা না খেয়ে কার্যকর উপায় মনে হলেও আসলে পুরোটাই বিপরীত। আর এদের মধ্যে সকালের নাস্তাটা সবচাইতে গুরুত্বপূর্ণ। কারণ সকালের নাস্তা না করার কারণে সারাদিন ক্ষুধা অনুভূত হবে, দুপুরে প্রয়োজনের চাইতে বেশি খাবার খাওয়া হবে। তারপরেও ক্ষুধা থেকে যেতে পারে। এছাড়াও সকালে ঘুম থেকে ওঠার পর খালি পেটে শরীরকে পুষ্টি সরবরাহ করাও জরুরি।
অন্যান্য: পর্যাপ্ত পানি ও নিয়মমাফিক খাওয়ার পরও যদি ঘন ঘন ক্ষুধা লাগে তবে বুঝতে হবে শারীরিক কোনো রোগ এর পেছনে দায়ী। তাই দ্রুত চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে হবে।