ভারতীয় ভেষজ সৌন্দর্যচর্চার পণ্য বিক্রেতা প্রতিষ্ঠান ‘সৌলফ্লাওয়ার’য়ের ব্যবস্থাপনা পরিচালক অমিত সাহা এবং নায়িকা বিউটি’র প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা রিনা ছাব্রা জানাচ্ছেন এই পদ্ধতিগুলো।
ল্যাভেন্ডার: পোড়া, কাটা, পোকামাকড়ের কামড় ইত্যাদি বিভিন্ন ক্ষত সারিয়ে তোলার প্রক্রিয়া দ্রুত করে ল্যাভেন্ডার। এর বিশেষ গুণাগুণ হল ব্যথানাশক, ছত্রাকরোধী, অ্যান্টিসেপটিক, ঘুমে সহায়ক এবং সংক্রমণ রোধী।
ভালো ঘুম পেতে বালিশে কয়েক ফোঁটা ল্যাভেন্ডার অয়েল মাখিয়ে নিতে পারেন। ত্বকের সাধারণ জ্বালাপোড়া সারাতে নারিকেল তেলের সঙ্গে কয়েক ফোঁটা মিশিয়ে মাখতে পারেন। নখের যত্নের মাখতে পারেন অলিভ অয়েলের সঙ্গে মিশিয়ে।
রোজমেরি: উদ্ভিজ্জ গন্ধযুক্ত এই তেল বর্ণহীন থেকে হালকা হলুদ রংয়ের হয়। এর ‘অ্যাসট্রিনজান্ট’ উপাদান পরিষ্কার করতে, আর্দ্রতা যোগাতে, ত্বকের ক্ষয়পূরণ এবং শক্তিশালী করতে সাহায্য করে।
বলিরেখা এবং চোখের নিচের কালো দাগ দূর করতে এবং ক্ষতের দাগ হালকা করতেও কাজে আসে এই তেল। ত্বকের ফোলাভাব কমাতেও কার্যকর।
চুলে কিংবা ত্বকে এই তেল অন্য তেলের সঙ্গে মিশিয়ে মাখতে হবে। চুল গজানোর জন্য এক টেবিল-চামচ নারিকেল তেলের সঙ্গে চার থেকে পাঁচ ফোঁটা মিশিয়ে চুল ও মাথার ত্বকে সমানভাবে ছড়িয়ে দিতে হবে। সারারাত রেখে কুসুম গরম পানিতে ধুয়ে ফেলতে হবে।
ল্যাং ল্যাং: ফুলেল গন্ধের এই তেল চুল পুনরায় গজানোর জন্য ইংল্যান্ডে ভিক্টোরিয়ান আমল থেকে সুপরিচিত।
চুলের গভীরে কন্ডিশনিং করতে নারিকেল তেলের সঙ্গে দুতিন ফোঁটা মিশিয়ে মাখতে পারেন। গোসলের পানিতে এই তেল এবং ইপসম সল্ট মিশিয়ে নিলে বাড়তি আরাম পাওয়া যায়।
টি ট্রি: প্রদাহরোধী, ছত্রাকরোধী, অ্যান্টিসেপ্টিক, ভাইরাসরোধী এবং শ্লেষ্মা বের করতে সহায়ক। ক্ষত সারাতে এবং সুরক্ষিত রাখতে এটা উপকারী। কাজে লাগে পোকামাকড় তাড়াতেও। যে কোনো তেলের সঙ্গে মিশিয়ে ত্বক ও চুলের যত্নে ব্যবহার করা যায়। তবে সরাসরি ত্বকে প্রয়োগ করা যাবে না।
ঠোঁটের যত্নে ব্যবহার করতে পারেন, মাখতে হবে অলিভ অয়েলের সঙ্গে মিশিয়ে। ব্রণ দূর করার ক্ষেত্রে দুই টেবিল-চামচ অ্যালোভেরা জেলের কয়েক ফোঁটা মিশিয়ে আক্রান্ত স্থানে মাখতে হবে। তিন থেকে চার ঘণ্টা কিংবা সারারাত রেখে দিয়ে ধুয়ে ফেলতে হবে।
ইউক্যালিপ্টাস: সাইনাস, ব্রঙ্কাইটিস, অ্যালার্জি ইত্যাদি বিভিন্ন শ্বাসনালীর সমস্যা সমাধানে এর জুড়ি মেলা ভার। কফ জমা কমাতে এবং মানসিক অবস্থা ভালো রাখতেও এটি কাজে লাগে। এছাড়াও আছে ব্যাকটেরিয়া ও প্রদাহরোধী উপাদান, অ্যান্টিসেপ্টিক, অ্যান্টিস্পাস্মোডিক গুণাবলী।
ত্বক ও চুলে মাখতে হবে অন্য তেলের সঙ্গে মিশিয়ে। কুসুম গরম পানিতে মিশিয়ে গোসল করলে আরাম মিলবে। এই তেল পানিতে মেশে না, তাই বাথ সল্টের সঙ্গে মিশিয়ে পানিতে দিতে হবে।
পেপারমিন্ট: মন চাঙ্গা করে এবং সাইনাসের সমস্যা দূর করতে পেপারমিন্ট অত্যন্ত উপকারী। লেবু পানির সঙ্গে এক ফোঁটা মিশিয়ে বানানো যায় মাউথওয়াশ। মাথার উপর চাপ কমাতে এক ফোঁটা তেল নিয়ে কপাল ও তার দুই কোণায় এবং সাইনাসের উপর মাখতে পারেন।
গোলাপ: স্বাস্থ্যোজ্জ্বল ও মসৃণ ত্বক পেতে চাইলে বেছে নিতে পারেন রোজ এসেন্সিয়াল অয়েল। এর সুগন্ধ মানসিক অস্বস্তি ও চাপ কমাতে কার্যকর। ত্বকে মাখতে হবে যেকোনো লোশন কিংবা ক্রিমের সঙ্গে মিশিয়ে। ব্রণ দূর করার জন্য ব্যবহার করতে হবে নারিকেলে তেলের সঙ্গে মিশিয়ে। এক টেবিল-চামচ তেলের সঙ্গে চার থেকে পাঁচ ফোটা রোজ এসেন্সিয়াল অয়েল মেশাতে হবে।
আরও পড়ুন