সন্তানকে পানি থেকে নিরাপদ রাখতে

শুধু সমুদ্র সৈকত বা পুকুর পাড় নয়, বাথরুমে রাখা পানি ভর্তি বালতি থেকেও শিশুকে নিরাপদ দূরত্বে রাখুন।

লাইফস্টাইল ডেস্কবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 24 April 2018, 09:42 AM
Updated : 24 April 2018, 09:42 AM

অসতর্কতার জন্য শিশুর নানান বিপদ হতে পারে। পানি থেকে আক্রান্ত হতে পারে ব্যাকটেরিয়া ঘটিত কোনো রোগে।

তাই সন্তান পানির কাছে যাওয়ার সময় বাবা-মা কে অনেক বেশি সাবধান হতে হবে। আর সন্তানের নিরাপত্তায় প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণ করতে হবে।

স্বাস্থ্যবিষয়ক একটি ওয়েবসাইটে এই বিষয়ের ওপর প্রকাশিত প্রতিবেদন অবলম্বনে কয়েকটি পন্থা এখানে দেওয়া হল।

সম্ভাব্য হুমকি সম্পর্কে জানুন: সুইমিং পুল বা সৈকতে সন্তানের জন্য সতর্ক থাকবেন তা নয়। বাথ টাব, যে কোনো ধরনের গর্ত এমনকি পানি ভর্তি বড় ড্রাম বা বালতি থেকেও সন্তানকে নিরাপদ দূরত্বে রাখুন। বাসার বড় পাত্র বা বালতি ঢেকে রাখুন। খুব বেশি প্রয়োজন না হলে তা পানি পূর্ণ করে রাখবেন না। জমিয়ে রাখা পানিতে মশা মাছি খুব দ্রুত বংশবিস্তার করে। 

সন্তানের পাশে বড় কেউ থাকা: সন্তানকে কখনও একা পানির কাছে যেতে দেওয়া ঠিক নয়। সুইমিং পুল বা সমুদ্র সৈকতে সাঁতার কাটার সময় যে কোনো দুর্ঘটনা এড়াতে 'লাইফগার্ড' ব্যবহার করা উচিত। তাই পানিতে নামার সময় পরিবারের অন্যান্য সদস্য অথবা বড় কেউ সন্তানের হাতের নাগালের মধ্যে থাকুন। পানিতে নামার পর যে কোন জরুরি অবস্থা সামলাতে সন্তানের কাছাকাছি থাকা ও প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণ করাকে সাঁতারের ভাষায় 'তত্ত্বাবধানে থাকা' বলে। পরিবারের সদস্য এবং বন্ধুদের সঙ্গে সন্তানকে পানির মধ্যে দাঁড়া করান এবং জরুরি অবস্থায় কেমন প্রতিক্রয়া করা উচিত সে সম্পর্কে বলে রাখুন। প্রয়োজনীয় ফোন নম্বর লিখে রাখুন। আর আপনি যখন সন্তানের দিকে নজর রাখবেন তখন কেবল তা-ই করুন, স্মার্ট ফোন বা অন্য কোনো কিছুর মধ্যে মনোযোগ দেবেন না।

প্রাথমিক চিকিৎসা সম্পর্কে শিক্ষা দিন: কৃত্রিম উপায়ে শ্বাস দেওয়ার মতো প্রাথমিক চিকিৎসার মতো জীবন রক্ষাকারী কৌশল সম্পর্কে জানা সবার জন্যই প্রয়োজনীয়। যদি কখনও কাউকে পানিতে ডুবে যেতে বা বিষম খেতে দেখেন তাহলে তাঁকে বাঁচাতে চারটি উপায় অনুসরণ করা যায়।

যেমন- গামছা, লাঠি বা 'সেইফটি রিং' তাদের দিকে ছুঁড়ে দিয়ে পাড়ের কাছাকাছি আনতে সাহায্য করা। অথবা নিজে সাঁতরে গিয়ে তাঁকে রক্ষা করা।

প্রয়োজন হলে উদ্ধারকারী নৌকার সাহায্য নেওয়া। এমন বিপদ থেকে কাউকে রক্ষা করার পর তার পেটে হালকা চাপ দিলে শরীর থেকে অতিরিক্ত পানি বের হয়ে যাবে। হৃদরোগী হলে বা কেউ যদি অজ্ঞান হয়ে যায় তাহলে কী করণীয় সে বিষয়েও জ্ঞান থাকা প্রয়োজন। তবে মনে রাখতে হবে, কেউ ডুবে গেলে তাঁকে উদ্ধার করে পাড়ে আনাটাই সবার আগে করণীয়।   

অত্যাবশ্যকীয় নিয়ম সম্পর্কে জানান:
সন্তানকে সৈকতে নিয়ে যাওয়ার আগে তাঁকে প্রয়োজনীয় কিছু নিয়ম সম্পর্কে ধারণা দেওয়া উচিত। যেমন- পানির কাছে দৌড়াদৌড়ি করবে না, অন্যকে পানিতে ধাক্কা দেবে না এবং কখনও দৃষ্টি সীমানার বাইরে যাবে না। আপনি যদি এই নিয়মগুলোর দিকে কড়া মনোযোগী হওয়া যায় তাহলে সন্তানের দুর্ঘটনা ঘটার সম্ভাবনা অনেকটাই কমে যাবে।  

'লাইফ জ্যাকেট' ব্যবহার করা:  ‘লাইফ সেইভিং জ্যাকেট’ কোনো খেলার সামগ্রী নয়। এটা আপনার সন্তানকে পানিতে ভেসে থাকতে সাহায্য করবে। তবে এটা চিমসে যাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। যদি কোনো পুকুর বা পুলে যান তবে কর্তৃপক্ষের কাছ থেকে লাইফ জ্যাকেট চেয়ে নিন। পারলে নিজেই একটি লাইফ জ্যাকেট কিনে রাখতে পারেন। কারণ অধিকাংশ ক্ষেত্রে আমাদের দেশের সৈকতে এই সুব্যবস্থা নেই। সন্তানের জন্য সঠিক মাপের লাইফ জ্যাকেট ব্যবহার করুন এতে সে স্বাচ্ছন্দ্যবোধ করবে। যখন এর প্রয়োজন নেই তখন লাইফ জ্যাকেট খুলে নিন। না

জেনে রাখুন

গবেষোণায় দেখা গেছে, এক থেকে চার বছরের মধ্যে সাঁতার শেখার প্রশিক্ষণ রয়েছে এমন শিশুর পানিতে ডুবে যাওয়ার সম্ভাবনা কম। যেসব শিশু ছোটবেলা থেকেই উন্মুক্ত পানি যেমন পুকুর বা নদীতে সাঁতার শেখে তারা ভবিষ্যতে পানির কাছে বেশি নিরাপদ থাকে।

ছবি: রয়টার্স।

আরও পড়ুন