পরীক্ষার চাপ সামলাতে

জিপিএ ৫ না পেলে কিন্তু বংশের মান থাকবে না- এই ধরনের নির্দেশ পরীক্ষার্থীর মনে চাপ বাড়ানো ছাড়া আর তেমন কোনো কাজ হয় না।

লাইফস্টাইল ডেস্কবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 9 March 2018, 08:12 AM
Updated : 9 March 2018, 08:13 AM

আবার সন্তান সম্মানজনক স্থান নিয়ে পরীক্ষায় পাশ করবে কিনা সেটা নিয়েও অভিভাবক থাকেন চিন্তিত।

এরকম পরিস্থিতে পরীক্ষার চাপ সামলানোর সন্তানের মনে বাড়তি চাপ পড়ে। অন্য দিকে বাবা-মায়েরও চোখের ঘুম উধাও হয়ে যায়। যা মোটেই পরীক্ষার পূর্ব প্রস্তুতির জন্য ভালো নয়।

এই ধরনের পরিস্থিতি সামলাতে বাবা-মায়ের যেমন কর্তব্য রয়েছে। তেমনি পরীক্ষার্থীকেও থাকতে হবে শান্ত। জীবনযাপন-বিষয়ক একটি ওয়েবসাইটে এই বিষয়ের ওপর প্রকাশিত প্রতিবেদন অবলম্বনে এই ধরনের পরিস্থিতি সামলানোর কিছু কৌশল এখানে দেওয়া হল।

বাবা-মায়ের করণীয়

সন্তানের সঙ্গে আলাপ: পরীক্ষার আগে অনেক বাবা-মা তাদের সন্তানকে সারাদিন ঘরে বসে পড়াশোনা করতে বলেন, যাতে সিলেবাস শেষ হয়। পড়াশোনার জন্য নিরিবিলি পরিবেশের প্রয়োজন আছে ঠিকই, তাই বলে সব ধরনের বিনোদন থেকে দূরে রাখা ঠিক নয়। পাশাপাশি পরীক্ষার দুশ্চিন্তায় সন্তান যদি মনমরা হয়ে থাকে তবে কথা বলে তার মন হালকা করার চেষ্টা করা উচিত।

অগোছালো থাকলে থাকুক: পরীক্ষার আগে সন্তান যদি তার ঘর অগোছালো করে রাখে তবে পৃথিবী উল্টে যাবে না। তাই তাকে ঘর গোছানোর জন্য চাপ দেওয়ার দরকার নেই। কারণ এমনিতেই সে পরীক্ষার চাপে আছে।

স্নেহ প্রকাশ করুন: প্রতিটি বাবা-মায়েরই সন্তানের প্রতি স্নেহ-ভালোবাসা আছে। মাঝেমধ্যে তা সন্তানকে বোঝানোও জরুরি। পরীক্ষার আগের দিনগুলোতে অভিভাবকের স্নেহ মমতার বহিপ্রকাশ সন্তানের আত্নবিশ্বাস বাড়াতে গুরুত্বপুর্ণ ভূমিকা রাখবে।

স্বাস্থ্যের প্রতি যত্নশীল: স্বাস্থ্যকর খাবার, শারীরিক পরিশ্রম দুটোই সুস্বাস্থ্যের জন্য জরুরি। সেদিকে নজর দিন। আর সন্তানকে খাও-ঘুমাও-পড় এই চক্রে বেঁধে ফেলা থেকে বিরত থাকুন।

অন্যের সঙ্গে তুলনা নয়: মনে রাখতে হবে, সবার মেধা সমান নয়। তাই পাশের বাসার অমুকের ছেলে-মেয়ে অংকে এ প্লাস পেয়েছে, তুমি পাচ্ছনা কেনো? এই ধরনের প্রশ্ন করে সন্তানের উপর মানসিক চাপ সৃষ্টি করা উচিত নয়। এতে তারা আরও হতাশ হয়ে পড়বে, দুর্ঘটনাও ঘটাতে পারে।

সন্তানের পছন্দকে গুরুত্ব দেওয়া: পড়াশুনাই জীবনের একমাত্র লক্ষ্য হতে হবে এমনটা নয়। আপনার সন্তানের কী পছন্দ, কোন দিকে তার মেধা ও আগ্রহ বেশি সেটা খুঁজে বের করার চেষ্টা করা উচিত। আর খুঁজে পেলে তাকে হেলাফেলা না করে, সেই কাজে তাকে উৎসাহ দেওয়া উচিত। 

শিক্ষার্থীদের জন্য পরামর্শ

নিজের যত্ন নেওয়া: পরীক্ষায় ভালো করতে চাইলে শুধু পড়াশুনা করলেই হবে না, নিজেকেও সুস্থ রাখতে হবে। তাই না খেয়ে, না ঘুমিয়ে বইয়ে মুখ গুঁজে পড়ে থাকা চলবে না। শরীর ভালো না থাকলে পরীক্ষার খাতায় জানা প্রশ্নের উত্তরও ভুল হতে পারে।

বিনোদন: সময় থাকতে পর্যাপ্ত পড়াশোনা করা হয় না সিংহভাগ শিক্ষার্থীরই। তাই পরীক্ষার আগের ১০ দিনে দুই মাসের পড়া গিলে খাওয়ার চেষ্টা করতে হয়। তবে মনে রাখতে হবে, মাঝে কিছুক্ষণ বিনোদনেরও প্রয়োজন আছে। মন চাঙা থাকলে পড়া আয়ত্ত করা সহজ হবে। আবার পড়তে বসার কথা ভুলে গেলে চলবে না কিন্তু।

ভালো ফলাফল বনাম ভালো ভবিষ্যত: মনে রাখতে হবে, উজ্জ্বল ভবিষ্যতের জন্য ভালো ফলাফল করা সবসময় জরুরি নয়। পড়াশোনায় ব্যর্থ হওয়ার পরও জীবনে সফলতা অর্জন করেছেন এমন উদাহরণ আছে অনেক। নিজের সর্বোচ্চ চেষ্টা করতে হবে। আর ভালো যদি নাই হয় তবে মনে রাখতে হবে জীবন সেখানেই শেষ নয়।

পরিবারের সঙ্গে আলাপ: বড় ভাইবোন, বাবা-মা সবাই তাদের জীবনে এই মানসিক চাপ সহ্য করেছে। তাই তাদের সঙ্গে সমস্যাগুলো নিয়ে কথা বলতে হবে। জীবনে সফল হওয়ার জন্য তাদের উপদেশই সবচাইতে গুরুত্বপূর্ণ।

আরও পড়ুন