ছাদে উঠলো ফুডকোর্ট

বর্তমান প্রজন্মের কাছে প্রচলিত ‘ছাদে ওঠা’ মানে ক্ষতি হওয়া বোঝালেও, আক্ষরিক অর্থেই রাজধানীর সীমান্ত স্কয়ারের মাটিতে থাকা ফুডকোর্টটি ছাদে স্থানান্তরিত করা হয়েছে।

মামুনুর রশীদ শিশিরবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 26 Feb 2018, 07:23 AM
Updated : 26 Feb 2018, 07:28 AM

এখন তাই জ্যাম দেখতে দেখতে কিংবা গাড়ির শব্দের সঙ্গে নয়, আকাশের পানে চেয়ে আর বর্ডার গার্ড বাংলাদেশের লেকের দৃশ্য দেখতে দেখতে পেটপূজা করা যাবে।

১৪ ফেব্রুয়ারি সীমান্ত স্কয়ারের আঙ্গিনা থেকে সব খাবারের দোকান পুরোপুরি তুলে নিয়ে যাওয়া হয় ভবনটির ছাদে। উঠেই চোখে পড়বে ফুডকোর্টে ঢোকার মুল ফটক। দেয়াল ও তারের জালে ঘেরা এলাকাটি ইংরেজি ‘ইউ’ অক্ষরের মতো। বসার ব্যবস্থা আছে শতাধিক মানুষের, লাল চেয়ার-টেবিলের বদলে বসানো হয়েছে হালকা বেগুনি রংয়ের প্লাস্টিকের চেয়ার আর অ্যালুমিনিয়ামের টেবিল।

উপরের ছাউনি আছে। তবে গরম বাতাস যাতে আটকে না থাকে সেজন্য দুই ছাউনির মাঝখানে ফাঁকা রাখা হয়েছে। ফলে রোদও লাগবে কম, ‘রুফটপ’য়ের আমেজও পাওয়া যাবে। প্রধান দরজার বাম পাশের একটি পাশ পুরো খালি রাখা হয়েছে। এখানে দাড়ালে পিলখানার ভেতরের লেকের একটি অংশ চোখে পড়বে।

পুরো ফুডকোর্ট সিসিটিভি ক্যামেরার আওতাভুক্ত। রাতের বেলার আলো ছড়াবে ছাউনি আর দোকানের ছাদের মাঝখানে বসানো সার্চলাইট।

কোনো রেস্তোরাঁর ব্যক্তিগত বসার ব্যবস্থা রাখা হয়নি। বরাবরের মতো স্কুল, কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয় পড়ুয়া তরুণরাই এখানকার প্রাণ। পাস্তা, সাব স্যান্ডউইচ, বার্গার, নুডুলস, পিৎজা, সুপ, নাচোস, রাইস বোল, সেট মেন্যু, কোল্ড কফি, ফলের শরবত ইত্যাদিই প্রধান খাবার এই ফুডকোর্টের।

মোট ৩০টি দোকান তৈরি করা হয়েছে। তবে এখন পর্যন্ত চালু হয়েছে ২৩টি দোকান। এগুলো হল- ম্যাচস্টিক, হট অ্যান্ড রোল, মাউথবম্ব, কফিলাইম, খানা’স গুড ফুড, বেস্ট বাইট, হাঙ্গার অ্যাঙ্গার, কস্তুরি ইন, পার্লার আইসক্রিম, লাব্বাইক, প্রিন্স, এনবি স্টারফুড কর্নার, শর্মা ক্লাব, ক্রিস্পি অ্যান্ড কুল, ডক্টর. ডি ইট ওয়ে, সাবলাভারস, হট প্লেট, ফাজিতাস, স্পাই চিকেন, পানা’স পানিনি, ক্যাপ্টেইন কুক ও স্টেকাহলিক।

ফুডকোর্টে যাওয়া জন্য আছে তিনটি লিফট। আর মার্কেটের ভেতর দিয়ে উঠলে কয়েকতলা সিঁড়ি দিয়ে উঠতে হবে।

কথা হল মাউথবম্ব রেস্তোরাঁর অন্যতম কর্ণধার নজরুল ইসলামের সঙ্গে। নিচতলার ফুডকোর্টে তার রেস্তোরাঁ ছিল না, উপরে ওঠার পরই তিনি এই রেস্তোরাঁ চালু করেছেন।

“প্রতিদিন সকাল ১০টা থেকে রেস্তোরাঁ চালু করি, ১১টার মধ্যেই খাবার পরিবেশনের জন্য প্রস্তুত থাকি আমরা। তবে ক্রেতা আসা শুরু হয় দুপুর ১২টার পর থেকে। রাত ৯টা পর্যন্ত ভীড় থাকে। বসার জায়গা নেই এমন অবস্থা এখনও হয়নি।” বললেন তিনি।

ক্রেতা কেমন আসছে এমন প্রশ্নে নজরুলের উত্তর, “নিচের ফুডকোর্ট স্থানান্তরের সাইনবোর্ড থাকলেও প্রথম দিকে অনেকেই নিচে দোকান দেখতে না পেয়ে ফিরে গেছেন। তবে এখন অবস্থা বেশ ভালো। নিচের নিরাপত্তা কর্মীরা ক্রেতাদের জানিয়ে দেন উপরের ফুডকোর্টের কথা। আর উপরের পরিবেশ নিচের তুলনায় অনেক পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন, ছিমছাম। যা ক্রেতারা পছন্দ করছেন। গরম পুরোদমে পড়া শুরু করলে ছাউনিতে ফ্যান লাগানো হবে। আর বর্ষায় ছাউনি মাঝখানের ফাঁকা অংশে তেরপল বিছিয়ে দেওয়া হবে।”

অষ্টম শ্রেণির ছাত্র জাহিদ বন্ধুদের সঙ্গে এসেছিল পাস্তা খেতে। বললো, “দামের তুলনায় খাবারের স্বাদ বেশ ভালো। উপরে গরম বেশি। তবে বিকেল ও সন্ধ্যায় গরম থাকে না। আওয়াজও কম, জায়গাটাও পরিষ্কার।”      

এছাড়াও সীমান্ত স্কয়ারের নিচতলায় দুটি আইসক্রিমের দোকান ও একটি নর’য়ের একটি ফুড কর্নার আছে। আর দোতলায় ও তিনতলায় আছে দুটি খাবারের দোকান।

আরও রেস্তোরাঁ