গৃহস্থালী কাজে কিংবা রূপচর্চায় লেবু এবং লেবুর রস দিয়ে বহু পন্থা চালু রয়েছে। প্রতিষ্ঠিত ও প্রচলিত কৌশলগুলো নিয়ে বিভিন্ন ওয়েবসাইটে প্রকাশিত প্রতিবেদন অবলম্বনে এই আয়োজন।
ঘরোয়া সংরক্ষক: আপেল, নাশপাতিসহ নানা রকমের ফল ও সবজি তাজা রাখতে এগুলোর উপরে লেবুর রস চিপে দিন। ফলের সালাদে এটা ভালো কাজ করে। সালাদের ফল বাদামি হওয়া এড়াতে এই পদ্ধতি অনুসরণ করতে পারেন।
সুগন্ধি: তাৎক্ষণিক সুগন্ধি হিসেবে লেবু ভালো কাজ করে। লেবুর সিট্রিক অ্যাসিড দুর্গন্ধ সৃষ্টিকারি ব্যাকটেরিয়া ধ্বংস করে। অনেকে সাধারণ ডিওডোরেন্টের বদলে এই পদ্ধতি ব্যবহার করে থাকেন।
ময়লার দুর্গন্ধ দূর করতে: রান্নাঘরের ময়লা আবর্জনা ঠিক মতো পরিষ্কার করা না হলে অসহনীয় দুর্গন্ধের সৃষ্টি হয়। ভিনিগার ও বেইকিং সোডা ময়লা অপসারণ করতে ও রান্নাঘরে ডিম-পঁচা বাজে দুর্গন্ধ দূর করার সঙ্গে সঙ্গে আপনাকেও রান্নাঘর থেকে বের করে দেয়। সেক্ষেত্রে লেবু খুব ভালো সমাধান। একটি লেবু কেটে তা ময়লার থলেতে রেখে দিন। এটা দুর্গন্ধ সৃষ্টিকারি ব্যাকটেরিয়া ধ্বংস করে।
পোকামাকড় দূর করতে: লেবুর তীক্ষ্ণ গন্ধ পোকামাকড় দূর করতে সাহায্য করে। লেবুর রস জানালা, দরজা ও বেইজবোর্ডে স্প্রে করে নিন। এছাড়াও চাইলে লেবুর রসের সঙ্গে লবঙ্গ মিশিয়ে পোকামাকড়ের আক্রমণ হয় এমন জায়গায় রেখে দিন, পোকা দূর হয়ে যাবে।
এই দুইয়ের যে কোনো একটি একটি পদ্ধতিতে পোকার আক্রমণ কমানো যায়।
দাগ দূর করতে: দাগ দূর করতে লেবুর রস ও লবণের মিশ্রণ চমৎকার কাজ করে। দাগের উপরে এই মিশ্রণটি দিয়ে শুষে নেওয়া পর্যন্ত অপেক্ষা করুন এবং তা ওয়াশিং মেশিনে ধুয়ে নিন, কাপড় নতুনের মতো হয়ে যাবে।
বয়সের দাগ দূর করতে: লেবুর রস বয়সের দাগ দূর করতে সহায়ক। আক্রান্ত স্থানে প্রতিদিন তুলার সাহায্যে লেবুর রস লাগান। এটা বলিরেখা দূর করার পাশাপাশি ত্বক উজ্জ্বল এবং লোমকূপ ছোট দেখাতে সাহায্য করে।
টয়লেট পরিষ্কারক: কমোডের দাগ দূর করতে বোরাক্সের সঙ্গে লেবুর রস মিশিয়ে ব্রাশের সাহায্যে ঘষে নিন। এতে দাগ দূর হওয়ার পাশাপাশি চকচকেভাব আসবে।
গলা ব্যথা দূর করতে: গলা ব্যথা দূর করতে এক কাপ গরম পানিতে এক টেবিল-চামচ লেবুর রস নিয়ে গার্গল করুন। সিট্রিক অ্যাসিডের সঙ্গে গরম পানি মিশে গলার কোষের ফোলাভাব ও ব্যাকটেরিয়া দূর করতে সাহায্য করবে। আরাম অনুভব করতে আপনি এরসঙ্গে মধু মিশিয়ে নিতে পারেন।
ধাতব পলিশ করতে: ধাতব পাত্র, স্টেইনলেইস স্টিল চকচকে ও জীবাণু মুক্ত করতে একটা লেবুর অর্ধেক টুকরা করে তাতে খানিকটা লবণ নিয়ে ঘষুণ। এটা খুব সহজ ও কার্যকর ফলাফল পাওয়া যায়।
প্যাঁচপ্যাঁচে ভাত: ভাত বেশি সময় ধরে রান্না করা হলে পাত্রের গায়ে আঠালোভাবে লেগে যায়। এই সমস্যা এড়াতে রান্না করার সময় পাত্রের গায়ে কয়েক ফোঁটা লেবুর রস দিয়ে নিন।
চুলের হাইলাইটার: সস্তা ও প্রাকৃতিক হাইলাইটার খুঁজছেন, তাহলে লেবুর রস ব্যবহার করতে পারেন। চুলের যে অংশ হাইলাইট করতে চান তার উপরে লেবুর রস স্প্রে করে নিন। সূর্যের আলোয় কয়েক ঘন্টা পর্যন্ত তা হাইলাইটারের মতো কাজ করবে। মনে রাখতে হবে এটা চুলের ধরন ও রংয়ের উপর অনেকটাই নির্ভর করে, তাই এ থেকে পেশাদারী রং আশা করা ঠিক নয়।
কাপড়ের উজ্জ্বলতা: ওয়াশিং মেশিনে কাপড় ধুলে তা মলিন দেখায়। তাই কাপড় ধুতে সিকি কাপ লেবুর রস ব্যবহার করুন। এটা প্রাকৃতিক ব্লিচিংয়ের বিকল্প হিসেবে কাজ করে। কাপড়ের উজ্জ্বলতার পাশাপাশি এটা কাপড়ের কঠিন দাগ দূর করতেও সাহায্য করে।
আসবাবের দাগ দূর করতে: আসবাবে দাগ পড়লে দেখে খুব বাজে লাগে, এই সমস্যা দূর করা যায় লেবুর রসের সাহায্যে। সালাদের তেলের সঙ্গে লেবুর রস মিশিয়ে দাগের অংশে ঘষে নিন। আসবাব নতুনের মতো হয়ে যাবে।
শক্ত রংতুলি ঠিক করতে: শক্ত হয়ে যাওয়া রং করার ব্রাশ ঠিক করা বেশ কষ্টকর। তবে লেবুর রসের সাহায্যে এই কাজ করা যায়। ফুটন্ত লেবুর রসে আঁচ কমিয়ে ব্রাশটি ১৫ থেকে ২০ মিনিট ডুবিয়ে রাখুন। ভালো মতো ভিজে গেলে সাবান পানি দিয়ে ধুয়ে নিন, নতুনের মতো হয়ে যাবে।
এয়ার ফ্রেশনার: বাজারে কিনতে পাওয়া যায় এমন ‘অ্যারোসোল এয়ার ফ্রেশনার’য়ে যদি অস্বস্তি হয় তাহলে লেবুর সাহাজ্য নিন। লেবু টুকরা করে কেটে পানিতে ডুবিয়ে চুলায় বসিয়ে দিন। লেবুর তাজা সুগন্ধ চারপাশে ছড়িয়ে যাবে যা এয়ার ফেশরারের মতোই কাজ করবে।
এই সমস্যা থেকে পরিত্রাণ দিতে পারে লেবু। কাটিং বোর্ডের উপরে লেবু ঘষে শুকানো পর্যন্ত অপেক্ষা করুন। কাঠ লেবুর রস শুষে নিয়ে সারা রান্নাঘরে সুগন্ধ ও তাজা ভাব ছড়িয়ে দেবে।
আরও পড়ুন