খাদ্যের বিষক্রিয়া থেকে বাঁচতে

রাস্তার পাশের খাবার থেকে ‘ফুড পয়জনিং’ বা খাদ্যে বিষক্রিয়া কিংবা পেটের গোলমাল দেখা দেওয়া অস্বাভাবিক কিছু নয়। এক্ষেত্রে প্রাথমিক চিকিৎসার জন্য রান্নাঘরে ঢুঁ মারতে পারেন।

লাইফস্টাইল ডেস্কবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 22 Feb 2018, 07:58 AM
Updated : 22 Feb 2018, 07:58 AM

প্রতিষ্ঠিত ও প্রচলিত কয়েকটি পন্থা নিয়ে স্বাস্থ্যবিষয়ক একটি ওয়েবসাইটে এই বিষয়ের উপর প্রকাশিত প্রতিবেদন অবলম্বনে কয়েকটি উপায় এখানে দেওয়া হল।

রসুন: ভাইরাস, ব্যাকটেরিয়া ও ছত্রাকরোধী উপাদান রয়েছে এতে। যা ডায়রিয়া ও পেটব্যথা থেকে আরাম দেয়। এক কোঁয়া সতেজ রসুন লজেন্সের মতো চুষে খেতে পারেন। পরে পান করতে হবে একগ্লাস কুসুম গরম পানি। এছাড়াও রসুন-সিদ্ধ-পানি সারাদিন ধরে ছোট ছোট চুমুকে পান করলেও উপকার পাওয়া যায়।

লেবু পানি: পেটে ব্যাকটেরিয়াজনিত সমস্যা সমাধানে অত্যন্ত কার্যকর লেবুর অম্লীয় উপাদান। এক টেবিল-চামচ লেবুর রসে এক চিমটি লবণ মিশিয়ে প্রতিদিন দুতিনবার পান করুন। এতে হজম প্রনালী পরিষ্কার থাকবে।

এক গ্লাস কুসুম গরম পানিতে পুরো একটি লেবুর রস মিশিয়ে তা সারাদিন ধরে পান করতে পারেন।

অ্যাপল সাইডার ভিনিগার: এতে থাকা অম্লীয় উপাদান হজম প্রনালীর জ্বালাপোড়া কমায় দ্রুত। একগ্লাস কুসুম গরম পানিতে দুই টেবিল-চামচ অ্যাপল সাইডার ভিনিগার মিশিয়ে খাওয়ার আগে পান করতে হবে।

বেসিল: পেটের গড়বড় থেকে মুক্তি দেওয়ার ক্ষেতে যথেষ্ট সুনাম রয়েছে এই ভেষজ পাতার। এর অ্যান্টি-মাইক্রোবায়াল উপাদান পেটের সকল ব্যাকটেরিয়া ও মাইক্রো-অর্গানিজম দূর করতে সাহায্য করে।

দুতিন কাপ পানি ও কয়েকটি বেসিল পাতা একত্রে ফুটিয়ে নিতে হবে। ঠাণ্ডা করার পর তাতে যোগ করতে হবে একটু মধু। তারপর সারদিন ধরে পান করতে হবে। এছাড়াও একটু স্বাদ বাড়াতে চাইলে এক বাটি দইয়ের মধ্যে কয়েকটি বেসিল পাতা যোগ করতে পারেন।

জিরা: খাদ্যের বিষক্রিয়াজনিত অস্বস্তি ও জ্বালাপোড়া কমাতে জিরা আদর্শ। সারাদিন ধরে জিরা চিবিয়ে খেতে পারেন। কিংবা এক কাপ পানিতে এক টেবিল-চামচ জিরা ফুটিয়ে পান করতে পারেন। এরসঙ্গে আরও যোগ করতে পারেন এক টেবিল-চামচ ধনেপাতার রস ও সামান্য লবণ। পানীয়টি পান করতে হবে দিনে দুবার। 

মধু: ব্যাকটেরিয়া ও ছত্রাকরোধী মধু হজমের সমস্যা ও খাদ্যে বিষক্রিয়া দূর করতে অত্যন্ত উপকারী। পেটে অতিরিক্ত অ্যাসিড জমা থেকে বাঁচতে দিনে তিনবার একচামচ করে উদ্ভিজ্জ মধু খেতে পারেন। এতে পেটের গোলমাল দূর হবে।

কলা: ডায়রিয়া ও বমি হলে শরীর থেকে প্রচুর পটাশিয়াম বেরিয়ে যায়। তবে একটি পাকাকলা পটাশিয়ামের স্বাভাবিক মাত্রা ফিরিয়ে আনতে যথেষ্ট। দুটি কলা আর এক কাপ দুধ এক সঙ্গে ফুটিয়ে বানাতে পারেন শেইক। সেই সঙ্গে এক চিমটি দারুচিনির গুড়া ছিটিয়ে দিলেও ক্ষতি নেই। পান করতে হবে দিনে তিনবার।

মেথি: এক টেবিল-চামচ মেথি নরম হওয়া পর্যন্ত পানিতে ভিজিয়ে রাখতে হবে। এই মেথি খাওয়ার পর খেতে হবে এক টেবিল-চামচ দই। কিছুক্ষণ পরপর এভাবে খেতে হবে। দইয়ের মাইক্রোবায়াল ও ব্যাকটেরিয়ারোধী উপাদান খাদ্যে বিষক্রিয়ার জন্য দায়ী ব্যাকটেরিয়া দূর করে। আর পেটের সমস্যা তাড়াতে মেথির গুণও অনন্য।

কমলার রস: খনিজ, ভিটামিন ও পুষ্টিগুণে ভরপুর ফল কমলা। যা শরীরের রক্তচাপ স্বাভাবিক রাখতে উপকারী। ব্লেন্ডারে ছয় থেকে সাতটি মাঝারি আকারের কমলা ও দুই টেবিল-চামচ কর্নস্টার্চ সিরাপ নিয়ে ব্লেন্ড করে শরবত বানিয়ে নিয়ে দিনে কয়েকবার পান করতে হবে।

এছাড়া পেট ভালো রাখতে একে বিশ্রাম দেওয়া উচিত। তাই কয়েক ঘণ্টা ভারী ও দুগ্ধজাত খাবার, কফি, মদ্যপান, ধূমপান ইত্যাদি থেকে বিরত থাকতে হবে।

প্রচুর পরিমাণে পানি পান করতে হবে ও মুরগির বুকের মাংস খেতে হবে। ধীরে ধীরে বিস্কুট, কলা ইত্যাদি খাওয়া শুরু করতে হবে। তবে বমিভাব হলে খাওয়া বন্ধ রাখতে হবে। পাশাপাশি নিতে হবে বিশ্রাম।