মিথ্যাবাদী সঙ্গীর সঙ্গে বোঝাপড়া করতে

বিশ্বাস ছাড়া সম্পর্ক হয় না, তবে সঙ্গী যদি সবসময় মিথ্যার আশ্রয় নেয় তাহলে সরাসরি বোঝাপড়া করে নেওয়াই বুদ্ধিমানের কাজ হবে।

লাইফস্টাইল ডেস্কবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 29 Jan 2018, 09:45 AM
Updated : 29 Jan 2018, 09:46 AM

প্রেম হয়ে যেতেই পারে। তবে ‘বিশ্বাস’ গড়ে উঠতে সময় লাগে। যদি মানুষকে সহজেই বিশ্বাস করা যেত তাহলে কতই না ভালো হত। অথবা, বিশ্বাস যদি কোনো দিন না ভাঙতো!-- এই ‘যদি’ আর ‘তবে’-র মধ্যে ‘বিশ্বাস’টা স্বপ্নের মতোই ভঙ্গুর অবস্থায় থাকে। যাকে অনেক ভালোবাসলেন তার কাছে থেকে মিথ্যা আশা করেন না। আর মিথ্যাটা ধরতে পারলে কষ্ট পাওয়া স্বাভাবিক।

সমস্যা হচ্ছে- যখন বুঝতে পারছেন সঙ্গী মিথ্যা বলছে তখন আপনি কী করবেন? মেনে নিতে থাকবেন?

সেটা আসলে সম্ভব না। তাহলে কীভাবে সামলাবেন? সম্পর্কবিষয়ক একটি ওয়েবসাইটে এই বিষয়ের উপর প্রকাশিত প্রতিবেদন অবলম্বনে ‘মিথ্যাবাদী’ সঙ্গীর সঙ্গে বোঝাপড়ার কয়েকটি পন্থা এখানে দেওয়া হল।

অগ্রাহ্য করবেন না: অনেকসময় আমরা নিজের মনকেই বোঝাই যে সঙ্গী আমাদের কাছে টুকটাক মিথ্যা বলতেই পারে। তাই তুচ্ছ মিথ্যাগুলোকে হেলায় উড়িয়ে দেওয়ার সহজ পথটা বেছে নেন অনেকেই, তবে এটা ভুল। সঙ্গী আপনাকে মিথ্যা বলছে বিষয়টা মেনে নেওয়াই হল প্রথম কঠিন ধাপ। আর পরবর্তী কঠিন ধাপ হল তার সঙ্গে বোঝাপড়া।

বোঝাপড়া: সঙ্গীর মিথ্যাচার নিয়ে তার সঙ্গে বোঝাপড়ার মানসিক প্রস্তুতি হয়ত নিলেন, কিন্তু শুরুটা করবেন কীভাবে! অভিযোগের সুরে আলোচনা শুরু করা উচিত নয়। কারণ, তখন আপনার সঙ্গী শুধু নিজের সাফাই গাইবে, সমাধান বের হবে না। সঙ্গী কেনো আপনার সঙ্গে মিথ্যা বলেছে সেদিকে মনযোগ না দিয়ে, তার মিথ্যেটা আপনার এবং আপনাদের সম্পর্কের উপর কী ক্ষতিকর প্রভাব ফেলেছে বা এখনও ফেলছে সে বিষয়গুলো সঙ্গীকে জানান। এতে আপনার সঙ্গী একটি ইতিবাচক এবং সমাধানমূলক আলোচনায় জড়াতে আগ্রহী হবে।

সোজাসাপ্টা কথা: সরাসরি প্রশ্ন করাটা কিছুটা জটিল, তবে ভালো কিছু পাওয়ার পথ কখনও সুগম নয়। তাই প্রাসঙ্গিক কথা বলতে হবে। যে প্রশ্নগুলো আপনার মনকে খুঁচিয়ে চলেছে প্রতিনিয়ত তা সরাসরি সঙ্গীর সামনে উপস্থাপন করতে হবে। সেই উত্তরের জন্যও মানসিক প্রস্তুতি থাকা চাই। কারণ যে উত্তরটা আপনি সম্ভাব্য মনে করছেন, আসল উত্তরটা তা থেকে ভিন্নও হতে পারে।  

হালকা ভাবে নেবেন না: কিছু মিথ্যাকথা নির্ভেজাল, নিরিহ। তবে সেই মিথ্যাগুলো আপনাকে চিনতে হবে, অন্যের কথার উপর ভিত্তি করে যাচাই করলে সিদ্ধান্ত ভুল হতে পারে। তাই আপনার সঙ্গীর বলা মিথ্যাটা আপনার জন্য কতটা ক্ষতিকর তার পরিমাপ আপনাকেই করতে হবে এবং সেই অনুযায়ী পদক্ষেপ নিতে হবে।

অপরপক্ষের যুক্তি শোনা: নিজের মনকষ্ট আর প্রশ্নগুলো সঙ্গীর উপর একতরফা-ভাবে চাপিয়ে দেওয়াও উচিত হবে না। মিথ্যাচারী সঙ্গীকে তার পক্ষে যুক্তি দেখানোর সুযোগ দিতে হবে, তার মিথ্যাচারের কারণ ব্যাখ্যা করার অবকাশ দিতে হবে। আর আপনাকেও তা ঠাণ্ডা মাথায় মানতে হবে। আপনার লক্ষ্য হওয়া উচিত মিথ্যাচারের কারণ খুঁজে বের করা এবং ভবিষ্যতে যাতে এর পুনরাবৃত্তি না হয় তা নিশ্চিত করা।

নিজের অনুভুতির উপর ভরসা রাখা: সঙ্গীকে নিযে ঘোলাটে পরিস্থিতিতে আশপাশের মানুষ উপদেশের ফুলঝুরি নিয়ে আসবে। তবে সবকিছুর উর্ধ্বে নিজের অনুভুতির উপর ভরসা রাখা উচিত। আপনার সঙ্গী তার মিথ্যার পক্ষে বিশ্বাসযোগ্য যুক্তি দেখানোর পরও যদি আপনার মনে সন্দেহ থেকেই যায়, তবে বিষয়টি নিয়ে আরও সচেতন থাকতে হবে। আবার, অহেতুক সন্দেহও কিন্তু সম্পর্ক নষ্ট করে, সেদিকেও সচেতন হতে হবে।  

ভুলে যাব? ক্ষমা করে দেব?- বোঝাপড়া শেষ করে সময় নিয়ে পুরো ঘটনাটি নিয়ে ভাবতে হবে। আপনি পারবেন সঙ্গীকে ক্ষমা করে দিতে? ঘটনাটি ভুলে যেতে? যদি না পারেন তবে কী করবেন? সাত-পাঁচ ভেবেই পরবর্তী পদক্ষেপ নিতে হবে।

প্রচ্ছদের প্রতীকী ছবি সৌজন্যে: গ্রামীন ইউনিক্লো

আরও পড়ুন