আয় থেকে জীবনের শিক্ষা

ছোটবেলায় বাবা-মা কেনো চাইলেই সবকিছু কিনে দিত না তা একমাত্র কষ্ট করে অর্থ উপার্জন করা শুরু করলেই উপলব্ধি করা যায়।

লাইফস্টাইল ডেস্কবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 24 Jan 2018, 12:05 PM
Updated : 24 Jan 2018, 12:05 PM

স্কুল কলেজে পড়ার সময় হাতখরচের টাকা নিয়ে কিংবা দামি মোবাইল কিনে দেওয়া নিয়ে বাবা-মায়ের সঙ্গে মনমালিন্য হয়নি এমন কিশোর-কিশোরী খুঁজে পেতে একটু কষ্ট হবে বৈকি। বাবা-মা কেনো টাকা দিল না? এ নিয়ে আমাদের ভারী রাগ হত। এই ‘কেনো’র উত্তরটা বোঝা যায় নিজে উপার্যন করা শুরু করলে, উপলব্ধি করা যায় অর্থ এবং জীবনের কিছু গুরুত্বপূর্ণ বিষয়।

যেমন, জীবনের এক পর্যায়ের এসে বাবা-মায়ের কাছ থেকে টাকা চাইতে আমাদের অস্বস্তি অনুভব হয়। কষ্টে উপার্যিত অর্থ যে কোনো কাজে খরচ করার আগে দুবার ভাবি। আমরা ঘর থেকে টাকা নেই না, বরং টাকা ঘরে আনা শুরু করি। নিজের আর্থিক দিকটার দায়িত্ব নিজের কাঁধে তুলে নেওয়ার রয়েছে বিভিন্ন শিক্ষামূলক দিক।

সেগুলোই তুলে ধরার চেষ্টা করেছে লাইফস্টাইল-বিষয়ক একটি ওয়েবসাইটের প্রকাশিত প্রতিবেদনে। 

অর্থ উপার্যন সহজ নয়: অর্থ উপার্যন করা কতটা পরিশ্রমের, তা না করলে উপলব্ধি করা যায় না। তবে জীবনে সফল হতে হলে তা উপলদ্ধি করা অত্যন্ত জরুরি। চাকরি হোক কিংবা ব্যবসা, মাসের শেষে পকেটে দু পয়সা আনার জন্য কর্মক্ষেত্রে নিজের যোগ্যতা প্রমান করতে হবে প্রতিদিন। ফলে জীবনের কঠিন সত্যটাও অনুভব হবে প্রতিদিন।

সঞ্চয়ের প্রয়োজনীয়তা: নিজে আয় করা শুরু করলে তার কিছু অংশ ভবিষ্যতের জন্য তুলে রাখার প্রয়োজনীয়তা বুঝতে পারবেন। তবে তা বাস্তবায়ন করতে দৃঢ় প্রতীজ্ঞাবদ্ধ হতে হবে। বিপদ বলেকয়ে আসে না, তাই সকল পরিস্থিতির জন্য আর্থিকভাবে যথাসম্ভব তৈরি থাকা অত্যন্ত জরুরি। পাশাপাশি সঞ্চয় আপনার নিজের প্রতি আস্থা বাড়াবে। আর এটি তখনই সম্ভব যখন নিজের সকল খরচের লাগাম নিজের হাতে নিতে পারবেন।

বাবা-মা কীভাবে সংসার চালাত?: আমাদের দেশের প্রেক্ষাপটে একজন সন্তান উপার্যনক্ষম হতে বয়স নুন্যতম ২৫ বছরে পৌঁছায়। এতগুলো বছর সন্তানের সকল খরচ বইতে হয় বাবা-মাকেই, সেই সঙ্গে সংসারও চালাতে হয়। এসময় চাকরি ছেড়ে দিয়ে ঘরে বসে আরাম করার সুযোগ তাদের ছিলনা, কারণ আপনি নিজেই ছিলেন তাদের সবচাইতে বড় দায়িত্ব। এই দায়িত্বই এখন আপনাকে নিজের কাঁধে নিতে হবে। ফলে কীভাবে আপনার মা-বাবা বিগত বছরগুলোতে সবকিছু সামাল দিয়েছেন তা জানতে পারবেন।

কর পরিকল্পনা: পরিবারের দায়িত্ব নেওয়ার পর দেশের একজন দায়িত্ববান নাগরিক হওয়ার দায়িত্বও নিতে হবে আপনাকে, সরকারকে দিতে হবে আয়কর। কীভাবে আয়কর দিতে হবে, কীভাবে আইনের আওতায় থেকে কর বাঁচাতে হবে সবকিছুই শেখার, জানার প্রয়োজনীয়তা বুঝতে পারবেন।

প্রয়োজনীয় খরচটা চেনা: টাকা আছে বলেই দুহাতে খরচ করলে মাসের শেষে প্রয়োজনীয় খরচের পয়সা যোগাতে হিমশিম খেতে হবে। প্রথম দিকে এই হিমশিম খেয়েই খরচকে তার প্রয়োজনীয়তার মাপকাঠিতে মাপতে শিখবেন। আর তখনই শখের ঘড়ি কিংবা প্রসাধনী কেনার অদম্য ইচ্ছাকে টপকে আগামি মাসের বাড়ি ভাড়ার টাকা কিংবা পরিবারের জন্য একটা গাড়ি কেনার পয়সা জমাতে পারবেন।

অর্থ উপার্যনের পেছনে যত সংগ্রামই থাকুক না কেনো, তৃপ্তিও আছে। আর তা হল আত্ন-নির্ভরশীলতার। যে শখ পূরণের অর্থ যোগাতে বাবা-মায়ের কাছে দিনের পর দিন বায়না ধরতে হত, আজ তা নিজেই যোগাতে পারবেন। হয়ত একটু কষ্ট হবে, সময়টাও লাগবে বেশি, তবে অবশেষে যখন শখ পূরণ হবে, সেদিন তৃপ্তিটাও হবে বহুগুন বেশি।

আরও পড়ুন