তবে কয়েকটি গবেষণার ফলাফল বলছে উল্টো কথা, চা পান নাকি ব্যথা আরও বাড়ায়।
স্বাস্থ্যবিষয়ক একটি ওয়েবসাইটে এই বিষয়ের উপর প্রকাশিত প্রতিবেদন অবলম্বনে মাসিকের সময় চা গ্রহণ না করার কারণগুলো জানানো হল।
সমস্যাটা হলো ‘ক্যাফেইন’: মাসিক চলাকালীন ব্যথা তো আছেই, তা শুরু হওয়ার আগে পূর্বাভাস হিসেবেও দেখা দেয় নানান সমস্যা। সামনে যা দেখি তা খেতে ইচ্ছা করা, সামান্য ব্যাপারে কান্নাকাটি, অতিরিক্ত আবেগপ্রবণ হয়ে ওঠা ইত্যাদি এদের মধ্যে অন্যতম। আর এই সমস্যাগুলোকে কয়েকগুণ বাড়িয়ে দিতে পারে ‘ক্যাফেইন’।
চায়ে থাকে প্রায় ২৬.১ মিলিগ্রাম ‘ক্যাফেইন’, যা রক্তচাপ ও হৃদস্পন্দন বাড়িয়ে দেয়। ফলে দুশ্চিন্তা ও অস্বস্তি দুটোই বাড়ে।
উচ্চমাত্রায় ‘ক্যাফেইন’ যুক্ত চা
ব্ল্যাক টি: ‘হং চা’ বা ‘ব্ল্যাক টি’ নামে পরিচিত চায়ে থাকে সবচাইতে বেশি পরিমাণ ‘ক্যাফেইন’। এক কাপ চায়েই থাকতে পারে ৪০ থেকে ৬০ মি.লি. গ্রাম। মসলা চা, আসাম ব্ল্যাক টি নামেই পরিচিত এই চা।
উলং টি: এর আরেক নাম ‘আলি শান টি’। সোনালি-বাদামি বর্ণের এই চায়ের প্রতিকাপে থাকে ৩০ থেকে ৪০ মি.লি.গ্রাম ‘ক্যাফেইন’।
গ্রিন টি: ওজন নিয়ন্ত্রণকারীদের প্রিয় চা এই গ্রিন টি, যার প্রতি কাপে থাকতে পারে ৩০ থেকে ৩৫ মি.লি.গ্রাম ‘ক্যাফেইন’। জাপানে এর নাম ‘মাতচা’ আর চীনে এর পরিচয় ‘লংজিং’। ওজন কমাতে সহায়তার পাশাপাশি হৃদরোগ ও ক্যান্সারের হাত বাঁচাতেও এই চায়ের রয়েছে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা।
‘ক্যাফেইন’ ছাড়াও গ্রিন টি’তে আছে ‘ট্যানিস’ নামক ‘পলিফেনোলিক’ উপাদান। এই উপাদান শরীরের লৌহের সঙ্গে মিশে যায় এবং খনিজটিকে শরীরে শোষিত হতে বাধা দেয়। ফলে শরীরে লৌহের মাত্রার উপর ক্ষতিকর প্রভাব ফেলে এই ‘ট্যানিস’। তবে শরীরে লৌহের উপদান কমায় না উপাদানটি।
প্রতিদিন দুতিন কাপ গ্রিন টি খেলে শরীরে লৌহের মাত্রার উপর উল্লেখযোগ্য প্রভাব পড়বে না। তবে নিয়মিত লৌহ ও ভিটামিন সি সমৃদ্ধ খাবার খাওয়ার অভ্যাস থাকতে হবে। ভিটামিন সি শরীরে লৌহের শোষণক্ষমতা বাড়ায়।
বিষয় হচ্ছে: প্রায় সব ধরনের চায়েই ‘ক্যাফেইন’ ও ‘ট্যানিক’ অ্যাসিড থাকে।
‘ট্যানিক অ্যাসিড খাবারে সঙ্গে মিশে শরীরের লৌহ শোষণ ক্ষমতা কমায়। তাই ঋতুস্রাব চলাকালে অতিরিক্ত চা পান করলে লৌহ শোষণের সমস্যা দেখা দিতে পারে। আর লৌহের অভাব থেকে হতে পারে মাথাব্যথা, খিটখিটে মেজাজ, অনিদ্রা, অস্বস্তি, স্নায়বিক দুর্বলতা ইত্যাদি।
পরামর্শ: তাই মাসের বিশেষ দিনগুলোতে চা পানের মাত্রা কমিয়ে কুসুম গরম পানি খাওয়াই ভালো।
ছবি: রয়টার্স।
আরও পড়ুন