গবেষকদের গড় হিসাবে রাতে কর্মরত নারীদের ক্যান্সার হওয়ার ঝুঁকি স্বাভাবিকের চাইতে ১৯ শতাংশ বেশি।
আর অন্য সব পেশার মধ্যে নার্স হিসেবে রাতে কর্মরত নারীদের স্তন ক্যান্সার হওয়ার ঝুঁকি সবচাইতে বেশি।
চীনের চেংদু’তে অবস্থিত ‘ওয়েস্ট চায়না মেডিকল সেন্টার অফ সিচুয়ান ইউনিভার্সিটি’র করা এই গবেষণার সহকারী লেখক য়ুলেই মা বলেন, “নারীদের সাধারণ ক্যান্সারে আক্রান্ত হওয়ার ক্ষেত্রে অন্যতম ঝুঁকিপূর্ণ দিক হল রাতের শিফটে কাজ করা, এমনটাই ইঙ্গিত দেয় আমাদের গবেষণা।”
উত্তর আমেরিকা, ইউরোপ, অস্ট্রেলিয়া এবং এশিয়ার ৩ কোটি ৯০ লাখ ১৫২ জন অংশগ্রহণকারী এবং ১ লাখ ১৪ হাজার ৬২৮টি ক্যান্সার রোগীর তথ্য সংবলিত ৬১টি প্রতিবেদন পর্যবেক্ষণ করে এই গবেষণা করা হয়। ‘ক্যান্সার এপিডেমিয়োলজি, বায়োমার্কারস অ্যান্ড প্রিভেনশন’ শীর্ষক জার্নালে
এই ৬১টি প্রতিবেদনের মধ্যে ছিল ২৬টি ‘কোহর্ট’ জরিপ, ২৪টি ‘কেইস-কন্ট্রোল’ গবেষণা এবং ১১টি ‘নেস্টেড কেইস-কন্ট্রোল’ গবেষণা। দীর্ঘদিন রাতে কাজ করা আর ১১ ধরনের ক্যান্সোরের মধ্যে সম্পর্ক খুঁজতেই এসব তথ্য পর্যালোচনা করেন গবেষকরা।
নির্দিষ্ট ধরনের ক্যান্সারের ঝুঁকি নিয়ে গবেষণা করতে গিয়ে গবেষকরা জানতে পারেন, দীর্ঘদিন ধরে রাতের শিফটে কাজ করেন না এমন নারীদের তুলনায় অংশগ্রহণকারীদের ত্বকে ক্যান্সারের ঝুঁকি ৪১ শতাংশ, স্তন ক্যান্সারের ঝুঁকি ৩২ শতাংশ এবং অন্ত্রে ক্যান্সারের ঝুঁকি ১৮ শতাংশ বেশি।
মহিলা নার্সদের নিয়ে আরেকটি পৃথক গবেষণা করা হয়। যার মূল উদ্দেশ্য ছিল ছয় ধরনের ক্যান্সার সঙ্গে দীর্ঘদিন রাতের শিফটে কাজ করার মধ্যকার সম্পর্ক খুঁজে বের করা।
রাতের শিফটে কাজ করেন না এমন নারীদের তুলনায় রাতের শিফটে কর্তব্যরত শুধু মহিলা নার্সদেরই স্তন ক্যান্সারে ঝুঁকি ৫৮ শতাংশ, অন্ত্রে ক্যান্সারে ঝুঁকি ৩৫ শতাংশ এবং ফুসফুসে ক্যান্সারের ঝুঁকি ২৮ শতাংশ বেশি।
“নার্সরা যেহেতু চিকিৎসা সেবাদানের সঙ্গে জড়িত, তাই হয়ত তারা ক্যান্সার সনাক্তকরার পরীক্ষা করিয়েছেন বেশি।” এ বিষয়ে এমন মন্তব্য করেন গবেষকরা।
রাতের শিফটে কর্তব্যরত নারীদের সুস্বাস্থ্য রক্ষায় কার্যকরী পদক্ষেপ নিতে অনুপ্রেরণা দিতে পারে এই গবেষণা।
য়ুলেই মা বলেন, “যারা দীর্ঘদিন ধরে রাতের শিফটে কাজ করছেন তাদের নিয়মিত ক্যান্সার সনাক্তের পরীক্ষা করানো উচিত।”
ছবি: রয়টার্স।
আরও পড়ুন