এদের মধ্যে একজনের নাম হৃদয়। প্রায় প্রতিদিনই এই বাজারে বসেন এই রস বিক্রেতা। সঙ্গে আরও দু-একজন বিক্রেতা থাকেন কোনো কোনো দিন। প্রতি লিটার রস বিক্রি করেন ১০০ টাকায়।
ভোররাত থেকে রস নামানো শুরু করেন তারা। বিক্রি শুরু হয় ভোর ছয়টায় দিকে। টাটকা রস পেতে চাইলে সকাল আটটার মধ্যেই পৌঁছাতে হবে। রস বাড়ি নিয়ে আসতে চাইলে আগের দিন জানাতে হবে বিক্রেতাকে, সঙ্গে বোতল নিয়ে যাওয়াই ভালো। ফোন ০১৯৯৬৫৫৪২০৭
নীলা বাজার থেকে উত্তর দিকে পুলিশ হাউজিং। এখানেই বাস করেন আরেকজন খেজুরের রস বিক্রেতা মজিবুর রহমান। নিজের বাড়িতেই রস বিক্রি করেন। দাম প্রতি লিটার ১০০ টাকা। ফোন ০১৯২৪৫১১৬৩৩।
নীলা বাজার থেকে আরও সামনে এগিয়ে কাঞ্চন ব্রিজ পার হয়ে মীরের বাজার যাওয়ার পথে জিন্দা পার্কের আগে ২১ নম্বর সেক্টরে মিলবে কিছু রস বিক্রেতা। তেমনই একজন নিজাম উদ্দিন, বসেন ফুল মিয়ার চায়ের দোকানের পাশে।
খেজুরের রস পান করার লোভটা যদি খুবই বেশি হয় তবে ভোর বেলা গাজীপুরের উদ্দেশ্যে রওনা হতে পারেন। গাজীপুর সাফারি পার্কের পাশেই বাঘের বাজার এলাকায় খেজুরের রস পাওয়া যাবে। দামটা এখানে কম, প্রতি লিটার ৫০ থেকে ৬০ টাকা।
এছাড়াও রাজধানীর বিভিন্ন স্থানে ফেরি করে রস বিক্রি করতে দেখা যায় অনেককেই।
যেমন তেজগাঁ খ্রিস্টান মিশনের সামনে, গুলশান ১ এর গুদারা ঘাটে, ধানমণ্ডির রবীন্দ্র সরোবরে, মতিঝিল এজিবি কলোনির বাজারে, রমনা পার্ক ও শাহবাগ চত্বর।
তবে ভ্রাম্যমান বিক্রেতাদের কোনো নিশ্চিত অবস্থান না থাকায় ভোর বেলা হয়রানি হওয়ার সম্ভাবনাই বেশি থাকে। আবার দাম বেশি, টাটকা নয়, পানি মেশায় ইত্যাদি বিভিন্ন অভিযোগ রয়েছে এদের বিরুদ্ধে।
যেখান থেকেই রস সংগ্রহ করুন না কোনো, সেটা নিরাপদ পন্থায় সংগ্রহ করা হয়েছে কিনা সেই ব্যাপারে নিশ্চিত হয়ে নিন। বিশেষ করে নিপাহ ভাইরাস সম্পর্কে সচেতন হতে হবে।
নিপাহ ভাইরাস সম্পর্কে জানিয়েছেন বাংলাদেশ মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালের জরুরি বিভাগের চিকিৎসক ডা. ফয়সাল আহমেদ।
“এই ভাইরাস মানুষের মস্তিষ্ক ও শ্বাসযন্ত্রে রোগের সৃষ্টি করে। আর কোনো সুনির্দিষ্ট চিকিৎসা না থাকায় অধিকাংশ ক্ষেত্রেই রোগী মারা যায় বা মানসিক সমস্যার শিকার হয়ে বেঁচে থাকে।”
ভাইরাস সংক্রমণের কয়েক সপ্তাহের মধ্যে এই রোগের লক্ষণ প্রকাশ পায়। জ্বর, মাথাব্যথা, পেশিতে ব্যথা, বমি, মাথা-ঘোরা, শ্বাস কষ্ট, নিউমোনিয়া, অজ্ঞান হয়ে যাওয়া এসব লক্ষণ দেখা দেয় এই ভাইরাসের আক্রমণে।”
তাই খেজুরের রস ফুটিয়ে পান করার পরামর্শ দেন এই চিকিৎসক।