আর শিশুকে শারীরিকভাবে কর্মচঞ্চল রাখতে কিছু কৌশল অবলম্বন করা যেতেই পারে।
স্প্যানিশের ইউনিভার্সিটি অফ গ্রানাডা’র এক গবেষণার উদ্ধৃতি দিয়ে স্বাস্থ্যবিষয়ক একটি ওয়েবসাইটের প্রতিবেদনে জানানো হয়, শারীরিক পরিশ্রম শিশুদের মস্তিষ্কের ধূসর অংশ বাড়ায় যা তাদের প্রাতিষ্ঠানিক কর্মদক্ষতা বাড়াতে সাহায্য করে।
গবেষকদের মতে, শারীরিক সুস্থতা বিশেষ করে, হৃদপিণ্ডের সুস্থতা, গতি তৎপরতা ও পেশির সুস্থতা মস্তিষ্কের ধূসর অংশের উপর নির্ভর করে।
‘দা জার্নাল অব নিউরোইমেজ’য়ে প্রকাশিত প্রতিবেদন থেকে জানা গেছে, শিশুর শিক্ষণ, কার্যকারিতা ও পড়াশুনার দক্ষতা মস্তিষ্কের ধূসর অংশের বৃদ্ধির সঙ্গে জড়িত। তাই শিশুকে ঘরে বসিয়ে নয়, বরং বড় করতে চাইলে শারীরিকভাবে সচল রাখাই শ্রেয়। আর এর জন্য উপায়ও রয়েছে।
শিশুকে খেলাধূলায় উৎসাহিত করুন: ক্রিকেট, ফুটবল, সাঁতার, টেনিস অথবা কাবাডি যে কোনো খেলাতে শিশুকে উৎসাহিত করুন। খেলাধূলা শিশুকে ব্যস্ত ও কর্মক্ষম রাখে। তারা যখন খেলতে যায় তখন অনেক নতুন বন্ধুর সঙ্গে পরিচিত হয় এবং একে অপরের কাছে নিজেকে প্রকাশ করার সুযোগ পায়।
খেলাধূলা শিশুদের অনেক কিছু শিখতে সাহায্য করে যা পরবর্তীতে জীবনে অনেক কাজে লাগে যেমন- দলের কোনো জটিল সদস্যের সঙ্গে কাজ করা, অনেক চাপের মধ্যে কাজ করা, সে কি চায় তা মুখ ফুটে বলা এবং ধৈর্য ধরা ইত্যাদি।
নাচ: শারীরিক কসরতের সবচেয়ে মজার মাধ্যম হচ্ছে নৃত্য। এমনকি ব্যায়ামাগারে যেতে না চাইলেও বড়দের ক্ষেত্রেও নাচ হতে পারে ব্যায়ামে আগ্রহ বাড়ানোর অন্যতম মাধ্যম।
নাচের অঙ্গভঙ্গীর ফলে শারীরিক যে ভারসাম্যের সৃষ্টি হয় তা শিশুর স্মৃতিশক্তি, তেজ এবং সহিষ্ণুতা বাড়ায়। আর এক ঘণ্টার নাচ ভালো পরিমাণে ক্যালোরি পোড়ায়।
‘স্ক্রিন’য়ে সময় কম দেওয়া: স্কুল থেকে ফিরে শিশুকে টেলিভিশনের রিমোট, ল্যাপটপ বা মোবাইলের স্ক্রিনের মধ্যে আবদ্ধ হয়ে থাকতে দেবেন না। তারা যত বেশি সময় স্ক্রিনের মধ্যে আটকে থাকবে তত কম সময় পাবে বাইরে খেলার জন্য। শিশুর গ্যাজেট ব্যবহারের সময় নির্ধারণ করে দিন। তবে মনে রাখবেন কোনো কিছুর পুরস্কার স্বরূপ শিশুকে স্ক্রিন ব্যবহার করতে দেবেন না। স্ক্রিনের সামনে বসে আপনি বা আপনার শিশু খাওয়া দাওয়া করবেন না।
হাঁটতে বের হন: কাছালাছি কোথাও যেতে হলে শিশুকে নিয়ে হেঁটে যান। নিয়মিত হাঁটা খুব ভালো ব্যায়াম। সাধারণ গতিতে হাঁটা ১৫০ থেকে ২০০ ক্যালরি খরচ করতে সাহায্য করে। ফলে শিশুও নিজেকে স্বাধীন ও স্বতঃস্ফুর্ত অনুভব করবে এবং আপনাদের মধ্যে খুব ভালো সময়ও কাটবে।
নিজেই হন ‘রোল মডেল’: শিশু তার মায়ের কাছ থেকে শেখে। আপনি যদি একটি ব্যস্ত জীবনযাপন করেন তাহলে আপনার শিশুও সেটা শিখবে। অবসর সময় মোবাইল ফোনে ব্যয় না করে শিশুর সঙ্গে সময় কাটান। সম্ভব হলে, সন্তানের সঙ্গে বল, দড়ি-লাফ খেলুন অথবা আশপাশে বেড়াতে যান। সন্তান যখন আপনাকে ব্যস্ত দেখবে তখন সেও ‘ফিট’ থাকার জন্য চেষ্টা করবে।
ছবি: রয়টার্স।
আরও পড়ুন