বেশি প্রোটিন খেলে যা হয়

মাংস খেতে ভালোবাসেন! কষানো মাংস দিয়ে পরোটা, কাচ্চি বিরিয়ানি অথবা স্টেক- বাইরে তো খাওয়া পড়ছেই, পাশাপাশি ঘরের রান্নাতেও থাকছে মাংস, ডিম কিংবা দুধ। পরিমিত হলে ঠিকাছে। তবে প্রতিদিনই বেশি বেশি প্রোটিন বা আমিষজাতীয় খাবার বেশি খেলে গণ্ডগোলে পড়তে হবে।

লাইফস্টাইল ডেস্কবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 29 Nov 2017, 09:42 AM
Updated : 29 Nov 2017, 09:42 AM

শরীরকে ভবনের সঙ্গে তুলনা করলে আমিষকে ধরা যায় ইট হিসেবে। শুধু পেশি গঠনই নয়, দৈনন্দিন সকল শারীরিক কাজ সম্পন্ন করার পেছনেও গুরুত্বপূর্ণ একটি উপাদান আমিষ। পুষ্টিবিজ্ঞানে প্রোটিনকে এভাবেই ব্যাখ্যা করা আছে।

তবে সবকিছুরই মাত্রা আছে, তাই আমিষও অতিরিক্ত গ্রহণ করলে তা অভিশাপ হয়ে দাঁড়াতে পারে।

‘রিকোমেন্ডেড ডায়েটারি অ্যালাওয়েন্স (আরডিএ) অনুযায়ী শরীরের প্রতি কেজি ওজনের বিপরীতে ০.৮ গ্রাম আমিষ প্রয়োজন। সেখানে প্রতিদিন ৫০ থেকে ৬০ গ্রাম আমিষ গ্রহণ করা হলে সমস্যা হবেই।

অপরদিকে আমাদের শরীর একসঙ্গে সর্বোচ্চ ৩০ গ্রাম আমিষ হজম করতে পারে। তাই এর বেশি আমিষ একসঙ্গে পেটে পড়লে শরীরে তা কাজে লাগাবে না।

দাঁতের সমস্যা:
খাদ্যাভ্যাসে আমিষ বেশি, কার্বোহাইড্রেইট ও চর্বি কম থাকলে শরীর আগের জমিয়ে রাখা চর্বিকে জ্বালানি হিসেবে ব্যবহার করা শুরু করে। জ্বালানি হিসেবে ব্যবহৃত এই চর্বি তৈরি করে ‘কিটোনস’, যা মুখে মারাত্বক দুর্গন্ধ তৈরি করে।

খিটখিটে মেজাজ: মেজাজের উপর আমিষের এই প্রভাব প্রায়শই চোখে পড়ে। আমিষের দিকে জোর দিতে গিয়ে কার্বোহাইড্রেইটের প্রয়োজনীয়তাকে অবহেলা করেন অনেকে। কারণ আমিষ দীর্ঘসময় পেট ভরা রাখে। আর কার্বোহাইড্রেইট শরীরে রূপান্তরিত হয়ে শক্তিতে পরিণত হয়। ফলে শরীরে যখন শক্তির উৎপাদন কমে যায়, তখন আমরা মানসিক চাপগ্রস্ত হয়ে পড়ি।

ওজন বৃদ্ধি: আমিষ বেশি খেলে কোমরের মাপ বাড়বেই। বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই এই আমিষের উৎস হয় মাংস কিংবা প্রোটিন শেইক। মাংসজাত আমিষ অত্যন্ত পুষ্টিকর ঠিক, তবে এরসঙ্গে অনাকাঙ্ক্ষিত চর্বিও শরীরে যোগ হয়। অপরদিকে প্রোটিন শেইকের স্বাদ বাড়ানোরর জন্য থাকে বাড়তি চিনি, যার মানে বাড়তি ক্যালরি।

কাজ করতে বসে যদি একই বাক্য বারবার মনোযোগ দিয়ে পড়েও বুঝতে না পারেন, মস্তিষ্ক ক্লান্তিতে ভেঙে পড়ে কিংবা আগ্রহ হারিয়ে ফেলেন, তবে দোষটা খাদ্যাভ্যাসে থাকা অতিরিক্ত আমিষের। আমিষ আমাদের শক্তি যোগায় ঠিক, তবে সেই সঙ্গে স্বাস্থ্যের উপরও প্রভাব ফেলে। কারণ কার্বোহাইড্রেইট কম আর আমিষের মাত্রা বেশি হলে মস্তিষ্কে ক্লান্তির ইঙ্গিত পৌঁছাতে থাকে, ফলে আপনি সবসময় ক্লান্তি অনুভব করতে থাকেন।

ক্ষুধা ও রাগ:
ক্ষুধা নিবারণের জন্য আমিষের উপর বেশি নির্ভরশীল হলে ক্ষুধা এবং রাগ অনুভূত হবে একসঙ্গে। শরীর যখন খাবার চায়, তখন তা কার্বোহাইড্রেট, চর্বি, আঁশ, আমিষ, ভিটামিন, খনিজ সবকিছুই চায়। এমতাবস্থায় আপনি যদি শুধু আমিষ দেন তবে শরীরের চাহিদা মেটে না।

হজমের সমস্যা: অতিরিক্ত আমিষ মলত্যাগের উপরও ক্ষতিকর প্রভাব ফেলে। আমিষ বেশি আর আঁশ কম খাদ্যাভ্যাসকে অত্যন্ত ভারি করে তোলে। ক্ষুধা অনুভূত হবে না ঠিক, তবে পেট ফুলে থাকার অস্বস্তি আপনাকে বয়ে বেড়াতে হবে।

অতিরিক্ত পানি পিপাসা: অতিরিক্ত আমিষের ধাক্কা সামলাতে বৃক্ককে প্রচুর কাজ করতে হয়, ফলে শরীরে পানিশূন্যতা দেখা দেয়। আপনি যদি আগের চাইতে বেশি পানি পিপাসা অনুভব করতে থাকেন, তবে বুঝতে হবে আমিষ খাচ্ছেন বেশি।

ছবি: রয়টার্স।

আরও পড়ুন