ত্বক ও চুলের যত্নে ডিম

প্রোটিনে ভরপুর ডিম কেবল শরীরে নয়, চুল ও ত্বকের জন্যও উপকারী। ডিমের সাহায্যেই ত্বক ও চুলের সার্বিক পরিচর্যা করা সম্ভব।

লাইফস্টাইল ডেস্কবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 8 Nov 2017, 07:43 AM
Updated : 8 Nov 2017, 08:53 AM

রূপচর্চাবিষয়ক বিভিন্ন ওয়েবসাইটে প্রকাশিত প্রতিবেদন অবলম্বনে ডিম দিয়ে রূপচর্চার বেশ কয়েকটি পন্থা এখানে দেওয়া হল।

ডিম লুটেইন’য়ের ভালো উৎস এটা ত্বক আর্দ্র রাখতে ও স্থিতিস্থাপকতা বজায় রাখতে সাহায্য করে। এর উচ্চমাত্রার প্রোটিন কোষ পুনর্গঠনে, ত্বক টানটান রাখতে এবং ডিমের প্রোটিন চুল স্বাস্থ্যোজ্জ্বল রাখতেও সাহায্য করে।  

চুলের যত্নে ডিম

নির্জীব চুলের যত্নে ডিম খুব ভালো কাজ করে। চুলের ৭০ শতাংশই কেরোটিন প্রোটিন দিয়ে তৈরি তাই ডিম ক্ষতিগ্রস্ত চুলকে সুস্থ করতে এবং রুক্ষ চুল মসৃণ ও কোমল করতে সাহায্য করে। সব ধরনের চুলের জন্যই ডিম উপকারী।   

ডিম ও জলপাইয়ের তেলের মাস্ক

* দুটি ডিম ভেঙে তাতে দুই টেবিল-চামচ খাঁটি জলপাইয়ের তেল মেশান।

* উপাদানগুলো ভালো ভাবে মিশিয়ে চুলে লাগান।

* ৩০ থেকে ৪৫ মিনিট অপেক্ষা করে চুল পরিষ্কার করে নিন। এতে করে মাথার ত্বক ও চুলের শুষ্কতা দূর হবে।   

ডিম, দুধ এবং মধুর মাস্ক

দুধ ও মধুর রয়েছে চমৎকার ময়েশ্চারাইজিং ক্ষমতা। ডিম চুলে প্রয়োজনীয় প্রোটিন ও পুষ্টি যোগায়।

* দুটি ডিম, এক টেবিল-চামচ মধু এবং দুই টেবিল-চামচ দুধ ভালো ভাবে মিশিয়ে নিন।

* নিজের প্রয়োজন অনুযায়ী উপাদান বাড়িয়ে কমিয়ে এর ঘনত্ব ঠিক করে নিতে পারবেন। এই মাস্ক রুক্ষ চুলের সার্বিক যত্ন নিতে সাহায্য করবে।

* মাস্কটি চুলে ৩০ মিনিট লাগিয়ে রেখে শ্যাম্পু করে ফেলুন। 

ডিম ও দইয়ের কন্ডিশনার

ডিম ও দইয়ের মিশ্রণ চুলে খুব ভালো কন্ডিশনিং করতে সাহায্য করে।

* দুটি ডিম ও দুই টেবিল চামচ তাজা দই নিন।

* উপাদানগুলো ভালো মতো মিশিয়ে ‘হেয়ার মাস্ক’য়ের মতো করে চুলে লাগান এবং ৩০ মিনিট অপেক্ষা করে ধুয়ে ফেলুন।

চুল ধোয়ার সঙ্গে সঙ্গেই বুঝতে পারবেন যে এই মাস্ক চুল কন্ডিশনিং করতে ও চকচকেভাব আনতে সাহায্য করে।

রুক্ষ চুলের যত্নে ডিম ও মেয়োনেইজের মাস্ক

রুক্ষ চুলের সমস্যা সমাধানে এই মাস্ক খুব ভালো কাজ করে। এই মাস্ক ব্যবহারে চুল খুব মসৃণ ও কোমল হয়।

* কোন রকমের বাড়তি স্বাদ ছাড়া এক টেবিল চামচ মেয়োনেইজ এবং দুটি ডিম ভেঙে ভালো করে মিশিয়ে নিন।

* চুলের আগা থেকে গোঁড়া পর্যন্ত এই মাস্ক লাগান।

* ২০ মিনিট চুল ‘শাওয়ার ক্যাপ’ দিয়ে ঢেকে রাখুন।

* ভালোভাবে চুল শ্যাম্পু করে নিন দেখবেন চুলের রুক্ষতা একদম দূর হয়ে গেছে।

তৈলাক্ত চুলের জন্য ডিমের সাদা অংশের মাস্ক

চুলের অতিরিক্ত তেল শুষে নিয়ে সঠিক ঘনত্ব দান করতে ডিমের সাদা অংশ সাহায্য করে।

* দুটি ডিম ভেঙে খুব সাবধানে হলুদ অংশ আলাদা করে নিন।

* এবার ডিমের সাদা অংশের সঙ্গে এক টেবিল-চামচ লেবুর রস নিয়ে হালকা ঘন হওয়া পর্যন্ত নাড়তে থাকুন।

* সমস্ত চুলে এই মিশ্রণ লাগান তবে খেয়াল রাখবেন যেন মাথার ত্বকে এটা না লাগে।

* কিছুক্ষণ অপেক্ষা করে চুল ধুয়ে ফেলুন। 

ত্বকের যত্নে ডিম

শুষ্ক বা তৈলাক্ত যে কোনো ধরনের ত্বক ভালো রাখতেই ডিম ব্যবহার করা যায়। ডিমের কুসুম ফ্যাটি অ্যাসিড সমৃদ্ধ যা ত্বক আর্দ্র রাখতে সাহায্য করে। ডিমের সাদা অংশ অ্যালবুমিন সমৃদ্ধ যা প্রোটিনের সরলরূপ, এটা ত্বক টানটান রাখতে এবং ত্বকের অতিরিক্ত তেল দূর করতে সাহায্য করে।      

ডিম ও লেবুর রসের মাস্ক ত্বকের ছিদ্র বন্ধ করতে সাহায্য করে

* ডিমের সাদা অংশ আলাদা করে তার সঙ্গে এক টেবিল-চামচ লেবুর রস মেশান

* ভালো মতো মেশানোর পরে মুখে লাগান, বিশেষ করে ত্বকের যে অংশে কোষ ছিদ্র উন্মুক্ত সেই স্থানে লাগান।

* মিশ্রণটি লাগানোর পর শুকানো পর্যন্ত অপেক্ষা করুন, এরপর হালকা গরম পানি দিয়ে মুখ ধুয়ে শুকিয়ে নিন।

ডিম ও দইয়ের ফেইসমাস্ক

* দুটি ডিম ও এক টেবিল-চামচ তাজা দই নিন।

* উপাদানগুলো ভালোভাবে মিশিয়ে মুখে লাগান।

* শুকানো পর্যন্ত অপেক্ষা করুন (২০ থেকে ২৫ মিনিট) এরপর তা ধুয়ে ফেলুন।

ডিম ও মধুর ফেইসমাস্ক

শুষ্ক ত্বক বিশেষ করে শীতকালে ত্বকের যত্ন নিতে এই মাস্ক সহায়তা করে।

* একটি ডিম ভেঙে তাতে আধ টেবিল-চামচ মধু মেশান।

* মিশ্রণটি মুখ ও গলায় লাগিয়ে অপেক্ষা করুন।

* শুকিয়ে গেলে কুসুম গরম পানি দিয়ে মুখ ধুয়ে নিন।

চোখের নিচের কালো দাগ ও ফোলাভাব কমাতে ডিমের সাদা অংশের ব্যবহার।

* ডিমের সাদা অংশ ফেটিয়ে নিয়ে তাতে একটি তুলা ডুবান এবং চোখের চারপাশে লাগিয়ে ১০ মিনিট অপেক্ষা করুন। 

* তারপর পানি দিয়ে ধুয়ে ফেলুন।