কৈশোরের খাদ্যাভ্যাস থেকে স্তন ক্যান্সারের ঝুঁকি

বয়ঃসন্ধিতে স্বাস্থ্যকর খাবার না খাওয়া এবং অতিরিক্ত চিনিযুক্ত খাবার ও কোমল পানীয় গ্রহণ, পরে স্তন ক্যান্সের ঝুঁকি বাড়ায়। 

লাইফস্টাইল ডেস্কআইএএনএস/বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 13 Oct 2017, 09:30 AM
Updated : 13 Oct 2017, 09:30 AM

গবেষণা থেকে জানা গেছে, কৈশোরে যারা সবজিবহুল খাবার কম খান এবং উচ্চ চিনিযুক্ত মিষ্টি খাবার ও কোমল পানীয় গ্রহণ করেন তাদের মধ্যে ‘প্রিমেনোপোজাল’ বা রজোনিবৃত্তির আগেই স্তন ক্যান্সারের ঝুঁকি থাকে।

ক্যান্সার এপিডেমিওলজি, বায়োমার্কার অ্যান্ড প্রিভেনশন পত্রিকায় প্রকাশিত একটি গবেষণা থেকে জানা যায়, যেসব নারী কৈশোরে বা তরুণ বয়সে দীর্ঘস্থায়ী প্রদাহের সঙ্গে জড়িত খাবার খায় না তাদের চেয়ে যারা কৈশোরে বা তরুণ বয়সে দীর্ঘস্থায়ী প্রদাহের সঙ্গে জড়িত খাবার খায় তাদের প্রিমেনোপোজাল স্তন ক্যান্সারের ঝুঁকি বেশি।

ইউনিভার্সিটি অব ক্যালিফোর্নিয়া, লস অ্যাঞ্জেলেস ফিল্ডিং স্কুল অব পাবলিক হেলথ’য়ের অধ্যাপক কারিন মাইকেলস বলেন, “আমাদের গবেষণার ফলাফল সুপারিশ করে যে, অভ্যাসগত খাদ্যাভ্যাস কৈশোরে বা প্রাথমিক পর্যায়ে দীর্ঘস্থায়ী প্রদাহ বাড়াতে পারে যা মেনোপোজের আগেই অল্প বয়স্ক নারীদের স্তন ক্যান্সারের ঝুঁকি বাড়ায়।”

খাবার তালিকায় সবজি কম থাকলে এবং চিনিবহুল মিষ্টি খাবার, ডায়েট কোমল পানীয়, পরিশোধিত চিনি ও কার্বোহাইড্রেট, লাল ও প্রক্রিয়াজাত মাংস, কৃত্রিম মাখন ইত্যাদি রক্তে প্রদাহ সৃষ্টিকরা উপাদানের মাত্রা বৃদ্ধির সঙ্গে সম্পর্কযুক্ত বলে জানান, মাইকেল।    

তিনি আরও বলেন, “স্তন ক্যান্সার প্রকাশ পেতে অনেক সময় নেয়, প্রাথমিক অবস্থায় নারীর খাদ্যাভ্যাস স্তন ক্যান্সারে ঝুঁকি বাড়ায় কিনা এ বিষয়ে আমরা যথেষ্ট কৌতহলী।”

এই গবেষণায় জন্য মাইকেল ও তার সহকারীরা ১৯৯৮ সালে নার্স হেলথ স্টাডি ২’ য়ে নথিভুক্ত ৪৫ হাজার ২শ’ ৪ জন নারী যারা ‘ফুড ফ্রিকুয়েন্সি কোয়েশ্চেনিয়ার’ সম্পন্ন করেছেন তাদের তথ্য ব্যবহার করেন।  

১৯৯১ সালে ফুড ফ্রিকুয়েন্সি কোয়েশ্চেনিয়ার’য়ের সাহায্যে প্রাপ্ত বয়স্কদের খাদ্যাভ্যাস মূল্যায়ণ করা হয়। অংশগ্রহণকারীদের বয়স ২৭ থাকে ৪৪ এর মধ্যে এবং প্রতি চার বছর পর পর তা পুনরায় পরীক্ষা করা হয়।

প্রতিটি নারীর খাদ্যাভ্যাসে পূর্বে প্রদাহিত পদ্ধতি ব্যবহার করে একটি প্রদাহজনক স্কোর দেওয়া হয়ে থাকে যা রক্তে প্রদাহ চিহ্নিত উপাদান সৃষ্টি করতে খাবারের সঙ্গে সম্পর্কিত।  

২২ বছর বয়সের ৮৭০ জন নারী যারা হাই স্কুল ফুড ফ্রিকুয়েন্সি কোয়েশ্চেনিয়ার সম্পন্ন করেছেন তাদের প্রিমেনোপোজাল স্তন ক্যান্সার এবং ৪৯০ জনের পোস্টমেনোপোজাল স্তন ক্যান্সার ধরা পড়ে।   

কৈশোরের খাদ্যাভ্যাসের প্রদাহের স্কোরের ভিত্তিতে অংশগ্রহণকারী নারীদের পাঁচটি দলে ভাগ করা হয়, যাদের স্কোর কম ছিল তাদের তুলনায় যারা এখানে উচ্চ স্কোর করেন তাদের ৩৫ শতাংশের প্রিমেনোপোজাল স্তন ক্যান্সারের ঝুঁকি থাকে।  

একই গবেষণা যখন প্রাথমিক প্রাপ্তবয়স্কদের খাদ্যতালিকার ভিত্তিতে করা হয় তখন দেখা যায় যে, যাদের প্রদাহের স্কোর কম তাদের চেয়ে যাদের প্রদাহের স্কোর বেশি ছিল তাদের ৪১ শতাংশ প্রিমেনোপোজাল স্তন ক্যান্সারের ঝুঁকি বেশি।

ছবি: রয়টার্স।