দুশ্চিন্তা ঝাড়তে কাগজ-কলম

প্রেমপত্র লিখেছেন কখনও? আহা! ম্যাসেঞ্জার কিংবা ইমেইলে টাইপ করে নয়, সাদা কাগজে গোটা গোটা অক্ষরে লিখেছেন কোনো মনের কথা? না করে থাকলে, মনের চাপা আবেগ বেদনা ঝেরে ফেলতে এখন থেকে কাগজে লিখে ফেলুন।

লাইফস্টাইল ডেস্কআইএএনএস/বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 4 Oct 2017, 05:44 AM
Updated : 4 Oct 2017, 05:46 AM

কারণ সাম্প্রতিক গবেষণায় দেখা গেছে মানসিকচাপের কারণগুলো যদি কাগজে লিখে ফেলা যায়, তাহলে দুশ্চিন্তা কমানো সহজ হয়।

‘সাইকোফিজিওলজি’ নামক জার্নালে গবেষণাটি বিস্তারিত তুলে ধরা হয়। এতে অংশ নেয় দীর্ঘদিন ধরে মানসিক অস্বস্তিতে ভুগছে এমন কলেজ পড়ুয়া শিক্ষার্থীরা।

কম্পিউটারভিত্তিক ‘ফ্ল্যাংকার টাস্ক’ নামক পদ্ধতিতে অংশগ্রহণকারীদের সাড়া দেওয়ার যোগ্যতা এবং সাড়া দিতে কতটুকু সময় নিচ্ছেন তা পরিমাপ করা হয়।

গবেষণাটি বলছে, মনের আবেগ কাগজে বিস্তারিত লিখে ফেললে মস্তিষ্কের উপর চাপ কমায় এবং মানসিক চাপ উদ্রেক করে এমন কাজ কার্যকরভাবে করা সহজ হয়।  

গবেষকরা বলেন, “দুশ্চিন্তা মস্তিষ্কের জ্ঞানবিষয়ক অঞ্চলগুলোকে ব্যস্ত রাখে। তাই দুশ্চিন্তায় থাকলে আপনি ক্রমাগত অনেকগুলো কাজ একসঙ্গে করতে থাকেন। কারণে একটা কাজ করার পাশাপাশি দুশ্চিন্তা দমিয়ে রাখতে অন্য কাজগুলো করে যান।”

এই গবেষণার প্রধান, ‘মিশিগান স্টেট ইউনিভার্সিটি’র পিএইচডি’র ছাত্র হান্স শ্রোডার বলেন, “আমাদের গবেষণা দেখা গেছে, দমিয়ে রাখা এই দুশ্চিন্তাগুলো নিজের মতো করে খাতায় লিখে ফেললে মস্তিষ্কের জ্ঞানবিষয়ক অঞ্চলগুলোকে হাতের কাজে ব্যবহার করা সম্ভব হয়, ফলে আপনি আরও বেশি দক্ষতার সঙ্গে হাতের কাজ শেষ করতে পারেন।” 

আগের গবেষণাগুলোতে দেখা গেছে, এমন লেখালেখির অভ্যাস অতীতের কোনো কষ্টের স্মৃতির সঙ্গে বোঝাপড়া করতে সাহায্য করে।

মিশিগান স্টেট ইউনিভার্সিটি’র সহযোগী অধ্যাপক জেসন মোজার বলেন, “দুশ্চিন্তাগ্রস্তরা কাজ শুরুর আগে দুশ্চিন্তা করেই মস্তিষ্কের অনেকটা কার্যক্ষমতা অপচয় করে ফেলেন, তাই দুশ্চিন্তাগ্রস্ত-মস্তিষ্ক অধিক চাপের মধ্যে কাজ করে। মনের ভাব লিখে রাখার অভ্যাস করতে পারলে মস্তিষ্ক ঠাণ্ডা থাকে। ফলে সামনের ঝামেলার কাজগুলো সামলানো মস্তিষ্কের জন্য সহজ হয়।”

শিক্ষার্থীদের ‘ফ্ল্যাংকার টাস্ক’ শুরু করার আগে প্রায় অর্ধেক অংশগ্রহণকারীকে ৮ মিনিট ধরে তাদের মনের গভীরতম আবেগ এবং ‘ফ্ল্যাংকার টাস্ক’ সম্পর্কে তাদের অনুভূতি কাগজে লেখানো হয়। বাকি অর্ধেককে বলা হয় গতকাল সারাদিন কী করেছেন তা লিখতে।

দুই দলই প্রায় একই পরিমাণ গতি এবং খূঁতহীনভাবে কাজ করেন। তবে যে দল মনের ভাব লিখেছিল, তারা ‘ফ্ল্যাংকার টাস্ক’টি করেছে বেশি কার্যকরভাবে। অর্থাৎ তারা মস্তিষ্কের ক্ষমতা ব্যবহার করেছেন কম।

যা হোক, এবার থেকে না হয় মনের অশান্তি কাগজে লিখে রাখতে শুরু করুন। শান্তির জন্য আপনি নোবেল পুরষ্কার হয়ত পাবেনা, তবে মনের শান্তিতো মিলবে।

ছবি: রয়টার্স।

আরও পড়ুন