কলা দিয়ে দুধভাত- কত মজার খাবার! অথচ পুষ্টিবিজ্ঞান বলছে দুধ-কলা একসঙ্গে খাওয়া আর কালসাপ পোষা অনেকটা একই ব্যাপার হয়ে যেতে পারে।
Published : 11 Sep 2017, 06:43 PM
খাদ্য ও পুষ্টিবিষয়ক একটি ওয়েবসাইটে এই বিষয়ের উপর প্রকাশিত প্রতিবেদন থেকে জানা যায়, দুটি খাবারই বেশ পুষ্টিকর যদি তা আলাদা খাওয়া হয়।
বিশেষজ্ঞদের মতে, দুধ কলার সংমিশ্রণ ‘উত্তম’ খাবার নয়।
দুধ ও কলা- দুটি ভিন্ন উপাদান
দুধ: প্রোটিন, ভিটামিন এবং খনিজ যেমন- রিবোফ্লেভিন, ক্যালসিয়াম এবং ভিটামিন বি-টুয়েলভ’য়ে ভরপুর। প্রতি ১০০ গ্রাম দুধে ৪২ ক্যালরি থাকে। যদিও বলা হয় 'দুধ একটি সম্পূর্ণ খাবার'। সেটা আসলে ঠিক নয়। কারণ এতে অত্যাবশ্যক ভিটামিন সি, খাদ্যআঁশ ও স্বল্প কার্বোহাইড্রেইটয়ের ঘাটতি রয়েছে।
কলা: ভিটামিন বি সিক্স, ম্যাগনেসিয়াম, ভিটামিন সি, খাদ্যআঁশ, পটাশিয়াম এবং বায়োটিনে পূর্ণ। প্রতি ১০০ গ্রাম কলাতে ৮৯ ক্যালোরি পাওয়া যায়। এই ফল অনেক্ষণ পেট ভরা রাখতে পারে। কর্মশক্তি যোগায়। কলা উচ্চ কার্বোহাইড্রেইট সমৃদ্ধ হওয়ায় তা শরীরচর্চার আগের ও পরের নাস্তা হিসেবে বেশ উপকারী।
দুধ ও কলার স্বমন্বয়ে যা ঘটে
এই দুই খাবারের মিশ্রণ শুনতে আদর্শ মনে হলেও সত্যিকার অর্থে এরা একে অপরের পুষ্টির ঘাটতি তৈরি করে (দুধে খাদ্যআঁশ নেই, যা কলায় আছে)। এই দুই খাবার একসঙ্গে শরীরে প্রবেশ করলে একই ধরনের কাজ করে না।
হজমে সমস্যা
গবেষণায় দেখা গেছে, কলা ও দুধ একসঙ্গে খাওয়া কেবল হজমে সমস্যার সৃষ্টি করে না পাশাপাশি এটা সাইনাসেও সমস্যা করে। এটা শরীরের নানারকম প্রভাব যেমন- শ্বাস-প্রশ্বাসে সমস্যা, ঠাণ্ডা এবং নানারকমের অ্যালার্জি সৃষ্টি করে। যদিও অনেকে মনে করেন একসঙ্গে দুধ-কলা খেলে হজমের সমস্যা দূর হয়। আসলে হয় উল্টো। বমি ও পেট খারাপের মতো দীর্ঘস্থায়ী সমস্যাও তৈরি করতে পারে।
ভেষজ শাস্ত্র অনুযায়ী
আয়ুর্বেদ শাস্ত্রে বলা হয়, দুধ ও কলা একসঙ্গে খেলে শরীরে বিষক্রিয়া হতে পারে। যা দেহের কার্যকলাপের উপর প্রভাব ফেলে। এছাড়া শরীর ভারী করে দেয়। আর মস্তিষ্কের কার্যকারিতা ধীর করে।
সমাধান
দুধ ও কলা আলাদা খাওয়া সবচেয়ে ভালো। শরীরচর্চার আগে বা পরে নাস্তা হিসেবে যদি দুধ ও কলা খেতে চান তাহলে দুধ পান করার কমপক্ষে ২০ মিনিট পরে কলা খান।
আর দুধজাতীয় খাবারের সঙ্গে খেতে চাইলে দইয়ের সঙ্গে কলা খেলে উপকার মিলবে।
ছবি: রয়টার্স ও নিজস্ব।