ঈদুল আজহায় মজাদার রান্না ১

এই আয়োজনে আছে মোরগ-পোলাও, গরুর মাংসের কোরমা, চিরার লাচ্ছি, বাহারি সেমাই জর্দা ও মিষ্টি পান।

লাইফস্টাইল ডেস্কবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 31 August 2017, 08:37 AM
Updated : 1 Sept 2017, 08:29 AM

রেসিপিগুলো দিয়েছেন লিন্ডা ইসলাম ।

মোরগ-পোলাও

উপকরণ:
মুরগি ১ কেজির একটা (টুকরা করে ধুয়ে নেওয়া)। বাসমতি চাল আধা কেজি (ধুয়ে রাখা)। দুধ ১ কাপ। আদাবাটা দেড় টেবিল-চামচ। রসুনবাটা ১ টেবিল-চামচ। গরম মসলা ১ টেবিল-চামচ (এলাচ, দারুচিনি, জায়ফল, জয়ত্রী, লং- সব নিয়ে গুঁড়া করে নেবেন)। ঘি ১ কাপ। কাঁচামরিচ-বাটা ১ টেবিল-চমচ। লবণ স্বাদ মতো। পেঁয়াজকুচি আধাকাপ। মিষ্টিদই ৩,৪কাপ। আটার ডো (আটা আধা কেজি নিয়ে ডো তৈরি করুন)। এলাচগুঁড়া আধা চা-চামচ। লেবুর রস ১ টেবিল-চামচ।

সাজানোর জন্য: আনার দানা, পুদিনাপাতা, তেজ পাতা ৫,৬টি, গোলাপ-জল ১ টেবিল-চামচ ও বেরেস্তা ১ কাপ।

পদ্ধতি: প্রথমে একটি পাত্রে মুরগির মাংসের সঙ্গে আদাবাটা, রসুনবাটা, গরম মসলা, দই, কাঁচামরিচ-বাটা সব একসঙ্গে মাখিয়ে ঢেকে সারারাত ফ্রিজে রেখে দিতে হবে।

একটা বড় হাঁড়িতে ৩ কাপ পানি, ১ কাপ দুধ, আধা চা-চামচ আদাবাটা, আস্তএলাচ, দারুচিনি, তেজপাতা, লবণ দিয়ে চুলায় বসান। পানি ফুটে উঠলে ধুয়ে রাখা চাল ঢেলে দিয়ে দিন।

চাল যখন ৭০ ভাগের মতো সেদ্ধ হবে তবে সামান্য শক্ত থাকবে তখন নামিয়ে একটা চালনিতে রাখতে হবে যেন পানি ঝরে যায়।

তারপর অন্য একটি পাত্রে মানে যে পাত্রে মোরগ-পোলাও করবেন তাতে অর্ধেক ঘি ও পেঁয়াজ দিয়ে দিন। পেঁয়াজ নরম হয়ে এলে তাতে আগের রাতে রাখা মুরগির মাংসগুলো মসলাসহ ঢেলে দিয়ে কষাতে হবে।

মুরগি সেদ্ধ হয়ে ঝোল মাখা মাখা হয়ে তেল উপরে উঠে আসা পর্যন্ত অপেক্ষা করুন।

একই পাত্রে চাল, বাকি ঘি, গোলাপ জল, লেবুর রস, পুদিনাপাতা, বেরেস্তা একে একে দিয়ে পাত্রের মুখ আটার ডো দিয়ে ঢাকনা আটকে দিন। ৪০ মিনিটের মতো এভাবে দমে রাখতে হবে। এ সময় চুলোর আঁচ থাকবে কম।

এরপর নামিয়ে গরম গরম পরিবেশন করুন মোরোগ-পোলাও।

গরুর কোরমা

উপকরণ:
হাড় ছাড়া গরুর মাংস ১ কেজি। টক দই দেড় কাপ। ক্রিম দেড় কাপ। পেঁয়াজ-বেরেস্তা আধা কাপ। কাঁচাপেঁপে-বাটা আধা কাপ। পেঁয়াজবাটা ৩ টেবিল-চামচ। আদাবাটা আধা কাপ। রসুনবাটা ১ টেবিল-চামচ। গরম মসলাগুঁড়া (লং, এলাচ, দারুচিনি, জয়ত্রী) দেড় চা-চামচ। তেজপাতা ৫,৬টি। কাঁচামরিচ বাটা ১ টেবিল-চামচ। ঘি ২ টেবিল-চামচ। তেল আধা কাপ।

পদ্ধতি: প্রথমে মাংস ধুয়ে ছোট টুকরা করে টক দই, আদাবাটা, রসুনবাটা, পেঁপেবাটা, কাঁচামরিচ-বাটা, গরম মসলা ও লবণ দিয়ে মাখিয়ে সারারাত রেখে দিন।

একটি কড়াইতে তেল দিয়ে চুলায় দিন। তেল গরম হলে তেজপাতা ও পেঁয়াজবাটা দিয়ে তিন থেকে চার মিনিট ভেজে মেখে রাখা মাংস ও বেরেস্তা দিয়ে দিন।

মাঝারি আঁচে ঢেকে রান্না করুন মাংস সেদ্ধ হওয়া পর্যন্ত। লাগলে সেদ্ধ হওয়ার জন্য একটু দুধও ব্যবহার করা যাবে। সেদ্ধ হয়ে এলে ক্রিম দিয়ে আরও ২০ মিনিট রান্না করুন।

ঝোল ঘন হয়ে ক্রিম থেকে তেল উঠে পাত্রের গা ছেড়ে আসবে। এবারে ঘি উপরে ছড়িয়ে দিয়ে ঢেকে দিন এবং আরও ১০ মিনিটের জন্য রান্না করুন।

১০ মিনিট পর চুলা থেকে নামিয়ে পরিবেশন করুন গরুর মাংসের কোরমা।

চিড়ার লাচ্ছি

উপকরণ:
চিড়া আধা কাপ (ধুয়ে ভিজিয়ে রাখতে হবে এক ঘণ্টা)। টক দই ১ কাপ। ঘন দুধ ১ কাপ। রুহ আফজাহ ৪ টেবিল-চামচ। চিনি আধা কাপ। ক্রিম ১ কাপ। পেস্তাবাদাম-কুচি সাজানোর জন্য।

পদ্ধতি: পেস্তা বাদাম বাদে বাকি সব উপকরণ মিশিয়ে ব্লেন্ড করে নিন। ফ্রেজে রেখে দিন তিন থেকে চার ঘন্টা।

পরিবেশনের আগে পেস্তা বাদাম উপরে দিয়ে সাজিয়ে পরিবেশন করুন।

বাহারি সেমাই-জরদা

উপকরণ:
সেমাই ১ প্যাকেট। ঘি আধা কাপ। চিনি ৩,৪ কাপ। ঘনদুধ ১ কাপ। ডিম ২টি। এলাচগুঁড়া সামান্য। বাদাম ও কিশমিশ আধা কাপ। লেবুর রস ২ টেবিল-চামচ।

সাজানোর জন্য- চমচম পাতলা করে কেটে নেওয়া ১০ থেকে ১২টি। সামান্য খাবার রং, পেস্তাকুচি, আনার দানা আধা কাপ।

পদ্ধতি: একটি পাত্রে দুধ, ডিম, এলাচগুঁড়া, চিনি, ভালো করে গুলিয়ে রাখুন। রান্নার হাঁড়ি চুলোয় বসিয়ে ঘি দিয়ে দিন। ঘি গরম হলে সেমাই হাতে গুঁড়া করে তাতে দিয়ে ১০ মিনিটের মতো ভাজুন।

কিশমিশ ও বাদাম দিয়ে আরও পাঁচ মিনিট ভাজুন। তারপর আগের থেকে গুলিয়ে রাখা দুধের মিশ্রণটা ঢেলে দিন সেমাইতে। চুলার আঁচ বাড়িয়ে লেবুর রস দিন।

দুধ ছানা হয়ে আস্তে আস্তে শুকিয়ে আসবে। নাড়তে থাকুন অনবরত। শুকিয়ে ঝুরা ঝুরা হওয়া পর্যন্ত নাড়তে হবে। হয়ে গেলে নামিয়ে ঠাণ্ডা করে নিন।

চমচম, খাবার রং, পেস্তা-বাদাম ও আনারদানা দিয়ে সাজিয়ে পরিবেশন করুন।

মিষ্টি পান

উপকরণ:
পান ১০টি। আধা কাপ নারিকেল (দুই ভাগে ভাগ করুন। এক ভাগে লাল, এক ভাগে হলুদ খাবার রং মেশান)। চিনি ২ চা-চামচ। গুলকান্দ পরিমাণ মতো। এলাচ ১০টি। লং ২০টি। সুপারি আধা কাপ। মধু ১/৪ কাপ। মৌরি ৪ টেবিল-চামচ। ট্রুটিফ্রুটি ২ টেবিল-চামচ। চুন সামান্য। চেরি ফল ১০টি। টুথপিক ১০টি।

দুই রকম রং মাখানো নারিকেলের সঙ্গে ১ চা-চামচ করে চিনি মেশান। ভালো করে মাখিয়ে রোদে শুকিয়ে নিন।

গুলকান্দ তৈরি: আধা কাপ গোলাপের তাজা পাপড়ি। আধা কাপ চিনি। ২ টেবিল-চামচ গোলাপ জল। ২ টেবিল-চামচ পানি। সব চুলায় দিয়ে নেড়ে ঘন করে নামিয়ে ঠাণ্ডা করে রাখুন।

পদ্ধতি: পানগুলো প্রথমে গুলকান্দ মাখিয়ে নিন। একটা একটা করে পান নিয়ে, পানের উপর দুই রংয়ের নারিকেল-চিনির মিশ্রণটা দিয়ে দিন। একটি করে এলাচ। দুটি করে লং দিন। বাকি সব উপকরণ অল্প অল্প করে দিন।

কোনের মতো ভাজ করে টুথপিক গেঁথে চেরি দিয়ে সাজিয়ে চুন দিয়ে পরিবেশন করুন।

সমন্বয়ে: ইশরাত জে. মৌরি।

আরও রেসিপি