খাদ্যাভ্যাসে লাগাম টেনে আর ব্যায়াম করেও দেহের বাড়তি ওজনের কাঁটা নিচে নামানো যাচ্ছে না! তাহলে বুঝতে হবে ওজন কমাতে যে প্রক্রিয়া অনুসরণ করা হচ্ছে সেখানেও ঘাপলা আছে।
Published : 01 Aug 2017, 04:51 PM
স্বাস্থবিষয়ক একটি ওয়েবসাইটে এমন পরিস্থিতিতে ওজন কমানোর প্রক্রিয়া সচল করতে করণীয় কিছু বিষয় উল্লেখ করা হয়।
কী খাচ্ছেন খেয়াল করুন: খাবারের পরিমাণ কমানোর পরও যদি ওজন না কমে তাহলে খাবারের ধরণ বদলাতে হবে। এক্ষেত্রে দ্বিগুণ কসরত করতে হতে পারে। শুরুতে উচ্চ প্রোটিন সমৃদ্ধ খাবার খান টানা কয়েকদিন। সঙ্গে যুক্ত করুন ওমেগা থ্রি ফ্যাটি অ্যাসিড, কারণ এই উপাদান চর্বি পুড়িয়ে ওজন বাড়ার ঝুঁকি কমাতে সাহায্য করে। কিছুদিন পর একদিন রাখুন যেদিন সাধারণ খাবার গ্রহণ করবেন। পাশাপাশি খাবারের তালিকায় রাখুন প্রচুর পরিমাণ অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট সমৃদ্ধ খাবার।
ব্যায়ামের পরিমাণে তারতম্য: ওজন কমানোর প্রক্রিয়া দ্রুততর করতে কিছুদিনের জন্য ব্যায়াম করার পরিমাণ বাড়িয়ে দিন। যেসব ব্যায়াম করছেন সেগুলো দ্রুততার সঙ্গে করুন। এরপর আবার কিছুদিনের জন্য ফিরে যেতে পারেন পুরানো নিয়মে। এভাবে মাঝে মাঝে বিরতি দিয়ে ব্যায়ামের মাত্রা বাড়ানোর ফলে ক্যালরি পোড়ার মাত্রা বৃদ্ধি পাবে।
ব্যায়ামে ভিন্নতা: ওজন কমাতে চাইলে শুধু ব্যায়ামাগার বা ঘরের মধ্যে ব্যায়াম করলেই চলবে না। মাঝে মাঝে ঘর থেকে বেরিয়েও কসরত করতে হবে। সাইকেল চালানো, সাঁতার কাটা, দৌড়ানো ইত্যাদি ওজন কমাতে বেশ সহায়ক। কারণ নিয়মিত একই রকম ব্যয়াম করা হলে শরীরের পেশি ওই নিয়মের সঙ্গে অভ্যস্থ হয়ে যায়। ফলে ক্যালরি ক্ষয়ের মাত্রাও কমে আসে। তাই ব্যায়ামেও ভিন্নতা রাখা জরুরি।
কম লবণ: অতিরিক্ত লবণ সমৃদ্ধ খাবার খেলে শরীরে পানির পরিমাণ বৃদ্ধি পায়। বিশেষত প্রক্রিয়াজাত খাবারে লবণের পরিমাণ বেশি থাকে। তাই ওজন কমাতে চাইলে এই ধরনের খাবার এড়িয়ে চলতে হবে। শরীরে সোডিয়ামের মাত্রা বেড়ে গেলে পানি বৃদ্ধি পায় এবং ওজনও বেড়ে যায়।
গ্রিন টি: গবেষণায় দেখা গেছে কফিতে পলিফেনল নামক উপাদান রয়েছে যা বেশি গ্রহণ করা হলে ওজন কমার প্রক্রিয়ায় ব্যাঘাত ঘটে। তাই কফি প্রেমীদের উচিত গ্রিন টি পান করা। এতে রয়েছে ক্যাটিচিনস নামক উপাদান যা পেটের মেদ কমাতে সহায়ক।
মাঝে মধ্যে খান পছন্দ মতো: ওজন কমতে শুরু করলে শরীরে চর্বিও কমতে থাকে এবং লেপটিন নামক হরমোন তৈরির পরিমাণও কমে যায়। এই হরমোন ক্ষুধার অনুভুতি কমাতে সাহায্য করে। তাই মাঝে মধ্যে কার্বোহাইড্রেট গ্রহণ করে লেপটিন তৈরির পরিমাণ বৃদ্ধি করা জরুরি, এতে ওজন কমার প্রক্রিয়া সচল থাকে।
প্রোটিন খান: প্রোটিন হজম ক্ষমতা বাড়াতে সাহায্য করে। আর চর্বি ক্ষয় হওয়ার সময় পেশি গঠনে সহায়তা করে। পাশাপাশি প্রোটিন ঘ্রিলেন নামক হরমোন তৈরিতে সাহায্য করে যা হজম প্রক্রিয়া স্বক্রিয় রাখে। তাই প্রতিদিনের খাদ্যতালিকায় প্রোটিনের পরিমাণ বাড়াতে হবে।
পর্যাপ্ত ঘুম: অপর্যাপ্ত ঘুমের কারণে শরীর ক্লান্ত ও অবসাদগ্রস্ত হয়ে যায়। ফলে হজম প্রক্রিয়াতেও ব্যাঘাত ঘটে। দিনে ছয় ঘন্টার কম ঘুম চর্বি কমার মাত্রা ৫৫ শতাংশ কমে আসে। ঘুম কম হলে ক্ষুধার অনুভূতিও বৃদ্ধি পায়। এ কারণেই ওজন কমাতে পর্যাপ্ত ঘুম অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।
ছবি: রয়টার্স।