উপকারী ছদ্মবেশে ক্ষতিকর খাবার

আমরা যা খাচ্ছি তা আসলেই শরীরের জন্য উপকারী কিনা তা নিশ্চিত হয়ে নেওয়া উচিত। তবে আমরা অধিকাংশ মানুষই স্বাস্থ্যকর মনে করে এমন অনেক খাবার খেয়ে থাকি যা প্রকৃতঅর্থে, স্বাস্থ্যকর নয়।

লাইফস্টাইল ডেস্কবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 24 July 2017, 11:55 AM
Updated : 24 July 2017, 11:55 AM

খাদ্য ও পুষ্টিবিষয়ক ওয়েবসাইটের একটি প্রতিবেদন থেকে এমন কিছু খাবার সম্পর্কে জানা যায় যা অস্বাস্থ্যকর, কিন্তু স্বাস্থ্যকর খাবার হিসেবে অভিনয় করে যাচ্ছে।

কলার চিপস

এতে কলার প্রায় সমপরিমাণ গুণাগুণ থাকে। কলার আঁশ, লৌহ, পটাশিয়াম এবং ম্যাগনেসিয়াম ইত্যাদি উপাদান কলার চিপসে পাওয়া যায়।

তারপরও প্রস্তুতকারীরা এর স্বাদ বাড়ানোর জন্য অতিরিক্ত সুগন্ধি ও চিনি মেশায় এবং অতিরিক্ত ভাজে। যা স্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকারক।

বিকল্প উপায়: বাসায় ওভেনে কলার চিপস তৈরি করুন অথবা প্রথমে বাতাসে তা শুকিয়ে নিয়ে ভেজে নিন। রেসিপি জানতে ক্লিক করুন।

মচমচে রুটি বা বিস্কুট

বাজারে নানা ধরনের মচমচে রুটি পাওয়া যায় যার অধিকাংশই ক্ষতিকারক তেলে ভাজা।

বিকল্প উপায়: পণ্যের গায়ে লেখা প্রস্তুত প্রণালি দেখুন। ইস্ট, প্রক্রিয়াজাত আঁশ, সংরক্ষক দ্রব্য, রং অথবা অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট থাকা ঠিক নয়। উন্নত মানের 'ক্রিস্পব্রেড' গোটা শস্য অথবা মোটা গম দিয়ে তৈরি করা হয়ে থাকে।

গ্লুটেন বিহীন খাবার

গ্লুটেন একটি উদ্ভিজ্জ প্রোটিন। এই উপাদান পানি ও ময়দার মিশ্রণে সহায়তা করে। যাদের গ্লুটেন সহ্য হয় না এটা তাদের জন্য ক্ষতিকর। তবে এদের সংখ্যা খুবই কম, সারা বিশ্বের শতকরা একভাগ মানুষ গ্লুটেন সহ্য করতে পারেন না। তাই বাকিদের চিকিৎসকের পরামর্শ ছাড়া এই প্রোটিন এড়িয়ে যাওয়া ঠিক নয়। গ্লুটেন বিহীন খাবার নানারকমের প্রক্রিয়াজাত উপাদান মেশানো থাকে যা শরীরের জন্য ক্ষতিকারক।

বিকল্প উপায়: সাধারণ রুটি খান। খুব বেশি খাবেন না, তবে খেতে ভয়ও করবেন না। অর্থাৎ শরীরের প্রয়োজন মতো রুটি নির্দ্বিধায় খেতে পারবেন।

শুকনা ও মিষ্টি ফল

শরীরের জন্য উপকারী। তবে এদের জীবাণু থেকে রক্ষা করতে এবং রং ঠিক রাখার জন্য 'ফাঙ্গিসাইডস’ এবং ‘সালফার ডাইঅক্সাইড’ ব্যবহার করা হয়। আবার চকলেটে শুকনা ফল ব্যবহার করার ক্ষেত্রে অতিরিক্ত চিনি মেশানো হয় যা শরীরের জন্য ক্ষতিকর।

বিকল্প উপায়: বাসায় ফল শুকিয়ে খাওয়ার ব্যবস্থা করুন। এটা খুব একটা কঠিন কাজ নয়। তাছাড়া বাজারে কিনতে পাওয়া যায় এমন শুকনা ফলের চেয়ে ঘরে শুকানো ফল বেশি উপকারী।  

প্রক্রিয়াজাত পনির

নানারকম কৃত্রিম উপাদান সংযোজিত থাকে যা প্রচুর সোডিয়াম সমৃদ্ধ। যেমন- একটি স্যান্ডুইচয়ে তিন টুকরা প্রক্রিয়াজাত পনির যোগ করার মধ্য দিয়ে সারাদিনের প্রয়োজনীয় সোডিয়াম চাহিদার তিনভাগের দুই ভাগ পূরণ হয়ে যায়।

বিকল্প উপায়: বিভিন্ন ধরণের লবণ যুক্ত পনির।

টিন বা বোতলজাত ফল ও সবজি

বিভিন্ন ধরনের টিনজাত-সবজি, সস, ভিনিগার তেমন স্বাস্থ্যকর নয়। এক কৌটা মটরশুঁটিতে অতিরিক্ত তিন টেবিল-চামচ চিনি থাকে।

বিকল্প উপায়: চিনি, লবণ ও অন্যান্য সংরক্ষক ছাড়া উন্নতমানের টিনজাত ফল ও সবজি ব্যবহার করুন।

শ্বেতসার-জাতীয় সবজি

ভুট্টা, নাশপাতি, আলু, কুমড়া এবং লালআলু ইত্যাদিতে খাদ্য আঁশ কম থাকে, ভিটামিন এবং খনিজ উপাদান অন্যান্য সবজি ও ফলের চেয়ে বেশি। এদের তাপ সৃষ্টি করার ক্ষমতাও বেশি।

বিকল্প উপায়: শ্বেতসার-হীন খাবার যেমন- রসালো এবং সবুজ রংয়ের সবজি। এই খাবারগুলো সন্ধ্যা ছয়টার পর খাওয়া উপযোগী।  

দই

দোকান থেকে কেনা দইয়ের মধ্যে প্রচুর চিনি ও সামান্য প্রোটিন থাকে। তাছাড়া এটা চিবিয়ে খেতে হয়না বলে মনে হয় যে আপনি হালকা কিছু খাচ্ছেন।

বিকল্প উপায়: কম চিনি ও উচ্চ প্রোটিন সমৃদ্ধ দই বেছে নিন। 

ওটমিল

এই খাবার যে স্বাস্থ্যকর তা সবাই জানে। তবে খুব কম মানুষই জানেন যে, দুতিন মিনিট ধরে ফুটিয়ে খাওয়া যায় এমন ওটমিলচূর্ণ আসলে শরীরের জন্য উপকারী নয়।

ক্ষুদ্র টুকরা করা ওটমিল অনেক বেশি প্রক্রিয়াজাত হয়ে থাকে যা অতিরিক্ত ক্যালরি সরবারহ করে। তাছাড়া তাৎক্ষণিক-ভাবে তৈরি করা যায় এমন ওটমিল মিষ্টি উপাদান সমৃদ্ধ, যা ক্ষতিকারক।

বিকল্প: বড় দানার ওটস খান। এটা রান্না করতে সময় বেশি লাগবে ঠিকই। তবে ওটসের প্রকৃত গুণাগুণ লাভ করতে পারবেন।

ছবি: রয়টার্স ও নিজস্ব।