বিয়ে বাড়ির রোস্ট

শিগগিরই কোনো দাওয়াত নেই। অথচ বিয়ে বাড়ির খাবারের কথা মনে করে মুখে আসছে জল! তাহলে নিজেই তৈরি করুন মুরগির এই সুস্বাদু ব্যঞ্জন।

লাইফস্টাইল ডেস্কবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 17 July 2017, 09:05 AM
Updated : 17 July 2017, 09:05 AM

রেসিপি দিয়েছেন ফেইবুকের ‘নওরিন’স কুকিং ওয়ার্ল্ড’ পেইজের তাসনুভা রোজ নওরিন।

উপকরণ: মুরগির বড় টুকরা ৪টি। মিষ্টি দই ১/৪ কাপ (মিষ্টি দই না থাকলে টক দইয়ের সঙ্গে ১ চা-চামচ বা স্বাদ মতো চিনি মিশিয়ে নিন)। পেঁয়াজ বেরেস্তা আধা কাপ। তেল ১/৪ কাপ ও ২ থেকে ৩ টেবিল-চামচ। ঘি ১ চা-চামচ। কাঁচামরিচ আস্ত ৭/৮টি। মাওয়া ২ চা-চামচ। লিকুইড দুধ ১ কাপ। লবণ স্বাদ মতো। আদাবাটা ১ চা-চামচ। রসুনবাটা আধা চা-চামচ। লালমরিচ-গুঁড়া ১ চা-চামচ। সাদা-গোলমরিচগুঁড়া ১ চা-চামচ। টমেটো সস ১ চা-চামচ। জর্দার রং সামান্য। কেওড়া বা গোলাপ জল সামান্য। লং ২-৩টি। এলাচ ২টি। দারুচিনি ছোট টুকরা। তেজপাতা ১টি।

স্পেশাল মসলা: আধা চা-চামচ এলাচ। আধা চা-চামচ দারুচিনি। আধা চা-চামচ শাহি জিরা (মিষ্টি জিরা)। ১ চা-চামচ গোলমরিচ। ১ চা-চামচ জয়ত্রী। ১টা জায়ফল। সব মিহি ব্লেন্ড করে নিতে হবে। তবে চুলায় দিয়ে ভাজতে হবে না।

এখান থেকে রোস্টে আধা চা-চামচ ব্যবহার করতে হবে।

পদ্ধতি: প্রথমে মাংসগুলো ধুয়ে টিস্যু দিয়ে মুছে নিন যেন ভাজার সময় তেল ছিটকে না আসে।

এবার লবণ ও সামান্য জর্দার রং মিশিয়ে মাংসের গায়ে মাখিয়ে নিন। মাংসের টুকরাগুলো বেশ বড় হলে ছুরি দিয়ে দাগ কেটে দেবেন। নয়ত ভেতরে মসলা ঢুকবে না।

এবার চুলায় ১/৪ কাপ তেল গরম করে দুই টুকরা করে মাংসগুলো হালকা বাদামি করে ভেজে নিন।

খেয়াল রাখতে হবে কী মুরগি ব্যবহার করছেন। যদি দেশি মুরগি হয় তাহলে দুতিন মিনিট সামান্য ওলটপালট করে ভেজে তুলে নেবেন। আর যদি ফার্মের মুরগি হয় তাহলে মিনিট পাঁচেক মাংসটা বাদামি করে ভেজে নেবেন।

দেশি মুরগি এমনিতেই শক্ত থাকে। যদি বেশি ভেজে ফেলেন তাহলে মাংস আরও শক্ত হয়ে যাবে। আর ফার্মের মুরগি নরম থাকে। তাই একটু সময় নিয়ে ভাজলে রান্নার সময় মাংসটা গলে যায় না।

ভাজা হলে সব মাংস তুলে রাখুন। এই তেলে আরও দুতিন টেবিল-চামচ তেল দিন।

এবার একটি বাটিতে সব মসলা আগে মিশিয়ে, দই, সামান্য লবণ, আদা ও রসুন বাটা, গোলমরিচগুঁড়া, লালমরিচ গুঁড়া, টমেটো সস এবং সামান্য পানি দিয়ে মিশিয়ে গরম তেলে ছেড়ে দিন।

মাঝারি তাপে মসলা ভেজে নিন। খেয়াল রাখবেন যেন পুড়ে না যায়। সঙ্গে আস্ত গরম মসলাগুলোও দিয়ে দিন। এখন মসলাটা ঢাকনা দিয়ে রাখুন। কষাবেন না, কারণ দই ফেটে যাবে।

যদি মিষ্টি দই না থাকে টক দইয়ের সঙ্গে কিছু চিনি মিশিয়ে নিলেই হবে। তবে বেশি চিনি আগেই দেবেন না। দরকার পড়লে নামানোর আগে লবণ ও চিনি দেখে যোগ করবেন। এটা খুব জরুরি।

মসলা কষানো হলে মাংসগুলো একে একে বসিয়ে দিন। ঢাকনা দিয়ে মাঝারি থেকে একটু কম আঁচে মাংস কষান। তবে মাংস বার বার চামচ দিয়ে নাড়তে যাবেন না। হাঁড়ি ধরে মাংসটা নাড়িয়ে দেবেন।

মাংস একপাশ কষানো হলে এবার অন্যপাশ উল্টিয়ে দিন। আরও মিনিট পাঁচেক কষান। এবার মাংস কষানো হলে দুধ দিয়ে এক থেকে দেড় মিনিট ঢেকে রাখবেন। এরপর ঢাকনা তুলে নিন। নয়ত দই ও দুধ ফেটে, ফাটা ফাটা মসলা হয়ে যাবে।

এখন ঢাকনা ছাড়া একটু আঁচ বাড়িয়ে মাংস কষিয়ে নিন। এই পর্যায়ে এসে লবণ, চিনি, ঝাল সব দেখে দরকার পড়লে বাড়িয়ে নিন। যখন দুধ আস্তে আস্তে ঘন হয়ে আসবে ও মাংস সিদ্ধ হয়ে যাবে তখন স্পেশাল মসলা, পেঁয়াজ বেরেস্তা ও আস্ত কাঁচামরিচ দিয়ে ঢেকে পাঁচ মিনিট রাখুন।

আবার ঢাকনা তুলে মাওয়া ও কেওড়া জল দিন। মাওয়াটা আস্তে আস্তে ভেঙে দেবেন আর মাংসগুলো এপিঠ-ওপিঠ উল্টিয়ে দেবেন। এবার ঘি দিয়ে আরও দুতিন মিনিট রেখে নামিয়ে নিন।

ব্যাস রোস্ট রেডি।

মাওয়া তৈরি: গুঁড়াদুধ ১ কাপ। ঘি ১ চা-চামচ। তরল দুধ ১/৪ কাপ।

ঘি ও দুধ চুলায় দিয়ে একটা বলক তুলে নিন। তারপর নামিয়ে কুসুম গরম থাকতে গুঁড়া দুধে মিশিয়ে নিন, একদম সিলকি একটা ঘনত্ব আসবে। ঠাণ্ডা হলে এটা শক্ত হয়ে জমে যাবে। সালাদ কাটারে গ্রেড করে যে কোনো কিছুতে দিতে পারবেন।

এটা একটা বায়ূরোধক বাক্সে বা জারে ফ্রিজের সাধারণ তাপমাত্রায় রেখে এক মাস ব্যবহার করা যাবে।

খেয়াল রাখবেন: অনেক মানুষের জন্য রোস্ট করলে মাংসের টুকরাগুলো আরও ছোট নিলে ভালো হয়। আর মাংস বেশি ভুনা না করে একটু ঝোল ঝোল রাখলে ভালো। রান্নার সময় অর্ধেক ঝোল রেখে নামিয়ে নেবেন। কারণ পরিবেশনের আগে আবার গরম করলে ঝোল একদম ঘন হয়ে যাবে। তাই এদিকটা বুঝে নিজের আন্দাজ মতো গ্রেইভি করে নেবেন।

এখানে চার টুকরা মুরগির মাংসের পরিমাণে পদ্ধতি দেওয়া আছে। মাংসের পরিমাণ কম বা বেশি হলে সেই অনুপাতে সব উপাদান কম-বেশি করে নেবেন। নয়তো স্বাদ ভালো হবে না।