মানসিক স্বাস্থ্যবিষয়ক এক ওয়েবসাইটেরমতে, সামাজিক যোগাযোগের অভাব মানুষের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতার উপর ক্ষতিকর প্রভাব ফেলে।তাই নিঃসঙ্গ মানুষের অকাল মৃত্যু হওয়ার সম্ভাবনা অনেকাংশেই বেশি।
বিস্ময়করভাবে, নিঃসঙ্গ মানুষ সময়ে সঙ্গেআরও বেশি নিঃসঙ্গ হতে থাকেন। সামাজিক যোগাযোগ যাদের কম, তাদের মস্তিষ্কে এমন পরিবর্তনআসে যে, অন্য মানুষের চেহারা দেখলে তাদের মনে ভয়ের সৃষ্টি হয়। ফলে অন্যদের সঙ্গে আলাপচারিতাও সম্পর্ক গড়ে ওঠা ক্রমেই আরও দুষ্কর হয়ে দাঁড়ায়, এমনটাই মন্তব্য করেন যৃক্তরাষ্ট্রেরইউনিভার্সিটি অফ শিকাগোর মনোবিজ্ঞানী জন কাসিওপ্পো।
নিঃসঙ্গতা নিয়ে গবেষণা থাকা এই মনোরোগবিশেষজ্ঞ বলেন, “নিসঃঙ্গতা মানে একা থাকা নয়, নিজেকে অনুভব করা। ক্ষুধার মতো নিঃসঙ্গতারওএকটি উদ্দেশ্য আছে। ক্ষুধা নেয় শারীরিক যত্ন আর নিঃসঙ্গতা আমাদের লৌকিক সত্তার যত্ননেয়।”
তিনি আরও বলেন, “হাসপাতালে পড়ে থাকা রোগীদেরকথাই ধরুন। তারা মোটেই একা নন। তাদের যতটুকু সাহায্য সহমর্মীতা প্রয়োজন তার সবটাই আছে।তবুও তারা একা অনুভব করেন। একজন বিবাহিত ব্যক্তি তার পরিবারের সঙ্গে যোগাযোগ করতে নাপারলে নিঃসঙ্গতা অনুভব করেন।
পরামর্শ
অনলাইনিভিত্তিক সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমগুলোনিঃসঙ্গতা দূর করতে কোনো ভূমিকা রাখে না।
এ বিষয়ে জন কাসিওপ্পো বলেন, “আপনার একমাত্রগ্রহণযোগ্যতা যদি হয় নিজের ইন্টারনেট ভিত্তিক ভুয়া উপস্থাপনা, তবে তা কখনও সমাজের সঙ্গেসম্পর্কযুক্ত হওয়ার অনুভূতি দিতে পারেনা।”
জোর করে কারও সঙ্গে কথা বলার চেষ্টাওবৃথা। বার বার চেষ্টা করার পরও ব্যর্থ হলে আপনার মনে হবে, ‘আমাকে দিয়ে এসব কখনও সম্ভবহবে না। আমি একটা অপদার্থ।’ তাহলে উপায় কী?
কাসিওপ্পোর পরামর্শ হল, নিজের পছন্দেরকাজে সেচ্ছাসেবক হওয়া।
ধীরে ধীরে সমাজে নিজেকে অন্তর্ভুক্ত করতেহবে। নিজেকে অল্প অল্প করে অপরের জন্য বিলিয়ে দিতে হবে। এটা প্রাথমিক পর্যায়ে বেশ কঠিনহবে, কারণ অনেকেই আপনাকে পছন্দ করবে না আর এটাই স্বাভাবিক।
একইরকম আগ্রহ, কাজকর্ম ও সামাজিক মানদণ্ডেরমানুষ খুঁজে বের করতে হবে। আর সব চেষ্টাই করতে সর্বোচ্চ ভালো পরিণামের আশায়। আর অন্যমানুষ আপনার জন্য বিপদের কারণ হতে পারে, এমন মনোভাব দূর করতে হবে।
ছবি: রয়টার্স।