বৈশাখের বিশেষ রান্না ৩

কয়েক পদের ভর্তা, কাসুন্দি ইলিশ, জিলাপি আর কাঁচা-পাকা আমের লাচ্ছি’র রেসিপি দিয়েছেন রন্ধনশিল্পী আনিসা হোসেইন।

লাইফস্টাইল ডেস্কবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 12 April 2017, 11:30 AM
Updated : 12 April 2017, 11:34 AM

ফেইসবুকে রাঁধুনিদের নিয়ে সমন্বয় করা ‘দি টেইল অফ টেস্ট’ পেইজ বাংলা নতুনবর্ষ উপলক্ষ্যে রন্ধনশিল্পীদের নিয়ে প্রতিযোগিতার আয়োজন করে। দেশের ও প্রবাসী প্রায় ৩৬ জন রাঁধুনী প্রতিযোগীদের মধ্যে ১০ জনের রন্ধন পদ্ধতি প্রাথামিকভাবে বাছাই করা হয়। এরপর সেখানে থেকে প্রতিযোগিতার ভিত্তিতে সেরা চারজনকে নির্বাচন করা হয়।

এই প্রতিযোগিতায় বিচারক হিসেবে ছিলেন রন্ধনশিল্পী কল্পনা রহমান, নুসরাত সুবর্ণা এবং নার্সিন রানহাল। পরিচালনায় ছিলেন ‘দি টেইল অফ টেস্ট’য়ের রোয়েনা মাহজাবিন, জেএনতোরা, দিনা, মুনমুন মাহমুদ এবং আফরিনা নাজনিন। সহযোগিতায় ছিলেন বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম’য়ের লাইফস্টাইল বিভাগের প্রতিনিধি ইশরাত জে. মৌরি।

বৈশাখের বিশেষ রান্নায় আজকে প্রকাশিত হল প্রতিযোগিতায় তৃতীয়স্থান করা রন্ধনশিল্পী আনিসা হোসেইন।

ভর্তা।

শুটকি বাদাম ভর্তা

উপকরণ: চ্যাঁপা শুটকি ৭টি। শুকনা মরিচ স্বাদ মতো। পেঁয়াজকাটা আধা কাপ। রসুন ৫টি কোঁয়া। লবণ স্বাদ মতো। ভাজা বাদাম আধা মুঠ।

পদ্ধতি: শুকনা মরিচ তেলে ভেজে নিতে হবে। অন্য কড়াইতে শুটকি, রসুন ও পেঁয়াজ টেলে নিন। এবার বাদাম, শুকনা মরিচ, টালা-রসুন, শুটকি ও পেঁয়াজ একসঙ্গে বেটে নিনে।

তেঁতুল-ধনেপাতার ভর্তা

উপকরণ: ধনেপাতা কাটা দুই কাপ। কাঁচামরিচ স্বাদমতো। তেঁতুলের ক্বাথ ২ টেবিল-চামচ। বাদামভাজা ১০,১২টি। রসুন ২টি কোঁয়া। লবণ স্বাদ মতো।

পদ্ধতি: তেঁতুল কিছুক্ষণ ভিজিয়ে হাত দিয়ে চটকিয়ে তেতুলের ক্বাথ বের করে নিতে হবে৷ এবার সব উপকরণ একসঙ্গে বেটে ভর্তা তৈরি করুন  ৷

আচার-চিংড়িভর্তা

উপকরণ: চিংড়ি মাছ (মাঝারি আকার) ছোট দেড় কাপ। রসুনকোয়া ৪,৫টি। পেঁয়াজকুচি আধা কাপ। কাঁচামরিচ স্বাদ মতো। আমের আচার ১ টেবিল-চামচ। লবণ স্বাদ মতো। একটু তেল মাছ ভাজার জন্য।

পদ্ধতি: চিংড়িগুলো পরিমাণ মতো লবণ মেখে নিন এবং কড়াইতে তেল গরম করে ভেজে নিন।

এখন মরিচ, রসুন ও পেঁয়াজ দিয়ে হালকা ভেজে একসঙ্গে বেটে নিন। তারপর আচার দিয়ে সব একসঙ্গে হাত দিয়ে চটকিয়ে চিংড়িভর্তার সঙ্গে ভালো করে সব মিশিয়ে নিন ৷

কাসুন্দি ইলিশ

কাসুন্দি ইলিশ।

উপকরণ:
২টি মাঝারি আকারের ইলিশ। কাসুন্দি ৪ টেবিল-চামচ। রসুনকুচি ২ টেবিল-চামচ। মরিচেরগুঁড়া দেড় টেবিল-চামচ। চিনি ২ টেবিল-চামচ। লবণ স্বাদ মতো। তেল সামান্য।

পদ্ধতি: মাছ ধুয়ে পানি শুকিয়ে নিন।

মাছের উপরে ধারালো ছুরি দিয়ে আড়াআড়ি ভাবে দাগ কেটে নিন যাতে মসলা ভালো ভাবে ভেতরে ঢুকে ৷

এবার মসলার সব উপকরণ মেখে পেস্ট করে মাছের সঙ্গে ভালো করে মাখিয়ে দিন৷ মাছের উপরে দাগ কেটেছেন তার ভেতরে মসলা ভালো করে হাত দিয়ে চেপে চেপে ভরে আধা ঘন্টা রেখে দিন৷

এরপর ওভেনে ১৮০ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রা ৩০ মিনিট বেইক করতে হবে৷ ওভেনে দেওয়ার ১৫ মিনিট পর মাছ উল্টে দিতে হবে।

৩০ মিনিট পর মাছ উপরে ঝলসানো হলে ওভেন থেকে নামিয়ে পরিবেশন করুন ৷

কাঁচা-পাকা আমের লাচ্ছি

কাঁচা-পাকা আমের লাচ্ছি

উপকরণ:
পাকাআম ১টি। কাঁচাআম ১টি। তেঁতুলের ক্বাথ আধা কাপ। চিনি ১ কাপ। বিট লবণ পরিমাণ মতো। পরিমাণ মতো বরফ টুকরা।

পদ্ধতি: তেঁতুল কিছুক্ষণ ভিজিয়ে ক্বাথ তৈরি করে নিতে হবে৷

এবার সব উপকরণ একসঙ্গে ব্লেন্ডারে দিয়ে ব্লেন্ড করে তৈরি করে নিতে হবে কাঁচা-পাকা আমের লাচ্ছি।

গুড়ের জিলাপি

গুড়ের জিলাপি।

উপকরণ:
ময়দা ২ কাপ। টক দই ৫ টেবিল-চামচ। ইস্ট দেড় চা-চামচ। কর্নফ্লাওয়ার ৪ টেবিল-চামচ। চিনি ১ চা-চামচ। লবণ ১ চা-চামচ। তেল ৪ টেবিল-চামচ। ২ কাপ পানি (হালকা গরম)। তেল ৩ কাপ (ভাজার জন্য)।

সিরার জন্য: ৩ কাপ পানি। ২ কাপ গুড় এবং চিনি ১ কাপ। ১ টেবিল-চামচ ঘি। ১ চা-চামচ গোলাপজল। ৩টি এলাচ। লেবুর রস ১ চা-চামচ। লাল খাবার রং ১ ফোঁটা ৷

পদ্ধতি: ময়দার সঙ্গে কর্নফ্লাওয়ার, চিনি, তেল, লবণ, দই ও ইস্ট মিশিয়ে পানি দিয়ে খামির তৈরি করে নিন৷ খামির হাত দিয়ে তুললে আঙুল বেয়ে তারের মতো পড়লে বুঝতে হবে খামির ঠিক আছে৷ এক ঘন্টা ঢেকে রেখে দিন ৷

সিরার উপকরণ হাঁড়িতে নিয়ে জ্বাল দিয়ে সিরা তৈরি করে নিতে হবে৷ সিরা ছয় থেকে সাতবার ফুটে উঠলে চুলা বন্ধ করে দিন৷ বেশি জ্বাল দিলে জমে যাবে।

কড়াইতে ডুবো তেল দিয়ে চুলার আঁচ একদম কমিয়ে দিন।

তেল অনেক গরম হওয়ার আগেই প্রথমে একবার হাত ঘুরিয়ে গোল করে খামির জিলাপির প্যাঁচের নকশায় দিন।

খামির চারপাশে লাগিয়ে আর একবার ঘুরান, তৃতীয়বারে জিলাপির মাঝখানে খামির দিয়ে হাত সামনের দিকে নিয়ে এসে উঠিয়ে নিন৷ হয়ে গেলো জিলাপি প্যাঁচ।

তেল বেশি গরম হয়ে উঠলেই খামির সরে যায়। তাই বেশি গরম হওয়ার আগেই প্যাঁচ দেবেন। এই নিয়ম মানতে পারলে জিলাপির প্যাঁচ জটিল না।

এভাবে জিলাপি বানিয়ে মচমচে করে ভেজে তেল থেকে তুলে গরম সিরায় ডুবিয়ে এক মিনিটের মতো জিলাপিগুলো উল্টে পাল্টে সিরা থেকে তুলে রাখুন৷

জিলাপি একদিন পর্যন্ত  মচমচে থাকবে৷

মনে রাখবেন: সসের খালি বোতল / বা কেক সাজানো পাইপিং ব্যাগ অথবা প্লাস্টিকের দুধের প্যাকেটে খামির ভরে জিলাপি বানাতে পারেন ৷

আনিসা হোসেইন।

সিরা হওয়ার পর সঠিক সিরা হয়েছে কিনা দেখার জন্য এক আঙুল গরম সিরা নিয়ে অন্য আঙুল দিয়ে ধরলে আঠালো লাগবে এবং চিকন তারের মতো হালকা আঠালো দেখালে বুঝবেন সিরা সঠিক হয়েছে।

আরও রেসিপি: