প্রসাধনী হতে পারে ক্ষতির কারণ

ত্বক কোমল ও সুস্থ রাখতে ফেইসওয়াশ, ক্রিম, সানস্ক্রিন ইত্যাদি ব্যবহার করা হয়। পাশাপাশি নানান ধরনের মেইকআপ অনুষঙ্গ তো আছেই। তবে কখনও কি ভেবে দেখেছেন এই প্রসাধনীগুলো আসলেও উপকারী নাকি এর উল্টোটাই করছে!

লাইফস্টাইল ডেস্কবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 11 April 2017, 11:02 AM
Updated : 11 April 2017, 11:02 AM

অজান্তেই ত্বকের ক্ষতি হয়ে যায়। রূপচর্চাবিষয়ক একটি ওয়েবসাইটে এমনি কিছু দিক তুলে ধরা হয়। ত্বকের যত্নে ব্যবহৃত নানান ধরনের ক্রিম, সানস্ক্রিন, লিপস্টিক বা ফাউন্ডেশনের ব্যবহৃত উপদান হতে পারে ক্ষতিকর।

ঠোঁট শুষ্ক করে তোলে ম্যাট লিপস্টিক: লিপস্টিক তৈরিতে ব্যবহৃত ‘লেড’ ঠোঁটের ত্বকের জন্য ক্ষতিকর- এটি বেশ পুরানো খবর। এরপরও নানান নামিদামি ব্র্যান্ড তাদের নজরকাড়া লিপস্টিকের পসরা সাজিয়ে আকৃ্ষ্ট করেছেন প্রসাধনপ্রেমী নারীদের। আর হাল ফ্যাশনে জনপ্রিয়তার তুঙ্গে রয়েছে লিকুইড লিপস্টিক। এই লিপস্টিক তৈরিতে তেলের বদলে ওয়্যাক্স বা মোম ব্যবহৃত হয় বেশি পরিমাণে। এছাড়াও থাকে অ্যালকোহল।

ভারতের চেন্নাইয়ের ত্বকবিশেষজ্ঞ ডা. কওসালিয়া ভি নাথান বলেন, “লিপস্টিক লাগানোর আগে অবশ্যই লিপবাম ব্যবহার করতে হবে। নিয়মিত ব্যবহারের জন্য হালকা রং সমৃদ্ধ লিপবাম ব্যবহার করা যেতে পারে। প্রতিদিনের ব্যবহারে গাঢ় রংয়ের ম্যাট লিপস্টিকগুলো এড়িয়ে চলা ভালো। রাতে ঘুমানোর আগে ঠোঁটে অল্প পরিমাণে ঘি মালিশ করে নিন। এতে ঠোঁট কোমল থাকবে এবং রংও ঠিক হবে।”

সানস্ক্রিন থেকে হতে পারে ক্যান্সার: বেশিরভাগ সানস্ক্রিন ক্রিম বা লোশনে রেটিনাইল পালমিটেট বা রেটিনল থেকে থাকে। মূলত এই উপাদান নাইট ক্রিমে ব্যবহৃত হয়। কারণ রেটিনল ব্যবহারের পর রোদে বের হওয়া উচিত নয়। এই উপাদান ত্বক আরও সংবেদনশীল করে তোলে। এছাড়াও অক্সিবেনজোন নামক উপাদান সমৃদ্ধ প্রসাধনী দীর্ঘদিন ব্যবহারের ফলে ত্বকের কোষ ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে। তাই সানস্ক্রিন কেনার আগে অবশ্যই এর উপাদানের তালিকায় চোখ বুলিয়ে নিতে হবে।

ত্বক ফর্সা করার ক্রিম ব্যবহারে হতে পারে বিষক্রিয়া: ভারতীয় ওজন নিয়ন্ত্রণ বিষয়ক বিশেষজ্ঞ ডা. রেনুকা ডেভিড জানান, ত্বকের রং উজ্জ্বল করার দাবী রাখে এমন ‘স্বাভাবিক’ ট্যাগ লাগানো ক্রিম বা লোশন যদি দীর্ঘদিন ব্যবহার করা হয় তাহলে এর উপাদানের তালিকা ভালোভাবে পড়ে দেখা উচিত।

উপাদানের তালিকায় মার্কারি, মারকিউরাস ক্লোরাইড, কালোমেল, মারকিউরিক বা মারকিউরিও ইত্যাদি নাম উল্লেখ থাকলে তা এখনই বাতিল করুন। যদি উপাদানের কোনো তালিকা উল্লেখ না থাকে তাহলে কখনই ব্যবহার করা উচিত নয়।

মার্কারি’র বিষক্রিয়ার কারণে স্মৃতিশক্তি হ্রাস, দৃষ্টিশক্তি দুর্বল হওয়া, ত্বকে জ্বালাভাব ইত্যাদি সমস্যা হতে পারে।

কেমিকলযুক্ত প্রসাধনী বাদ দিয়ে দই, মধু, টমেটো, চালের গুঁড়া ইত্যাদি ভেষজ উপাদান ব্যবহার করলে ত্বকের রংও উজ্জ্বল হবে পাশাপাশি কোনো ধরনের ক্ষতি হওয়ারও ঝুঁকি থাকবে না।

আইশ্যাডো ব্যবহারে বলিরেখার ঝুঁকি বৃদ্ধি: ডা. নাথান বলেন, “বয়সের সঙ্গে চোখের চারপাশের সংবেদনশীল ত্বকের কোষগুলো শুষ্ক ও প্রাণহীন হয়ে পড়ে। এ কারণে বলিরেখা দেখা দেয়। চোখে আইশ্যাডো ব্যবহারের ফলে এই অবস্থার অবনতি ঘটে। আইশ্যাডো তৈরিতে ব্যবহৃত রাসায়নিক উপাদানগুলো চোখের ত্বক ক্ষতি করে থাকে।”

এ কারণে কখনও মেইকআপ না তুলে ঘুমানো উচিত নয়।

ডা. নাথান বলেন, “দিন শেষে ভালোভাবে ত্বক পরিষ্কার করে নিতে হবে। এরপর কোমল স্ক্রাবার ব্যবহার করে জমে থাকা ময়লাও ধুয়ে ফেলতে হবে। প্রতি রাতে ঘুমানোর আগে জলপাইয়ের তেল এবং গোলাপ জল মিশিয়ে চোখের ত্বকে হালকাভাবে বুলিয়ে নিন। চোখের আশপাশের ত্বক কোমল হয় বলে বেশি ঘষাঘষি করা উচিত নয়, এতে বলিরেখার সমস্যা বৃদ্ধি পেতে পারে।”

একইভাবে কাজলের বিষক্রিয়ার কারণে চোখে জ্বলুনি, লালচেভাব, আঠালো অনুভুতি হওয়া ইত্যাদি সমস্যা হতে পারে। তাই ভেষজ উপাদানে তৈরি প্রসাধনী বেছে নেওয়ার পরামর্শ দেন ডা. নাথান।

ছবি: রয়টার্স।