দুশ্চিন্তা যখন ভালো

কম দিলে স্বাদ হয় না, বেশি দিলে জিভে সয় না— লবণ, ঝাল সম্পর্কে প্রচলিত এই প্রবাদ বিস্ময়করভাবে দুশ্চিন্তার ক্ষেত্রেও প্রযোজ্য।

লাইফস্টাইল ডেস্কবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 20 March 2017, 10:18 AM
Updated : 20 March 2017, 10:18 AM

স্বাস্থ্যবিষয়ক এক ওয়েবসাইটের দেওয়া তথ্য মতে, কল্যাণজনক দুশ্চিন্তাকে বৈজ্ঞানিক ভাষায় বলা হয় ‘ইউস্ট্রেস’, যা আমাদেরকে আরও বেশি অর্জন করতে, জীবনযাত্রার মান বাড়াতে, ন্যায়বিচারের জন্য লড়তে, ছুটির দিনে বেড়াতে যেতে ইত্যাদির তাগাদা যোগায়।

এরকম দুশ্চিন্তা বা মানসিক চাপের ভালো দিকগুলো হল—

মস্তিষ্কের ক্ষমতা বাড়ায়: অল্পমাত্রায় দুশ্চিন্তা মস্তিষ্কে ‘নিউরোট্রোফিন্স’ নামক রাসায়নিক উপাদান তৈরি করে। যা নিউরনের মধ্যকার সংযোগকে জোরালো করে। ব্যায়াম করলে যে মানসিক ও শারীরিক প্রশান্তি মেলে সেটার প্রাথমিক পদ্ধতিও এমনই। ক্ষণস্থায়ী দুশ্চিন্তা থেকেও অনেকটা সেরকম উপকার মেলে।

ক্ষণস্থায়ী রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায়: মানসিক চাপে থাকলে শরীর সম্ভাব্য ফলাফলের জন্য নিজেকে প্রস্তুত করে। পদ্ধতিটি হল ‘ইন্টারলিউকিন্স’ নামক এক রাসায়নিক উপাদান বেশি পরিমাণে তৈরি করা, যা শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা নিয়ন্ত্রণ করে। ফলে সৃষ্টি হয় একটি ক্ষণস্থায়ী প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা।

শক্তিবর্ধক: নিয়ন্ত্রণযোগ্য মানসিক চাপের সঙ্গে একবার মোকাবেলা করার পরে কাজটিকে আরও সহজ করে তোলে। বারবার এধরনের মানসিক চাপ মোকাবেলা করার মাধ্যমে শারীরিক ও মানসিক নিয়ন্ত্রণ আরও জোরালো হয়।

সৃষ্টিশীল: নতুন পথে চলতে গিয়ে অজানার ভয়ে মানুষ দুশ্চিন্তাগ্রস্ত হয়ে পড়ে। এই দুশ্চিন্তা পরে নতুনের সঙ্গে মানানসই পরিবর্তন আনতে, লড়াই করতে বাধ্য করে। জীবনের ভালো-খারাপ সব ঘটনাই কমবেশি মানসিক চাপ সৃষ্টি করে। নতুনের সঙ্গে প্রতিনিয়ত মানিয়ে নেওয়ার তালে অনেকসময় সৃষ্টিশীলভাব তৈরি হয়।

সাফল্যের অনুপ্রেরণা: কর্মক্ষেত্রে বিশেষ একটি কাজে সফল হওয়ার জন্য ‘দুশ্চিন্তা’ প্রয়োজন হতে পারে।

উদাহরণ হিসেবে ধরতে পারেন নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে কাজ শেষ করার দুশ্চিন্তাকে। অন্যান্য কাজের ফাঁকে সময় বের করে সঠিক সময়ে কাজটি শেষ করতে ওই দুশ্চিন্তাই আপনার একমাত্র সহকারী। কাজ, খেলাধুলা সবকিছুতেই সাফল্যের চাবিকাঠি হল সফল হওয়ার মানসিক চাপ।

নবজাতকের জন্য উপকারী: ধারণা রয়েছে, গর্ভাবস্থায় দুশিন্তা নবজাতকের উপর কুপ্রভাব ফেলে। দুশ্চিন্তা অতিরিক্ত এবং প্রতিমুহূর্তে চলতে থাকলে এমনটাই হয়। তবে মাত্রা কম হলে সেটা নবজাতকের জন্য উপকারী হতে পারে।

এক গবেষণায় দেখা যায়, গর্ভাবস্থায় অল্প বা সহনীয় পর্যায়ের দুশ্চিন্তাগ্রস্ত মায়ের সন্তানের অঙ্গসঞ্চালন ও উন্নয়নমূলক দক্ষতার বিকাশ গর্ভাবস্থায় নিশ্চিন্তে থাকা মায়েদের সন্তানের তুলনায় বেশি হয়েছে। সন্তানের দুই বছর বয়সের মধ্যেই এই তফাত গবেষণায় ধরা পড়ে।

ছবি: রয়টার্স।