আমাদের স্বাস্থ্য বিশেষত, ফুসফুসের জন্য পরিবেশ দূষণ কতটা ভয়াবহ তা বলার অপেক্ষা রাখে না। আর পরিবেশের এই দুষণ প্রত্যেকের জন্যই ক্ষতিকর।
Published : 07 Feb 2017, 05:47 PM
ভারতীয় ভেষজ চিকিৎসা বিশেষজ্ঞদের পরামর্শ অনুযায়ি এই পরিস্থিতি থেকে বাঁচার উপায় জানিয়েছে স্বাস্থ্যবিষয়ক এক ওয়েবসাইট।
নিমপাতা: ভারতের কে.ই.এম হাসপাতালের ডা. নিতিন রাজন কোচার বলেন, “ভেষজ উপাদানের মাধ্যমে পরিবেশ দূষণের প্রভাবকে দূর করতে সক্ষম এই পাতা। নিমপাতা দিয়ে সিদ্ধ করা পানি ত্বক ও চুল পরিষ্কার করলে ত্বক ও ‘মিউকোসাল মেমব্রেন’ বা খাদ্যনালীর ভেতরে আর্দ্র ত্বকে জমে থাকা দূষিত উপাদানগুলো পরিষ্কার হয়। সপ্তাহে দুবার তিনচারটি নিমপাতা খেতে পারলে রক্ত এবং ‘লিম্ফ্যাটিক টিস্যু’ পরিষ্কার থাকবে।”
তুলসি: “দূষিত উপাদান শোষণ করার জন্য বাড়িতে তুলসি গাছ লাগানো উপকারী। পাশাপাশি চেষ্টা করতে হবে তুলসি পাতার রস পান করার। এতে শ্বাসযন্ত্র দূষিত উপাদানমুক্ত থাকে।”— বলেন ডা. কোচার।
হলুদ: প্রতিদিন খালি পেটে এক টেবিল মধু বা ঘি দিয়ে আধা চা-চামচ হলুদ মিশিয়ে খাওয়ার পরামর্শ দেন মুম্বাইয়ের সাইফি হাসপাতালের আয়ুর্বেদিক পরামর্শক ডা. লিপ্সা শাহ।
ঘি: প্রতিদিন দুতিন চা-চামচ ঘরে তৈরি ঘি খাওয়ার উপদেশ দেন ডা. কোচার। এতে সীসা, পারদ ইত্যাদি ধাতুর বিষাক্ত প্রভাব দূরে থাকবে। পাশাপাশি ধাতুগুলো হাড়, বৃক্ক এবং যকৃতে পৌঁছাবে না।
ত্রিফলা: পরিবেশ দূষণের কারণে শরীরের ‘ত্রিদশা’য়ের ভারসাম্য নষ্ট হয়। আর ত্রিফলা এই ভারসাম্য ধরে রাখতে সহায়ক। ফলে শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি পায়।
এক চা-চামচ ত্রিফলার সঙ্গে এক চা-চামচ মধু মিশিয়ে খাওয়ার পরামর্শ দেন ভারতের আরেক ভেষজ চিকিৎসক রোজমি চৌবে।
বেদানার রস: রক্ত পরিষ্কার রাখতে অত্যন্ত কার্যকর। পাশাপাশি হৃদরোগ প্রতিরোধের ক্ষেত্রেও উপকারী রক্ষাকবচ বেদানা।
তেল মালিশ: ভেদিকগ্রাম হাসপাতালের ডা. পিয়ুস জুনেলা বলেন, “প্রতিদিন কুসুম গরম তেল দিয়ে পুরো শরীর মালিশ করা শরীর ও মন উভয়কেই চাঙ্গা করে তোলে।”
ভাপ: ৫-১০ ফোঁটা ইউক্যালিপটাস তেল বা এক ফোঁটা পেপারমিন্ট তেল মিশ্রিত ভাপ বা বাষ্প নেওয়ার ‘হোলিস্টিক হিলিং’ বিশেষজ্ঞ লুক কাতিনহো পরামর্শ দেন। দুই দিনে একবার পাঁচ মিনিট ধরে এই ভাপ নিতে হবে।
ধুপ: অ্যালার্জি থেকে ঠাণ্ডা ও শ্বাসকষ্ট দূরে রাখতে ধুপের ধোঁয়া বেশ কার্যকর। এছাড়া ঘরের স্যাঁতস্যাঁতে ভাবও দূর করে।
ঘরে তৈরি খাবার: রেস্তোরাঁর পরিবর্তে ঘরে তৈরি খাবারের প্রতি বেশি জোর দিতে হবে। খাবারে হলুদ ও মরিচের গুঁড়া, জিরা, রসুন ইত্যাদি যোগ করতে হবে পরিমাণ মতো। প্রতিদিনের চায়ে যোগ করতে পারেন হালকা মরিচ অথবা পুদিনাপাতা।
গভীর শ্বাস-প্রশ্বাস: প্রতিদিন গভীর শ্বাস-প্রশ্বাস নিতে হয় এমন যোগ ব্যয়াম করার অভ্যাস করার পরামর্শ দেন ডা. লুক।
তিনি বলেন, “নাক দিয়ে গভীর শ্বাস নিয়ে কয়েক সেকেন্ড ধরে রাখতে হবে। পরে মুখ দিয়ে শব্দ করে শ্বাস ছাড়তে হবে। দাড়ানো অবস্থায় দিনে ৫-১০ বার এমনটা করতে হবে।”