চুলকানির কারণ ও প্রতিকার

মলদ্বারে চুলকানি একটি সাধারণ ঘটনা। তবে কখনও কখনও এটি অত্যন্ত অস্বস্তিকর ও বিব্রতকর হয়ে ওঠে।

লাইফস্টাইল ডেস্কবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 15 Dec 2016, 09:16 AM
Updated : 15 Dec 2016, 09:16 AM

এই বিষয়ে বিস্তারিত জানাচ্ছেন সার্জারি বিশেষজ্ঞ [এমবিবিএস (ডিএমসি), এফসিপিএস (সার্জারি) বিশেষ ট্রেইনিং বৃহদন্ত্র ও পায়ুপথ সার্জারি] ডা. মীর রাশেখ আলম অভি।

সাধারণত মলদ্বার ও এর আশপাশে চুলকানি হয়ে থাকে। নারীদের চেয়ে পুরুষরা বেশি আক্রান্ত হয়ে থাকেন এবং অধিকাংশ ক্ষেত্রেই এর কোনো কারণ খুঁজে পাওয়া যায়নি।

অপরিষ্কার থাকা এবং অতিরিক্ত মলদ্বার পরিষ্কার দুটোই মলদ্বারে চুলকানির তৈরি করতে পারে। কিছু কিছু সুগন্ধি সাবান, রঙিন-সুগন্ধি ও খসখসে টয়লেট পেপার ব্যবহারও চুলকানির অন্যতম কারণ হতে পারে।

যারা অতিরিক্ত ঘামান তাদের চুলকানি হওয়ার সম্ভাবনা বেশি।

ছোটদের ক্ষেত্রে কৃমি চুলকানির প্রধান কারণ। এক্ষেত্রে শিশু রাতে ঘুমের সময় মলদ্বার চুলকায়। বড়দেরও কৃমি হতে পারে। ব্যাকটেরিয়া ও ছত্রাকের সংক্রমণেও চুলকানি হয়।

সাধারণত মহিলারা তুলনামূলক বেশি ছত্রাকের আক্রমণের শিকার হন। যৌনবাহিত রোগও মলদ্বারে চুলকানির কারণ হতে পারে।

যে সমস্ত চর্ম রোগে শরীরে চুলকানি হয় (যেমন-অ্যালার্জি) সবগুলোই মলদ্বারে চুলকানি করতে পারে। সোরিয়াসিস এবং কন্ট্যাক্ট ডার্মাটাইটিস চুলকানির অন্যতম কারন।

কফি, চকলেট, বিয়ার, বাদাম, টমেটো, দুধ ও দুগ্ধজাত খাবার এবং মসলাদার খাবার থেকেও চুলকানি হয়। ওষুধের মধ্যে লেক্সেটিভ ও অ্যান্টিবায়োটিক মলদ্বারে চুলকানির কারণ হতে পারে।

সার্জিকাল রোগগুলোর মধ্যে সাধারণত এনাল ফিশার, পাইলস, ফিস্টুলা মলদ্বারে চুলকানি করে থাকে। এছাড়া আইবিএস, ডায়রিয়া এবং মল ধরে রাখার অক্ষমতাজনিত কারণেও চুলকানি হয়।

খুব অল্প ক্ষেত্রে হলেও মলদ্বারের ক্যান্সার চুলকানির কারণ। ডায়বেটিস কখনও কখনও চুলকানির কারণ হতে পারে।

চুলকানির সঙ্গে মলদ্বারে ভেজা ভেজা ভাব, জ্বালাপোড়া ও মলদ্বার লাল হয়ে যেতে পারে। অধিকাংশ চুলকানির জন্য চিকিৎসার প্রয়োজন হয় না। সাধারণত ঘরেই কিছু নিয়ম মেনে চুলকানি থেকে রেহাই পাওয়া যায়। যেমন-

• অ্যালার্জি হয় এমন খাদ্য এড়িয়ে চলা।

• মলত্যাগ ও অতিরিক্ত ঘামের পর মলদ্বার ধুয়ে-মুছে পরিষ্কার ও শুষ্ক রাখা।

• সুতি কাপড়ের ঢিলাঢালা অন্তর্বাস ব্যবহার করা।

• রঙিন, সুগন্ধিযুক্ত ও খসখসে টয়লেট পেপার ব্যবহার না করা।

• সুগন্ধি সাবান ব্যবহার না করা।

তবে চিকিৎসকের কাছে যাওয়া প্রয়োজন এমন উপসর্গগুলো হল-

• তীব্র ও সবসময় চুলকানি হওয়া।

• যদি চুলকানির সঙ্গে রক্ত যায়।

• সংক্রমণ (ইনফেকশন) ঘটলে।

• মলদ্বারে চাকা থাকলে।

এসব উপসর্গ থাকলে দ্রুত চিকিৎসকের শরণাপন্ন হয়ে চুলকানির কারণ অনুযায়ী চিকিৎসা নেওয়া উচিত।

চিকিৎসকের যথাযথ পরামর্শ এবং নিজের যত্ন নিয়ে বেশিরভাগ রোগী মলদ্বারের চুলকানি থেকে সম্পূর্ণ মুক্তি পেতে পারেন।

ছবি: রয়টার্স।