এই আমাদের সোনার চর

বনবিভাগের পটুয়াখালি রেঞ্জের আওতায় গড়ে ওঠা সোনার চর পটুয়াখালি বা গলাচিপা হয়ে যেতে হয়। রয়েছে অর্ধচন্দ্রাকৃতির সৈকত। শীতের সময় দেখা যায় নানান পরিযায়ী পাখি।

লাইফস্টাইল ডেস্কবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 14 Dec 2016, 06:27 AM
Updated : 14 Dec 2016, 06:27 AM

এই চর ঘুরে এসে বিস্তারিত জানাচ্ছেন পরিব্রাজক ও চিত্রগ্রাহক ফারুখ আহমেদ।

শীতের এক দুপুর। আমরা তিনজন অর্ধাচন্দ্রাকৃতির এক সমুদ্র সৈকতে দাঁড়িয়ে। গোসলকরার জন্য আদর্শ জায়গা বটে। তবে আমরা গোসলের কথা ভাবছি না। ভাবনার জগত জুড়ে পুরোটাই দখল করে আছে সমুদ্র সৈকত ও তার চারপাশের পরিবেশ।

সমুদ্র সৈকতের পেছনে ঝাউগাছের সারি তাকে আরও বেশি অসাধারণত্ব দান করেছে। মানুষজনের চেয়ে বেশি চোখে পড়ছে ঢেউয়ের উথালি-পাথালি ও অসংখ্য মাছ ধরার নৌকা।

আরও একটু দুরে দৃষ্টি প্রসারিত করে দেখতে পেলাম ছোট্ট একটি গ্রাম। এটা জেলে পল্লী, তবে স্থায়ী নয়। জেলেদের অস্থায়ী আবাস। সুন্দরবনের দুবলার চরের মতোই শীত মৌসুমে এখানে ছয় মাসের জন্য আবাস গড়ে ওঠে।

এমন জন-মানবহীন সমুদ্র সৈকত আর আশপাশের পরিবেশ দেখে ভেবে বসেছিলাম দ্বীপটির মালিক আমরা তিনজন। বলতে ভুলে গেছি, আমরা তিনজন হচ্ছি- আমি, চিকিৎসক নাজমূল হক ও বন্ধু শরীফ নীড়।

ছোট্ট একটি ট্রলার চেপে প্রথমে তেঁতুলিয়া নদী, তারপর বুড়াগৌরাঙ্গ এবং শেষে বঙ্গপোসাগর পাড়ি দিয়ে একটু আগে এখানে পা রেখেছি।

চার ঘণ্টার ট্রলার ভ্রমণ পুরোটাই ছিল নিখাদ আনন্দে ভরপুর। কত যে পাখি দেখলাম। নাজমূল হক স্যার দীর্ঘদিন পাখির ছবি তুলে বেড়ালেও এখানে এসে এক সময় তার মুখ থেকে বের হল, জীবনে একসঙ্গে এত পাখি এই প্রথম দেখলাম।

আর সেই পাখির চোখে চোখ রেখে রেখে তিনজনের দল চলে এলাম যেখানে তার নাম সোনার চর।

গত বছরের গ্রীষ্মে চর কুকরি-মুকরি এসে খুব তাড়াহুড়া করে ফিরে যাওয়াতে আশপাশের কিছুই সেভাবে দেখা হয়নি। তবে প্রতিজ্ঞা ছিল শীত মৌসুমে পুরো দক্ষিণাঞ্চল ঘুরে দেখব। অথচ শীত যাই যাই করে এক সময় চলেও গেল, আমাদের সময় আর হল না। যখন সময় হল তখন সবে বসন্ত মৌসুম শুরু হয়েছে। সেই শুরুর শুক্র-শনির বন্ধ মিলিয়ে রক্তে রাঙানো একুশে ফেব্রুয়ারির বন্ধে কাঙ্ক্ষিত দক্ষিণাঞ্চল ঘুরে দেখার পরিকল্পনা করলাম।

ছয় জনের দল শেষে গিয়ে ঠেকল তিনজনে। আমরা ঢাকা থেকে লঞ্চে চেপে চর ফ্যাশন ও চর কচ্ছপিয়া হয়ে স্পিডবোটে চেপে চলে আসি চর কুকরি-মুকরি। সেদিন চর কুকরি-মুকরির নারিকেল বন ও তারুয়ার দ্বীপ ঘুরে দেখি। পরদিন ভোরে বের হই সোনার চরের উদ্দেশ্যে।

আমাদের গাইড হয়ে যাবেন শিক্ষক জাকির হোসেন। তিনি আমাদের গাইড হলেও পরে তাকেই আমাদের গাইড করতে হয়েছিল। যাহোক, আমরা সাতসকালে ইলিশ ভাজা আর লালচালের গরম ভাত খেয়ে রওনা হই। ট্রলার দেখে পছন্দ না হলেও চড়ে বসতে কারও আপত্তি দেখলাম না। একটু সমস্যা মনে হল ট্রলারের গতিকে, একেবারে কচ্ছপ গতিতে সে এগিয়ে চলছিল। বিষয়টা পছন্দ না হলেও কিছুই করার ছিল না।

কুকরির খাল পার হয়ে মেঘনার মোহনায় পড়তেই ম্যানগ্রোভ বনের পাশের ছোট্ট চর দীঘলে মহিষের পাল ও বকপাখির সঙ্গে অনেক নাম না জানা পাখি ও ঝাঁকে ঝাঁকে কাস্তেচেরা দেখে মনটা আনন্দে নেচে উঠতেই বোঝা হয়ে গেল দিনটা ‘আমাদের’!

চর দীঘল পেরিয়ে আরও সামনে যেতেই নিজেদের সাত সাগরের এপার মনে হল।

চারিদিকে অথৈ জল আর মাছ ধরার ফাঁদ ছাড়া কিছুই চোখে পড়ছিল না। মাঝে মধ্যে একদুইটা ইলিশের নাও চলে যাচ্ছিল প্রচণ্ড শব্দ করে। পাশাপাশি চলছিল মুড়ি, চানাচুর, পেঁয়াজ ও বিস্কিট দিয়ে নাস্তা খাওয়া- এভাবেই আমরা এগিয়ে চললাম।

এরমধ্যে গড়গড় আওয়াজ আর কাশির মতো শব্দ করে ট্রলার দাঁড়িয়ে পড়ল।

তখনই চোখে পড়ল সামনেই একঝাঁক সাদা রঙা পাখির ঝলক। সূর্যের আলোতে সে পাখির ঝিলিক দেখে আমাদের চোখও চকচক করে উঠল। নাজমূল স্যার ইশারায় ট্রলারের গতি কমিয়ে ধীরে এগিয়ে যেতে বললেন। তারপর শুনলাম তার বিড়বিড় উচ্চারণ ‘পাতিচখা’।

এরমধ্যে ট্রলার চালক ট্রলারের ইঞ্জিন বন্ধ করে বৈঠা হাতে নিয়ে ধীরে তার নৌকা এগিয়ে নিচ্ছিলেন পাতিচখার দিকে। শরীফ আর নাজমূল স্যার ততক্ষণ সমানে ক্যামেরা ক্লিক করে চলছিলেন। তারপর হঠাৎ কোন সে আয়াজে পাতিচখা দলের আকাশপানে উড়াল। সে দৃশ্যে মুগ্ধতা ছড়ানো ছাড়া আর কিছুই ছিল না।

পাতিচখার চলে যাওয়ার জন্য আক্ষেপ না করে আমরা সেই উড়ে চলা দুচোখ ভরে দেখে চললাম। এরমধ্যে ট্রলারের ইঞ্জিন চালু হয়েছে, ট্রলারে গতি পেয়েছে। আমাদের উদ্দিপনা আরও বেড়ে গেল। চোখ যেন আর সরে না। আহা যদি পাখি দেখা মিস হয়ে যায়! মেঘনা নদী পেরোনো শেষ হয়ে এখন আমরা চলছি বঙ্গপোসাগরের বুকের ওপর। এবার সৌন্দর্য অন্য রকম। ঢেউ এর পর ঢেউ এগিয়ে আসা এক কথায় অপূর্ব। এভাবে কতক্ষণ চলেছি মনে নেই। দুচোখে সবুজ ভর করতেই বুঝলাম আমরা সোনার চরের খুব কাছে চলে এসেছি।

এভাবেই এক সময় আমাদের ট্রলার আস্তে আস্তে থিতু হল। কিছুক্ষণের মধ্যে পাশের খাল ধরে চলে এলাম সোনার চরের সান বাঁধানো ঘাটে। এবার আমরা ব্যাকপ্যাকসহ নেমে এলাম।

সোনার চরে আমাদের প্রথম মুগ্ধতা ছিল ঝুনঝুনির ফুল আর ঝাউগাছ। আরও চোখে পড়ল উপকূলীয় অঞ্চলের গাছ হরগোজা ও বাবলা। এখানে পুরোটাই ইটের আঁকাবাঁকা রাস্তা। সেই পথ ধরে আর সবুজে চোখ জুড়িয়ে ঠিক ১০ মিনিটে চলে আসি সমুদ্র সৈকতে।

বালির ছোট ছোট বলে মোড়ানো সে সৈকত এক দেখাতেই আমাদের মুগ্ধ করল। আরেক মুগ্ধতা ছিল কাকড়া দলের অসাধারণ শিল্পকর্ম। সে সব শিল্পিত শোভা দুচোখ ভরে দেখছিলাম আর ক্যামেরা বন্দি করছিলাম।

এরমধ্যে অনেক পাখির দেখাও পেয়েছি। যার মধ্যে উল্লেখযোগ্য হল চখাচখি, লালপা বা রেডস্যাঙ্ক, হলদে খঞ্জন, কমন স্নাইপ, বড় বুলিন্দা ও কাস্তেচেরা উল্লেখযোগ্য। আর বক দেখেছি অগুনিত। এভাবেই আমরা পায়ে পায়ে চলে আসি জেলে পল্লিতে।

এখানে এখন অনেকটা অলস জীবন-যাপন। সকালের মাছ ধরা এক পর্যায়ে শেষ হয়েছে। আরেকবার জেলেরা বের হবে বিকাল বেলা। চলছে মাছ শুকিয়ে শুটকি বানানোর কাজ। এসব শুটকির বেশিরভাগই মুরগির খাদ্য হিসেবে ব্যবহার হয়ে থাকে।

আমরা জেলেদের সঙ্গে তাদের জীবন-যাপন নিয়ে কথা বলি। এখানেই দেখা পাই একদল শিশুর। প্রত্যেকের হাতে দা দেখে শরীফের মনে ভয় ধরে গিয়েছিল দেখে নাজমূল স্যার এগিয়ে জানতে চান বাবারা তোমরা দা হাতে কই যাও। কথায় কথায় যা জানা হল তা হচ্ছে এরা পাশের চর থেকে এখানে এসছে লাকড়ির সন্ধানে। মড়া গাছ পেলে কেটে নিয়ে যায়। প্রায়দিন তারা কোষা নাও নিয়ে বের হয় লাকড়ি সন্ধানে। সোনার চরে যেহেতু প্রচুর গাছ সুতরাং ভরসা তাদের সব সময় সোনার চর। ঘটনা শুনে শরীফের মন খারাপ হয়। কারণ এখন তারা মরা ডাল কেটে লাকড়ি সংগ্রহ করছে, এভাবে একদিন না আবার গাছ কেটে সবুজ বিনষ্ট করে!

আমরা প্রায় দেড় ঘণ্টা সোনার চর সমুদ্র সৈকত ও জেলে পল্লিতে ছিলাম। সোনার চর সমুদ্র সৈকতের সোনালি বালিতে কিলবিল করা ছোট্ট কাকড়ার দলে দারুণ মুগ্ধতা ছড়ান। সমুদ্র সৈকতের কথা শুরুতেই বলেছি। বাঁকানো সৈকতটিকে দেখতে একবারে অর্ধচন্দ্রাকৃতির। জায়গায় জায়গায় শেওলা পড়া দেখে বোঝাই যায় কালেভদ্রে এখানে লোকজন আসেন। এমন অসাধারণ সৌন্দর্যে আমরা আরও সঙ্গীসাথির প্রয়োজন বোধ করি। কি আর করা, যেহেতু রাত কাটাবো না সেহেতু বেলা থাকতেই চর কুকরিতে ফেরার প্রস্তুতি হিসেবে ঝাউবনের ভেতর হাঁটা শুরু করি।

ঝাউবন পেরিয়ে পেয়ে যাই কেওড়া বন। দেখতে পাই এই ম্যানগ্রোভ বনে সামাজিক বনায়নের চিহ্ন। আমরা আরও কিছুটা হেঁটে পেয়ে যাই বনবিভাগের বাংলো। এবার রাত কাটানোর ইচ্ছা প্রবল হয়। একটা তাবুর প্রয়োজনীয়তা প্রবল ভাবে অনুভব করি। তবে তিনজন মিলে প্রয়োজনীয় রসদ বিহীন সোনার চর থাকার ইচ্ছেতে গুড়েবালি ছিটায়। আমরা চলে আসি আমাদের নির্দিষ্ট ঘাটে যেখানে নোঙর করা আছে আমাদের বাহন ছোট্ট ট্রলারটি!

আরও একটু

বন বিভাগের আওতাধিন সোনার চর হচ্ছে বন্য-প্রাণীর অভয়ারণ্য। সুন্দরেরবনের পর চর কুকরিমুকরি ও সোনার চরকেই ধরা হয় দ্বিতীয় বৃহত্তম ম্যানগ্রোভ সুন্দরবন। সোনা চরের মূল সৌন্দর্য এখানকার ঝাউবন। এছাড়া এই বনে রয়েছে প্রচুর কেওড়া ও ছৈলাসহ গোলপাতা, বাবলা, করমচা, নলখাগড়া ও জাম গাছ।

শীত মৌসুমে এখানে প্রচুর পরিযায়ী পাখি আসে, সে অর্থে সোনার চর প্রচুর দেশি-বিদেশি পাখির বিচরন ক্ষেত্র। হরিণ থেকে শুরু করে গেছো বাঘ, বন বিড়াল, বন মুরগি ও বানরসহ অনেক প্রাণী রয়েছে এই বনে।

শোনা কথা সকাল ও বিকালে হরিণ চলে আসে সোনার চর সমুদ্র সৈকতে। প্রতিবছর ছয় মাসের জন্য সোনার চর মৎসজীবিদের আবাসস্থল হয়ে ওঠে। তবে দূর্গম এলাকা ও থাকার ব্যবস্থা না গড়ে ওঠায় সেভাবে এখানে পর্যটক খুব বেশি আসে না।

বনবিভাগের পটুয়াখালি রেঞ্জের আওতায় গড়ে ওঠা সোনার চর পটুয়াখালি বা গলাচিপা হয়ে যেতে সময় লাগে প্রায় আট ঘণ্টার ওপর। সেখানে চর কুকরি থেকে সোনার যেতে সময় লাগে ভালো একটি ট্রলারে সর্বোচ্চ দুই ঘন্টা। সে অর্থে সোনার চর কেনো পটুয়াখালি রেঞ্জে তা কেবল সরকারের নীতি নির্ধারকরাই বলতে পারবেন।

ভাবতে ভাবতে ট্রলার ছেড়ে যেই আমরা কুকরি-মুকরি অভিমূখে ছুটতে যাব তখনই পাশের চরে দেখা মেলে ধলাবুক এক ঈগলের। ততক্ষণে ভাটা পড়ে চর জেগেছে আমাদেরও যাওয়া বন্ধ হয়েছে। এবার আমাদের ফিরতে হবে অনেকটা পথ ঘুরে, চর মন্তাজ হয়ে।

প্রয়োজনীয় তথ্য

সোনার চরকে বলা হয় ম্যানগ্রোভ বন। এই চর বঙ্গপোসাগরে স্থায়ী হয়ে গেছে। নির্দিষ্ট কোনো আবাস এখানে গড়ে না উঠলেও প্রতি বছর ছয় মাসের জন্য মৎসচাষী বা জলদাসরা এখানে অস্থায়ী আবাস গড়ে জীবিকা নির্বাহ করে থাকে।

আমি মনে করি সোনার চর যেভাবে আছে সেভাবে থাকুক। অযথা প্রকৃতি বিনষ্ট করে এখানে আবাস গড়ার কাজ শুরু করলে চমৎকার এই চর ধ্বংস ডেকে আনা ছাড়া আমরা আর কিছুই করতে পারবো না। তবে যেহেতু এখানে সারা বছরই পর্যটকদের আনাগোনা রয়েছে বিশেষ করে শীত মৌসুমে অনেকেই এখানে আসে সেহেতু নিরাপত্তাসহ এই চরে পর্যটক সুবিধা থাকলে পর্যটকরা সবুজ এই চরটির একদিকের বন ও অন্য দিকের নয়নাভিরাম সমুদ্র সৈকতের সৌন্দর্য ও সূর্যোদয় ও সূর্যাস্ত দেখে বলতে পারবে অদ্ভুতদর্শন- এক সঙ্গে সুন্দরবন এবং কুয়াকাটা বা সেন্টমার্টিন!

সারা বছরই সোনার চর যাওয়া যেতে পারলেও শীত মৌসুম সোনার চর যাওয়ার উপযুক্ত সময়। শীত ও বসন্তকালে গেলে পাখি ও বন্যপ্রাণীর দেখা পাওয়ার সম্ভাবনা প্রবল। সোনার চরের প্রাকৃতিক সৌন্দর্য সারাবছরই দেখা যেতে পারে।

কীভাবে যাবেন

সোনার চর পটুয়াখালি জেলার বিচ্ছিন্ন এক চরের নাম। পটুয়াখালির গলাচিপা থেকে সোনার চর যেতে পারবেন। আবার চর কুকরি-মুকরি বা চর কচ্ছপিয়া ফেরিঘাট থেকে সরাসরি সোনার চর যেতে পারবেন।

গলাচিপা থেকে সোনার চরের দূরত্ব প্রায় ১২০ কিলোমিটার। চর কুকরি-মুকরি বা চর কচ্ছপিয়া থেকে দূরত্ব প্রায় ৪০ থেকে ৬০ কিলোমিটারের মতো।

সুতরাং সোনার চর যেতে হলে চর কচ্ছপিয়া বা চর কুকরি-মুকরি থেকেই সহজ যাত্রা।

ঢাকার সদরঘাট থেকে সরাসরি গলাচিপা বা চর ফ্যাশন চলে যান। আমি গিয়েছিলাম ভোলা জেলার চর ফ্যাশনের চর কচ্ছপিয়া ঘাট থেকে ট্রলারে চেপে চর কুকরি-মুকরি। সেখানে একরাত থেকে চরের সৌন্দর্য উপভোগ করে পরের দিন ট্রলারে সোনার চর চলে যাই।

ট্রলার ভাড়া আসা যাওয়া মিলে সর্বোচ্চ ৪ হাজার টাকার মতো লাগতে পারে। সোনার চর দলবেঁধে যাওয়াই ভালো।

লঞ্চে ঢাকা থেকে চর ফ্যাশন (বেতুয়া ঘাট বা ঘোসের হাঁট) ডেকের ভাড়া ২শ’ টাকা। কেবিন ১ হাজার টাকা। চর ফ্যাশন থেকে চর কচ্ছপিয়া ফেরিঘাট যেতে হবে মোটর সাইকেল অথবা বোরাকে (ইজিবাইক) চেপে।

সময় বাঁচানোর জন্য মোটর সাইকেলে চেপেই চর কচ্ছপিয়া যাওয়া ভালো। সময় লাগবে ৪৫ মিনিট, ভাড়া জনপ্রতি ১শ’ টাকা।

এবার স্পিডবোট কিংবা ট্রলার রিজার্ভ নিয়ে নিন ১ হাজার থেকে ১ হাজার ৫শ’ টাকায়। অথবা লাইনের ট্রলারে চেপে চলে যান চর কুকরি-মুকরি। এখানে রাত কাটানোর জন্য সঙ্গে তাবু নেবেন।

এছাড়া উপজেলা পরিষদ ভবনে অনুমতি সাপেক্ষে থাকা যায়। এছাড়া রাত কাটানো যাবে বনবিভাগের অফিসার’স কোয়ার্টার ও স্থানীয় বাসিন্দাদের বাড়ি কিংবা খোলা মাঠে তাবু পেতে।

খাওয়া-দাওয়ার কোনো চিন্তা নেই। বাজারের হোটেলে অর্ডার দিলেই তাজা মাছের সঙ্গে দেশি মুরগি সহজেই পেয়ে যাবেন, দাম ও হাতের নাগালে।

সোনার চরে থাকার জন্য বন বিভাগের বাংলো ছাড়া ভরসা করা যায় খোলা প্রান্তর বা সমুদ্র সৈকতের কাছে তাবু পেতে। খাবার দাবারের ব্যবস্থা চর কুকরি-মুকরি থেকেই সঙ্গে নিয়ে যেতে হবে!

ছবি: ফারুক আহমেদ।