পিএমএস-থেকে মুক্তি পেতে

প্রি-মিন্সট্রুয়াল সিনড্রোম বা ‘পিএমএস’য়ে আক্রান্ত হলে মাসের বিশেষ দিনগুলোর আগে বা পরে মেয়েদের নানান রকম সমস্যা দেখা দেয়। এর থেকে রেহাই পাওয়া যায় খাদ্যাভ্যাস পরিবর্তন করে।

লাইফস্টাইল ডেস্কবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 12 Oct 2016, 08:22 AM
Updated : 12 Oct 2016, 08:22 AM

গত দুতিন দিন ধরে কি মেজাজটা একটু খিটখিটে হয়ে আছে! কারণে-অকারণে হঠাৎই মন খারাপ হয়ে যাচ্ছে? হুট করেই মেজাজ খারাপ হয়ে যাচ্ছে? মাসের বিশেষ সময় এগিয়ে আসলেই কি এমন পরিস্থিতিতে পড়তে হয়!

নারীস্বাস্থ্যবিষয়ক একটি ওয়েবসাইটের তথ্যানুসারে, ওপরের প্রশ্নগুলোর বেশির ভাগের উত্তরই যদি ‘হ্যাঁ’ হয়, তাহলে আপনি প্রি-মিন্সট্রুয়াল সিনড্রোমে আক্রান্ত, সংক্ষেপে যাকে বলে ‘পিএমএস’।

অনেক নারীরই বিশেষ সময়ের আগে মন-মেজাজের তারতম্যের পাশাপাশি পেটব্যথা, মাথাব্যথা কিংবা হাতপায়ের জ্বলুনি-এসব সমস্যাও দেখা যায়। এ ধরনের শারীরিক অস্বস্তি বা মানসিক অস্থিরতা আসলে ঘটে থাকে হরমোনের তারতম্যের কারণে।

পিরিয়ড শেষে ১৫ থেকে ১৬ দিনের পরেই যে হরমোনগুলোর পরিমাণ শরীরে বাড়তে শুরু করে, সেগুলোই মূলত পিএমএসের জন্য দায়ী। সাধারণত পিরিয়ডের ১৯ দিনের পর যে কোনো সময়ই দেখা দিতে পারে পিএমএসের লক্ষণ। তবে একেক মেয়ের ক্ষেত্রে পিএমএসের এই লক্ষণ হানা দিতে পারে ১৯ দিনের পর যে কোনো সময়ই।

এ সমস্যা নির্মূল করা না গেলেও খাদ্যাভ্যাসে কিছুটা পরিবর্তন এবং কিছু খাবার যুক্ত করা গেলে পিএমএস’য়ের প্রকোপ থেকে কিছুটা রেহাই পাওয়া যেতে পারে।

এমনই কিছু খাবারের নাম উল্লেখ করা হয় স্বাস্থ্যবিষয়ক একটি ওয়েবসাইটের প্রতিবেদনে।

মৌরি: অনেকের পিরিওড শুরুর আগে পেট ব্যথা এবং অন্যান্য সমস্যা হয়ে থাকে। মৌরি ব্যথা উপশমের পাশাপাশি নারী শরীরের হরমোনের মাত্রার সামঞ্জস্য বজায় রাখতে বেশ উপযোগী। তাছাড়া পেট ফাঁপাভাব দূর করতে ও শরীরে পানির পরিমাণ কমাতেও সহায়তা করে মৌরি।

গরম পানিতে এক চা-চামচ মৌরি ফুটিয়ে নিতে হবে। ১০ থেকে ১৫ মিনিট ফুটানোর পর এক কাপ পরিমাণ পানি ছেঁকে পান করতে হবে। প্রতিদিন এই পানি পানে বিভিন্ন প্রিমেনস্ট্রুয়াল সিনড্রোম হ্রাস পাবে।

দারুচিনি: দারুচিনিতে আছে অ্যান্টি-ইনফ্লামাটরি এবং অ্যান্টিপেসমোডিক উপাদান যা ব্যথা উপশমে সাহায্য করে। তাছাড়া এই মসলায় আছে ক্যালসিয়াম, ম্যাগনেসিয়াম, আয়রন ইত্যাদি খনিজ উপাদান যা নারী স্বাস্থ্যের জন্য উপকারী। রক্তে শর্করা নিয়ন্ত্রণেও সাহায্য করে দারুচিনি।

খানিকটা দুধের সঙ্গে এক চা-চামচ দারুচিনি এবং খানিকটা মধু মিশিয়ে হালকা গরম করতে হবে। পিরিয়ড শুরুর এক সপ্তাহ আগে থেকে প্রতিদিন এই পানীয় নিয়মিত পান করলে উপকার পাওয়া যাবে।

অ্যাপেল সাইডার ভিনিগার: পেট ফাঁপা, শরীরে পানি জমা, পেট ব্যথা, মাথা ব্যথা, জ্বলুনি, অস্বস্তি ইত্যাদি নানান ধরনের সমস্যা সমাধানে অ্যাপেল সাইডার ভিনিগার বেশ উপকারী।

অপরিশোধিত অ্যাপেল সাইডার ভিনিগার এক গ্লাস পানিতে মিশিয়ে প্রতিদিন এক বার বা দুবার পান করলে উপকার পাওয়া যাবে।

তিসির দানা: এতে আছে ওমেগা থ্রি ফ্যাটি অ্যাসিড যা পিএমএস’য়ের বিভিন্ন লক্ষণ যেমন- মানসিক চাপ, হতাশা, পেট ফাঁপা, স্তনে ব্যথা হওয়া, মাথা ব্যথা ইত্যাদি উপশমে সহায়তা করে। এতে আছে লিগান নামক উপাদান যা অতিরিক্ত ইস্ট্রোজেন নিঃসরণের মাত্রা কমিয়ে হরমোনের সামঞ্জস্যতা বজায় রাখে।

ওটস, সিরিয়াল, স্মুদি, সালাদ বা তরকারির সঙ্গে রান্না করে এক টেবিল-চামচ তিসির দানাগুঁড়া খেলে উপকার পাওয়া যায়।

ছবি: রয়টার্স।