৫টি বিভ্রান্তিকর প্রচলিত অভ্যাস

বেশি করে পানি খাওয়া উচিত কিংবা খাওয়ার পর দাঁত মাজা- এই ধরনের প্রচলিত ‘স্বাস্থ্যকর’ বিষয়গুলো অনেক সময় সঠিক নয়।

লাইফস্টাইল ডেস্কবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 22 August 2016, 10:53 AM
Updated : 22 August 2016, 10:54 AM

স্বাস্থ্যবিষয়ক একটি ওয়েবসাইটে জানানো হয় এরকমই পাঁচটি বিভ্রান্তিকর অভ্যাস যা স্বাস্থকর হিসেবে প্রচলিত।

ঠাণ্ডা ও জ্বরে যা করতে হবে: এই সময় বেশি করে পানি পান ও খাবার খেতে হবে। আর দেহের তাপমাত্রা বৃদ্ধির কারণে শরীর আর্দ্র রাখতে জ্বরের সময় বেশি পানি পান করা উচিত। কারণ এতে শরীর সতেজ থাকে। শরীরের তাপমাত্রা এক থেকে দুই ডিগ্রি বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে প্রতিরোধ ক্ষমতাও কার্যকর হয়ে ওঠে। তাই এই অবস্থায় ওষুধ খাওয়া অর্থ শরীরের ভালোর চেয়ে ক্ষতি বেশি করা। এ কারণে জ্বর হলে প্রাথমিক অবস্থাতেই ওষুধ খাওয়া ঠিক নয়।

তবে তিন দিনের বেশি জ্বর থাকলে এবং ১০৩ ডিগ্রির বেশি জ্বর হলে চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী ওষুধ নিতে হবে।

ক্ষত স্থানে ব্যান্ডেজ করা কি ঠিক!: অনেকেই ক্ষত স্থানে ব্যান্ডেজ করা ঠিক হবে কি হবে না তা নিয়ে দোটানায় থাকেন। ক্ষত স্থানে অবশ্যই ব্যান্ডেজ করা উচিত তবে তা সঠিক নিয়ম মেনে। কেবলমাত্র ক্ষতস্থান পানি দিয়ে ধুয়ে ব্যান্ডেজ করাই শেষ কথা নয়।

তাছাড়া অনেকেই ক্ষত পরিষ্কারের জন্য হাইড্রোজেন পারঅক্সাইড ব্যবহার করেন, ভাবেন জ্বলুনির অর্থ রোগ জীবাণু দূর করছে ওই মিশ্রণ। তবে ব্যাক্টেরিয়ার দমনে এই ধরনের অ্যান্টিসেপটিক আসলেও অতটা কার্যকর নয়। তাছাড়া ক্ষত বেশি শুষ্ক থাকলে শুকানার পরও ক্ষতের দাগ থেকে যেতে পারে। তাছাড়া ক্ষত শুকাতেও সময় নেয় বেশি।

এক্ষেত্রে পরিষ্কার হাতের সাহায্যে ক্ষতস্থান ভালো মতো ধুয়ে পরিষ্কার করে নিতে হবে। পানি শুকিয়ে গেলে তাতে পেট্রোলিয়াম জেলি লাগিয়ে ব্যান্ডেজ করতে হবে।

ব্যাক পেইন কমানোর উপযোগী উপায়: গবেষণায় দেখা গেছে, ব্যথা কমানোর ওষুধ খেয়ে অথবা গরম স্যাঁক দিয়ে তাৎক্ষণিকভাবে ব্যথা কমানো গেলেও তা দীর্ঘস্থায়ী কোনো প্রতিকার নয়। বরং গরম ভাপের বদলে বরফ চেপে ধরলে দীর্ঘক্ষণ আরাম পাওয়া যায়।

অনেকে পিঠের ব্যথা হলে নড়াচড়া করতে ভয় পান। তবে অনেকেরই জানা নেই পিঠে ব্যথা কমানোর জন্য সব চেয়ে ভালো উপায় হল হালকা নড়াচড়া, ব্যায়াম বা হাঁটাচলা করা। তবে খেয়াল রাখতে হবে এটি যেন অতিরিক্ত না হয়। কয়েকদিন হালকা চলাফেরা করার পর পরের সপ্তাহগুলোতে আবার ধীরে সুস্থে কাজের গতি বাড়ানো যেতে পারে।

অতিরিক্ত পানি পান করা কি ঠিক!: প্রতিদিন আট গ্লাস পানি পান করা প্রয়োজন, এমনটাই প্রচলিত। তবে চিকিৎসকের মতে, কাজের ধরণ, বয়স ও আবহাওয়া ভেদে এর পরিমাণে তারতম্য হতে পারে। পানি পানের পরিমাণ ঠিক আছে কিনা তা যাচাইয়ের জন্য দৈনিক কতবার বাথরুমে যাওয়ার প্রয়োজন হচ্ছে তা পরীক্ষা করলেই বোঝা যাবে। সাধারণত পাঁচবার বাথরুমে যাওয়া স্বাভাবিক। এর বেশি বাথরুমের চাপ আসলে পানি পানের পরিমাণ কমিয়ে আনতে হবে।

প্রতিবার খাওয়ার পর দাঁত মাজা উচিত! ২০১০ সালের আমেরিকান ডেন্টাল অ্যাসোসিয়েশন এর এক গবেষণায় দেখা যায় শতকরা ৩০ ভাগ মানুষ সকালে ও রাতে দাঁত মাজার ক্ষেত্রে আলসেমী করে থাকে এবং ৭০ ভাগ মানুষ সঠিকভাবে এই কাজ করে থাকে। 

দন্ত চিকিৎসকদের মতে প্রতিবার খাওয়ার পর কুলকুচি করা উচিত এতে করে দাঁতের কোনে খাবার জমে থাকে না। দাঁত ব্রাশ করার সময় মুখের ভিতরকে চার ভাগে ভাগ করে প্রতি ভাগে ৩০ সেকেন্ড সময় নিয়ে দাঁত মাজা উচিত। প্রতিবার খাওয়ার পর দাঁত মাজলে অথবা বেশি সময় নিয়ে দাঁত মাজলে দাঁতের এনামেল ক্ষতিগ্রস্থ হতে পারে এতে করে দাঁত দুর্বল হয়ে পরে পাশাপাশি দাঁতের মাড়ি ও মুখগহব্বরের ক্ষতি হতে পারে।

তাই দাঁত মাজা জরুরি হলেও প্রয়োজনের অতিরিক্ত মোটেও ভালো নয়। এতে উপকারের তুলনায় ক্ষতির ঝুঁকিই বেশি থাকবে।