পাথর গলাতে টক ফল

লেবুজাতীয় ফল কিডনি বা বৃক্কের পাথর তৈরি হওয়া ঠেকাতে পারে, এমনকি গলিয়েও দিতে পারে- এমনটাই প্রমাণ পেয়েছেন গবেষকরা।

লাইফস্টাইল ডেস্কবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 11 August 2016, 10:00 AM
Updated : 11 August 2016, 08:11 PM

গবেষণায় বলা হয়, “মানুষের বৃক্কে হওয়া পাথরের একটি উপাদান হল ক্যালসিয়াম অক্সালেট ক্রিস্টাল্স। লেবুজাতীয় ফলে থাকা হাইড্রক্সিসাইট্রেট (এইচসিএ) উপাদান ক্যালসিয়াম অক্সালেট ক্রিস্টালস গলিয়ে দিতে সক্ষম।” এই গবেষণার উপর ভিত্তি করে যন্ত্রণাদায়ক এই সমস্যার ওষুধ তৈরি প্রাথমিক কাজও শুরু হয়েছে।

অনলাইনভিত্তিক জার্নাল ‘নেচার’য়ে প্রকাশিত এ গবেষণার গবেষকরা বলেন, “বৃক্কে পাথরের চিকিৎসায় আশার আলো দেখিয়েছে এইচসিএ উপাদানটি।”

গবেষণার প্রধান গবেষক, যুক্তরাষ্ট্রের ইউনিভার্সিটি অফ হিউস্টোনের সহযোগী অধ্যাপক জেফরি রাইমার বলেন, “এটি কয়েকটি পরীক্ষাভিত্তিক, গণনাভিত্তিক এবং মানুষভিত্তিক গবেষণার সমন্নীত ফলাফল।”

বৃক্কের ভিতর খনিজ পদার্থ জমে ছোট্ট, শক্ত পাথর তৈরি হয়। উচ্চ রক্তচাপ, ডায়াবেটিস, স্থূলতা ইত্যাদি বৃক্কে পাথর হওয়ার ঝুঁকি বাড়ায় এবং প্রাপ্ত তথ্যানুসারে এর প্রকোপ ক্রমেই বাড়ছে।

তিন দশক ধরে এই রোগের প্রতিষেধকে খুব একটা পরিবর্তন আসেনি। সম্ভাব্য রোগীদের ডাক্তাররা প্রচুর পানি পান করার পরামর্শ দেন। পাশাপাশি প্রচুর ‘অক্সালেট’ আছে এমন খাবার যেমন ঢেড়শ, পালংশাক, কাজুবাদাম ইত্যাদি পরিমাণে কম খাওয়ারও নির্দেশ দেন চিকিৎসকরা।

এক্ষেত্রে চিকিৎসকরা প্রায়ই ‘সিট্রেইট’ নেওয়ার পরামর্শ দেন। যেমন পটাশিয়াম সিট্রেইট। এই সাপ্লিমেন্ট পাথরের বৃদ্ধি কমায়, তবে কিছু রোগী এর পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া সহ্য করতে পারেন না।

গবেষকরা বলেন, “এইচসিএ’য়ের চিকিৎসা পটাশিয়াম সিট্রেইট (সিএ) তুলনায় উত্তম।”

এইচসিএ এবং সিএ উভয়ই রাসায়নিকভাবে একই এবং ডায়েটারি সাপ্লিমেন্ট হিসেবেও পাওয়া যায়।

দুই উপাদানের পর্যবেক্ষণে দেখা যায় উভয়েই ক্যালসিয়াম অক্সালেট পাথরের বৃদ্ধি কমায়। এর মধ্যে এইচসিএ বেশি কার্যকরী এবং নতুন চিকিৎসা পদ্ধতি বের করতে সহায়ক।

গবেষণার জন্য সাতজন মানুষকে তিন দিনব্যপি এইচসিএ সাপ্লিমেন্ট গ্রহণ করতে দেওয়া হয়। এইচসিএ যাতে প্রসাবের সঙ্গে শরীর থেকে বেরিয়ে যায় সেটাও নিশ্চিত করেন গবেষকরা। সাপ্লিমেন্টটির চিকিৎসা হিসেবে কাজ করার জন্য এর শরীর থেকে বেরিয়ে যাওয়া জরুরি।

রাইমার বলেন, “গবেষণাটি একটি কার্যকরী ওষুধ তৈরির ভিত্তি তৈরি করেছে। তবে প্রশ্ন থেকেই যায়, দীর্ঘমেয়াদি সেবনে কতটা নিরাপদ হবে? সেবনের পরিমাণ? এরজন্য আরও বেশি পরীক্ষার প্রয়োজন আছে।”