পুলিশ প্লাজার রেস্তোরাঁ

রাজধানীর পুলিশ কল্যাণ ট্রাস্ট্রের বহুতল বাণিজ্যিক ভবন ‘পুলিশ প্লাজা কনকর্ড’য়ের ১৭ তলায় বর্তমানে পাঁচটি তলা শপিং সেন্টার হিসেবে চালু রয়েছে। এরমধ্যে পঞ্চম তলায় অন্যান্য দোকানের সঙ্গে গড়ে উঠেছে ফুডকোর্ট।

শিশিরবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 9 August 2016, 10:54 AM
Updated : 9 August 2016, 11:47 AM

হাতির ঝিলের পাশে গড়ে উঠলেও এই খাবারের দোকানগুলোর কোনো দিক থেকেই বাইরের মনোরম দৃশ্য দেখা যায় না। তাই খাবারের সঙ্গে হাতির ঝিলের পরিবেশ উপভোগ করা থেকে বঞ্চিত হতে হবে।

এখানকার রেস্তোরাঁগুলো ঘুরে জানা গেল খাবারের দরদাম।

পিৎজা ইন ও স্পাইসি চিকেন।

পিৎজা ইন ও স্পাইসি চিকেন:
এই দুটি প্রতিষ্ঠান মিলিত ভাবে একই জায়গায় খাবারের আয়োজন করেছে।

আমেরিকান পিৎজা চেইনটির বাংলাদেশে এটি চতুর্থ শাখা। আর স্পাইসি চিকেনের এটি তৃতীয় শাখা।

পিৎজা ইনের বিপণন বিভাগের কর্মকর্তা মেহেদী জামান সনেট বলেন, “রেস্তোরাঁর অন্দরসজ্জায় ক্রেতাদের আরামের দিকটায় বেশি নজর দেওয়ার চেষ্টা করেছি আমরা। এছাড়াও রেস্তোরাঁ চালু করার সময় একপাশের দেয়ালে কাচ বসিয়ে হাতিরঝিলের দৃশ্য দেখা যায় এমন ব্যবস্থা করার পরিকল্পনা ছিল। তবে পরে তা বাস্তবায়ন করতে না পারায় নিউইয়র্ক শহরের বিশাল ওয়াল পেপার দিয়ে সাজানো হয়েছে।”

পিৎজা ইনের মেন্যুতে মিলবে ১২ ধরনের পিৎজা। তিন ধরনের পাস্তা ও লাজানিয়া। এছাড়াও অ্যাপেটাইজারের মধ্যে আছে ফ্রেঞ্চ ফ্রাই, গার্লিক ব্রেড, চিকেন ফ্রাই ইত্যাদি।

মেহেদী জামান সনেট খাবারের দাম সম্পর্কে জানান, পিৎজার মধ্যে বিবিকিউ চিকেন আর পিৎজা ইন স্পেশাল সবচাইতে জনপ্রিয়। আকার ভেদে দাম সাড়ে তিনশ থেকে সাড়ে ১ হাজার ২শ’ টাকা। এছাড়াও আছে ২০ ইঞ্চি গালিভার পিৎজা। যাতে মিলবে আটটি ফ্লেইভার, দাম আড়াই হাজার টাকা। তিন পরত চিজ আর তিন পরত মাংসের পিৎজার নাম ডিপ ডিশ পিৎজা, দাম দেড় হাজার টাকা। পাস্তার মধ্যে পেনে আলা ফোর্নো জনপ্রিয়, দাম ৪৭৫ টাকা। লাজানিয়া মিলবে সাড়ে পাঁচশ টাকায়। অ্যাপেটাইজারে বিবিকিউ চিকেন উইঙস আর চিকেন ড্রামস্টিক চলে বেশি।

স্পাইসি চিকেনের মেন্যুতে সাতটি কম্বো মেন্যু, দাম ৩২৫ থেকে ২ হাজার ৫০ টাকা। মিলবে ফ্রাইড চিকেন, চিকেন স্ট্রিপস, ফ্রেঞ্চ ফ্রাই, ফ্রাইড রাইস, বার্গার। এরমধ্যে সবচাইতে জনপ্রিয় গ্রেড গ্রিলড বার্গার, দাম আড়াইশ টাকা। আরও আছে কফি ও পানীয়। কাপুচিনো মিলবে ১৪০ থেকে ১৯৫ টাকায়। মকা মিলবে ১৮০ থেকে আড়াইশ টাকায়। পানীয়ের মধ্যে জনপ্রিয় ভার্জিন মোহিতো, ব্ল্যাক কারেন্ট মোহিতো ইত্যাদি, দাম দেড়শ টাকা।

রেস্তোরাঁয় সবমিলিয়ে ৫০ জন বসতে পারে। ওয়াইফাই আছে। সন্ধ্যায় ভিড় বেশি থাকে।

দিল্লি দরবার: ভারতীয় খাবারের আয়োজন মিলবে এই দোকানে। দায়িত্বরত পরিচালক মোহাম্মদ সোয়াইব হোসেন বলেন, “২০১৫-র জুলাইতে যাত্রা শুরু করি আমরা। সবমিলিয়ে মোট ৮০টি পদ আছে আমাদের। সবচাইতে জনপ্রিয় হায়দ্রাবাদি বিরিয়ানি, হান্ডি বিরিয়ানি, গ্রিল বাকেট বিরিয়ানি। দাম যথাক্রমে ৩৮০, ৪৯০ ও সাড়ে ছয়শ টাকা। হালকা খাবারের মধ্যে বেশি চলে ডোসা, ছোলা বাটরা, রাজ কাচুরি, দই ফুচকা ইত্যাদি। দাম দেড়শ থেকে সাড়ে চারশ টাকার মধ্যে।”

শর্মা হাউজ।

দিল্লি শর্মা হাউজ:
দিল্লি দরবারের মালিকানাধীন আরেকটি দোকানের মোহাম্মদ সোয়াইব হোসেন বলেন, “২০১৫-র শেষের দিকে পিৎজা পাস্তার আয়োজন নিয়ে এই দোকানটি নেওয়া হয়। পিৎজার মধ্যে মেক্সিকান হট এবং ফোর সিজনস বেশি বিক্রি হয়। দাম ৫৩০ থেকে ৯শ’ টাকার মধ্যে। পাস্তার মধ্যে জনপ্রিয় অ্যারাবিয়ান পাস্তা ও পাস্তা বাস্তা। দাম যথাক্রমে দেড়শ টাকা ও ৩২০ টাকা। এছাড়াও বার্গার মিরবে দেড়শ থেকে আড়াইশ টাকায়।”

টাকোজ: ২০১৬-র প্রথমদিকে দিল্লি দরবারের এই দোকানটি চালু হয়। মেক্সিকান খাবারের আয়োজন এই দোকানে। মিলবে চিকেন সাব স্যান্ডউইচ ১৬০ টাকা, বিফ সাব স্যান্ডউইচ ১৯০ টাকা। চিকেন ও বিফ ফাহিতাস মিলবে ২২০ টাকায়। স্পাইসি চিকেন টাকোজ মিলবে ১৬০ থেকে ১৯০ টাকা।

শেফ’স কিচেন: মাল্টি কুইজিন ধাঁচের এই খাবারের দোকানে চীনা ও ভারতীয় খাবার বেশি বিক্রি হয়, জানালেন ম্যানেজার আসিফ হাসান।

তিনি বলেন, “চীনা খাবারের মধ্যে সবচাইতে জনপ্রিয় চাওমিন, বিবিকিউ উইঙস, তেরিয়াকি চিকেন, ক্যাশু নাট সালাদ। দাম যথাক্রমে ২শ’, ৩শ’, ৩২০ ও সাড়ে তিনশ টাকা। ভারতীয় খাবারের মধ্যে হায়দ্রাবাদি বিরিয়ানি ৪শ’ টাকা, দোসা দেড়শ থেকে সাড়ে তিনশ টাকা এবং মুরগির মাংসের চাপ মিলবে আড়াইশ টাকায়।”

সাব লাভারস: ২০১৫ সালে চালু হওয়া এই খাবারের দোকানে আছে ৭৪টি পদ। তবে ম্যানেজার মিশুকুল ইসলাম রনি বলেন, “সাব স্যান্ডইউচই সবচাইতে বেশি চলে। তিন ধরনের সাব স্যান্ডউইচ আছে আমাদের। চিকেন, বিফ ও টুনা। দাম ১৬০ থেকে ২৪০ টাকা। এছাড়াও নাচোজ, টাকোজও বেশ জনপ্রিয়। গরু ও মুরগি ভেদে নাচোজ ২১০ ও ১৮০ টাকা। একই ভাবে টাকোসের দাম ১৮০ ও দেড়শ টাকা।”

এগুলো ছাড়াও আছে ফ্লেইমস, ফুড লাভারস, স্কুইজ গার্ডেন, ফুড হিল ইতাদি খাবারের দোকান। সবারই খাবারের মেন্যু প্রায় একই ধরনের, দামের তারতম্যও উল্লেখযোগ্য নয়।

ফুডকোর্ট এলাকায় প্রায় ৩শ’ জনের বসার ব্যবস্থা রয়েছে। তাই যে দোকান থেকেই খাবার কেনা হবে সে দোকানের সামনেই বসতে হবে এমন কোনো কথা নেই। মার্কেটের ফ্রি ওয়াইফাই সবার জন্য প্রযোজ্য, তাই দোকানগুলোর ব্যক্তিগত কোনো ওয়াইফাই নেই।

ছবি: তানজিল আহমেদ জনি।