সৌরবিদ্যুতের খুঁটিনাটি

যদিও খরচান্ত ব্যাপার। তবে একবার বসাতে পারলে বিদ্যুত পাওয়া যাবে অনন্তকাল।

শিশিরবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 8 August 2016, 10:56 AM
Updated : 8 August 2016, 10:56 AM

আর লাগবে রক্ষণাবেক্ষণ খরচ।

রাজধানীর মালিবাগের সোলার পাওয়ার বিক্রেতা প্রতিষ্ঠান ‘এনার্জি সিস্টেম কোম্পানি’র মালিক ও প্রকৌশলী সেরাজুল ইসলাম বলেন, “মূলত ২০১০ সাল থেকে বাংলাদেশের মানুষ সোলারে পাওয়ারের ব্যাপক পরিসরে পরিচিত হয়। এর আগে দেশে এই প্রযুক্তি ছিল, তবে ছোট পরিসরে।”

তিনি জানান, বর্তমানে সোলার প্রযুক্তি ক্রমেই উন্নতির পথে এগোচ্ছে। আগে সোলার প্রযুক্তি শুধু বিদ্যুৎ নেই এমন এলাকাতেই চোখে পড়ত। এখন শুধু মফস্বল এলাকাতেই সীমাবদ্ধ নেই, এসেছে শহরেও। এই প্রসারের জন্য অনেকটাই গুরুত্ব রেখেছে সরকারি আইন।

এই আইন মোতাবেক ঢাকায় নতুন বিদ্যুৎ সংযোগ পেতে হলে ভবনের মোট বিদ্যুৎ চাহিদার নির্দিষ্ট পরিমাণ ‘সোলার সিস্টেম’ দিয়ে পূরণ করতে হবে। আবাসিক ভবনের জন্য ৩ শতাংশ, বাণিজ্যিক ভবনের ক্ষেত্রে ৩ থেকে ৮ শতাংশ এবং শিল্প কারখানার ক্ষেত্রে ১০ শতাংশ বিদ্যুৎ আসতে হবে এই পদ্ধতির মাধ্যমে।

তবে শুধু সরকারি বাধ্যবাধকতায় নয়, বিদ্যুৎ খরচ কমাতেও সোলারের প্রতি ঝুঁকছেন অনেকেই।

প্রয়োজনীয় যন্ত্রাংশ:
সম্পর্কে জানালেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের এসটিআরসি’য়ের ইন্সট্রুমেন্টাল ইঞ্জিনিয়ার মোহাম্মদ শাজেদুল হোসেন সরকার।

সূর্যের আলো থেকে বিদ্যুৎ তৈরি করাই ‘সোলার সিস্টেম’য়ের কাজ। এই পদ্ধতি দুই ধরনের হয়- অফগ্রিড এবং অনগ্রিড।

ব্যাটারির মাধ্যমে সৌরবিদ্যুৎ সংরক্ষণ করে রেখে রাতে কিংবা লোডশেডিংয়ের সময় ব্যবহার করার পদ্ধতির নাম অফগ্রিড।

আর ব্যাটারি ছাড়া যতক্ষণ সূর্যের আলো আছে ততক্ষণ ব্যবহার করার পদ্ধতির নাম অনগ্রিড।

কোন পদ্ধতিতে কী যন্ত্র প্রয়োজন, এই ব্যাপারে জানালেন ‘এনার্জি সিস্টেম কোম্পানি’র সেরাজুল ইসলাম।

অফগ্রিড’য়ের জন্য দরকার হবে প্রয়োজন মতো সোলার প্যানেল, একটি চার্জ কন্ট্রোলার, একটি ইনভার্টার এবং প্রয়োজন মতো টিউবলার ব্যাটারি।

অনগ্রিড’য়ের জন্য লাগবে সোলার প্যানেল, অনগ্রিড ইনভার্টার ও এনার্জি মিটার।

বাণিজ্যিক ও শিল্পকারখানায় অনগ্রিড সিস্টেম ব্যবহার করা হয়। আর আবাসিক ভবনে অফগ্রিড।

দরদাম: খরচ নির্ভর করবে কতোগুলো বৈদ্যুতিক যন্ত্র চলবে তার উপর। সচরাচর লাইট, ফ্যান, টেলিভিশন, কম্পিউটার ইত্যাদি সৌরবিদ্যুতে চালানো হয়। ফ্রিজ, এয়ারকন্ডিশনার ইত্যাদি এই বিদ্যুতে চালানো যেমন ঝুঁকিপূর্ণ, তেমনি ব্যয়সাপেক্ষ।

উদাহরণ দিয়ে খরচের হিসেবটা বুঝিয়েছেন সেরাজুল ইসলাম।

একটি বাসায় পাঁচটি লাইট, পাঁচটি ফ্যান, একটি টেলিভিশন এবং একটি কম্পিউটার চার ঘণ্টা চালাতে সাধারণত এক হাজার ওয়াট বিদ্যুৎ প্রয়োজন।

অফগ্রিড পদ্ধতিতে এই চাহিদা পূরণ করতে চাইলে লাগবে আড়াইশ ওয়াটের চারটি সোলার প্যানেল, একটি চার্জ কন্ট্রোলার, একটি ইনভার্টার এবং ১৩০ অ্যাম্পিয়ারের তিনটি ব্যাটারি। প্রতিষ্ঠানভেদে পুরো প্যাকেজটির খরচ পড়তে পারে দেড় লাখ টাকা থেকে ৫ লাখ টাকা।

অনগ্রিড পদ্ধতিতে লাগবে চারটি আড়াইশ ওয়াটের সোলার প্যানেল, একটি অনগ্রিড ইনভার্টার এবং একটি এনার্জি মিটার। সবসহ খরচ পড়বে ১ লাখ থেকে সাড়ে ৩ লাখ টাকা।

আবার ১২ ঘণ্টা ধরে বিদ্যুৎ সরবরাহ পেতে চাইলে খরচ বেড়ে যাবে তিনগুন।

সৌরবিদ্যুতের জন্য বাজারে বড়মাপের নামগুলোর মধ্যে রয়েছে- রহিমআফরোজ, এনার্জিপ্যাক, এনজেন, গ্রামীনশক্তি ইত্যাদি। এছাড়াও কিছু এনজিও ও ব্যাবসায়িক প্রতিষ্ঠান বিক্রি করে থাকে।