হাড় শক্ত করতে খেলাধুলা

গবেষণায় দেখা গিয়েছে, যেসব শিশু ছোটবেলায় খেলাধুলা করে তাদের হাড় অন্যদের চেয়ে অধিক শক্তিশালী হয়।

লাইফস্টাইল ডেস্কবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 2 August 2016, 11:00 AM
Updated : 2 August 2016, 11:00 AM

শিশুরা সারাক্ষণই লাফঝাঁপ, দৌড়াদৌড়ি করতেই থাকে। শিশুদের এই লাফালাফিতে বড়রা প্রায়ই শঙ্কিত হন। ভাবেন, এই বুঝি বাচ্চাটা ব্যথা পেয়ে বসলো!

তবে বিশেষজ্ঞরা বলছেন, “খেলাধুলায় ব্যথা পাওয়ার ভয় তো নেইই বরং ১৮ মাস বয়স থেকে যে শিশু দৌড়ঝাঁপ করার সুযোগ পায় তারা পরে গিয়ে আরও শক্তিশালী হয়।”

একটি গবেষণায় দেখা গিয়েছে, শিশু যখন ১৮ মাস বা দেড় বছর বয়সে এসে নিজে নিজে হাঁটতে শেখে তখন হাড়ের উপর চাপ প্রয়োগ করা হয় এমন কাজগুলো করলে হাড়ের পুরুত্ব বাড়ে। চওড়া হওয়ার সুযোগ পায়। ফলে সক্রিয় শিশুরা নিষ্ক্রিয় শিশুদের তুলনায় অধিক বেশি শক্তিশালী হাড় গঠন করার সুযোগ পায়।

এ গবেষণা নির্দেশ করে যে, কোন ধরনের শিশুদের মধ্যে অস্টেওপোরসিস নামক হাড় ক্ষয় রোগে এবং হাড় ভেঙে যাওয়ার ঝুঁকি বেশি থাকে। এ হাড় ক্ষয় রোগটি সাধারণত মধ্যবয়সীদের মধ্যে দেখা যায়।

ব্রিটেনের ম্যানচেস্টার মেট্রোপলিটন বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষক অ্যালেক্স আয়ারল্যান্ড এ গবেষণাটি পরিচালনা করেন।

তিনি বলেন, “গবেষণার ফলাফল বেশ কৌতুক উদ্দীপক। কেননা খেলাধুলার সঙ্গে শারীরিক সক্ষমতার এই সংযোগ আগে কখনও উঠে আসেনি। ১৬ বছর পরেও যে জীবনে খেলাধুলা একটা ভূমিকা রাখতে পারে, এই ধরনের ফলাফল এই প্রথম।” 

বোন অ্যান্ড মিনারেল রিসার্চ নামক জার্নালে প্রকাশিত এই গবেষণার বিশ্লেষণে বলা হয়েছে, কর্মোদ্যম মানুষদের মাংসপেশিও বেশ সচল হয় তা চলার সময় হাড়ের উপর অধিক বল প্রয়োগ করে। এটা বড় হতে হতে হাড়কে শক্তিশালী করে ফেলে।

অ্যালেক্স আয়ারল্যান্ডের দল ১৯৯০’র শুরুর দিকে জন্ম নেওয়া ২ হাজার ৩২৭ জন শিশুর উপর এই গবেষণা চালান।

এ গবেষণার উপাত্ত নেওয়ার জন্য, ১৮ মাস বয়সে অংশগ্রহণকারী ছেলে এবং মেয়ে শিশুদের পশ্চাৎ দেশের হাড় এবং জঙ্ঘাস্থির আকার, আকৃতি এবং তাতে অবস্থিত খনিজের মাত্রা পরিমাপ করা হয়। আবার তাদের বয়স যখন ১৭ বছর হয় তখন তাদের একই অংশের উপাত্ত সংগ্রহ করা হয়।

গবেষণার ফলাফল থেকে দেখা যায়, পুরুষদের ক্ষেত্রে শৈশবে খেলাধুলা করলে হাড়ের শক্তি বৃদ্ধিতে যতটা বেশি প্রভাব পরে নারীদের ক্ষেত্রে তার প্রভাব তত বেশি নয়।

গবেষক আয়ারল্যান্ডের মতে, এই গবেষণা মূলত চিকিৎসা বিজ্ঞানকে সহায়তা করবে। যখন কোনো চিকিৎসক কাউকে চিকিৎসা সহায়তা দেবেন অথবা অসুখ থেকে রক্ষা পেতে সহায়তা করবেন তখন এই গবেষণার ফলাফল থেকে তিনি সহজে সিদ্ধান্ত নিতে পারবে।