বন্যায় রোগ থেকে বাঁচতে

বিশুদ্ধ পানির অভাব, ভেজা ও অস্বাস্থ্যকর পরিবেশসহ বিভিন্ন কারণেই বন্যার সময় নানান ধরনের রোগের প্রোকপ বাড়ে। যা থেকে রক্ষা পেতে চাই বাড়তি সাবধানতা।

শিশিরবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 31 July 2016, 09:46 AM
Updated : 31 July 2016, 09:46 AM

ফাস্ট কেয়ার হাসপাতালের মেডিসিন বিশেষজ্ঞ ডা. মোহাম্মদ কামরুল হাসান বলেন, “বন্যার সময় অস্বাস্থ্যকর পরিবেশ, চারিদিকে নোংরা পানি, বিশুদ্ধ পানির অভাব, স্বাস্থ্যকর খাদ্যের অভাব ইত্যাদি নানা কারণে ডায়রিয়া, কলেরা, নিউমোনিয়া, হাঁপানি, জ্বর, বমি, যক্ষা ইত্যাদি প্রকোপ বেড়ে যায়। তবে এদের মধ্যে ডায়রিয়ার প্রকোপটাই সবচাইতে বেশি।”

তিনি আরও বলেন, “বড় বিপদ হল, বন্যার সময় রোগীর পরিচর্যা, চিকিৎসা সবকিছুই হয় দুষ্কর। পানিবন্দী হওয়ার কারণে ডাক্তারের কাছে যাওয়া সুযোগ কম থাকে। ওষুধ কেনার সমস্যা। ব্যক্তিগত পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতা বজার রাখাও সম্ভব হয়না। এছাড়া বিশুদ্ধ পানির সমস্যা পরিস্থিতি আরও জটিল করে তোলে। পান করার পানি, রান্না-গোসলের পানি না থাকায় রোগের তীব্রতা আরও বাড়ে।”

“শিশুদের নিয়ে সমস্যাটা আরও বেশি। সুযোগ পেলেই এরা নোংরা পানিতে নেমে পড়ে। ফলে চুলকানি, খোসপাঁচড়া, ঘা ইত্যাদি দেখা দেয়। বেশিক্ষণ পানিতে থাকার কারণে ঠাণ্ডা-জ্বর লেগেই থাকে। অনেকসময় তা নিউমোনিয়া পর্যন্ত গড়ায়।”

সাবধানতা সম্পর্কে এই চিকিৎসক বলেন, “বিশুদ্ধ পানির প্রতি সবচাইতে বেশি যত্নবান হতে হবে। পানি ফুটানোর ব্যবস্থা না থাকলে পানি বিশুদ্ধকরণ ট্যাবলেট, ব্লিচিং পাইডার, ক্লোরিন ব্যবহার করতে পারেন। এগুলো অবশ্যই ফার্মেসি থেকে কিনতে হবে এবং কতটুকু পানিতে কি পরিমাণে উপাদানগুলো দিতে হবে যা জেনে নিতে হবে।”

তিনি আরও পরামর্শ দেন, “আরেকটি উপায় হতে পারে পানি ছেঁকে নেওয়া। সুতি কাপড় তিন, চার পরত মোটা করে নিয়ে তা দিয়ে পানি ছেঁকে নিতে পারেন। এই পানি রান্না ও গোসলে ব্যবহার করা যেতে পারে, তবে পান না করাই ভালো।”

এছাড়া যতটা সম্ভব পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন থাকার চেষ্টা করতে হবে। পানিশূন্যতা যাতে না হয় সেদিকে খেয়াল রাখতে হবে। বন্যার পানিতে শরীর ভেজানো থেকে যতটা সম্ভব বিরত থাকুন। চুলকানি, খোস-পাঁচড়া থেকে বাঁচতে গোসলের পানিতে নিমের পাতা, স্যাভলন, পটাশ ইত্যাদি মিশিয়ে নিতে হবে। রোগের তীব্রতা বেশি হলে ডাক্তারের পরামর্শ নিন।