যুক্তিভিত্তিক চিন্তা, স্মৃতিশক্তি, মনোযোগ ইত্যাদি নষ্ট হতে পারে অস্বাস্থ্যকর পরিবেশে কাজ করার ফলে।
ফ্লোরিডা স্টেট ইউনিভার্সিটির গবেষকদের মতে, কর্মক্ষেত্রে সমন্বয় এবং পরিচ্ছন্নতা দুইয়ের অভাব কর্মীদের মস্তিষ্কে উপর বিরূপ প্রভাব ফেলে।
প্রধান গবেষক, নরজেন হেন্ড্রিকসন পরিবার ও শিশু বিজ্ঞানবিষয়ক অধ্যাপক জোসেফ গ্রেওয়্যাচ বলেন, “মনোবিজ্ঞানীদের মতে মস্তিষ্ক একটি পেশি, অপরদিকে ‘ইন্ডাস্ট্রিয়াল হাইজিনিস্ট’রা কর্মক্ষেত্রে চিহ্নিত করেছেন এমন কিছু রাসায়নিক উপদান যা এই পেশির ক্ষতি করতে সক্ষম।”
“কর্মক্ষেত্রে বাস্তবেই রয়েছে এমন কিছু উপাদান যা মস্তিষ্কের জ্ঞান বিষয়ক কর্মকাণ্ড নিয়ন্ত্রণ করতে সক্ষম। এদের মধ্যে কিছু দেখা ও ছোঁয়া যায়, কিছু আবার যায় না, তবে দুটোই প্রভাব ফেলে।”- এভাবেই ব্যাখ্যা করেন গবেষক।
গ্রেওয়্যাচ ও তার দল ‘মিডলাইফ ইন দ্য ইউনাইটেড স্টেটস’ শীর্ষক জরিপে প্রাপ্তবয়স্ক কর্মীদের মস্তিষ্কের জ্ঞানবিষয়ক কর্মকাণ্ডের তথ্য সংগ্রহ করেন।
ফলাফলে দুইটি তথ্য বেরিয়ে আসে। প্রথমত, কাজের জটিলতা যত বেশি মস্তিষ্কের জ্ঞান আহরণের মাত্রাও তত বেশি, বিশেষত বয়স বাড়ার সঙ্গে নারীদের ক্ষেত্রে এটা বেশি প্রযোজ্য।
দ্বিতীয়ত, কর্মক্ষেত্রের পরিবেশ যত বেশি নোংরা হয়, ওই পরিবেশে কর্মরত নারী-পুরুষের মস্তিষ্কের জ্ঞান আহরণের মাত্রা ততটাই কমে যায়।
গ্রেওয়্যাচ বলেন, “দীর্ঘমেয়াদি সুস্বাস্থ্যের কথা বিবেচনা করলে দুটোই গুরুত্বপূর্ণ বিষয়।”
গবেষকরা সংগৃহীত তথ্য ব্যবহার করে প্রত্যেক অংশগ্রহণকারীর কর্মক্ষেত্রের পরিবেশ যাচাই করেন এবং ওই পরিবেশে তাদের মানিয়ে নেওয়ার ক্ষমতাও যাচাই করেন।
এছাড়াও কর্মীদের কাজ সম্পন্ন করার ক্ষমতা, সময় জ্ঞান এবং মনোযোগের মাত্রাও পর্যবেক্ষণ করা হয়। কোনো কিছু ভুলে যাওয়ার অভিজ্ঞতা আছে কিনা, এমন প্রশ্নের উত্তরে অংশগ্রহণকারীরা কীভাবে সাড়া দেন সেটাও পর্যবেক্ষণ করা হয়।
গ্রেওয়্যাচ বলেন, “আমাদের উদ্দেশ্য ছিল, বয়সের সঙ্গে মস্তিষ্কের জ্ঞান আহরণের ক্ষমতা কমে কিনা এবং মস্তিষ্ক ব্যবহার না করলে কার্যক্ষমতা হারায় কিনা, তা জানা।”
তিনি আরও বলেন, “কর্মক্ষেত্রের পদগুলো এমনভাবে তৈরি করা উচিত, যাতে প্রত্যেকেরই সিদ্ধান্ত নেওয়ার ক্ষমতা থাকে। ফলে মস্তিষ্কের জ্ঞান আহরণের ক্ষমতা বজায় থাকতে পারে। সেই সঙ্গে কর্মক্ষেত্রের পরিবেশও রাখতে হবে পরিষ্কার।”
নিকটস্থ ৪৮টি এলাকার ৩২ থেকে ৮৪ বছর বয়সি ৪ হাজার ৯৬৩ জনের তথ্য নিয়ে গবেষণাটি করা হয়। এরমধ্যে ৪৭ শতাংশ ছিল পুরুষ আর ৫৩ শতাংশ নারী।
‘জার্নাল অফ অকিপেইশনাল অ্যান্ড এনভাইরোনমেন্টাল মেডিসিন’ নামক জার্নালে এই গবেষণা প্রকাশিত হয়।
ছবি: রয়টার্স।