মেইকআপ ব্রাশ পরিষ্কার রাখতে

মেইকআপ সুন্দরভাবে করতে প্রয়োজনীয় ব্রাশগুলো সঠিকভাবে পরিষ্কার রাখা ও সংরক্ষণ করা যে জরুরি তা অনেকেই ভুলে যান।

ইরা ডি. কস্তাবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 18 May 2016, 11:50 AM
Updated : 21 May 2016, 07:38 AM

মেইকআপ ব্রাশ ও স্পঞ্জ পরিষ্কার করার বিষয়ে পরামর্শ ‘এনভি কসমেটিকস’য়ের কর্ণধার, মেইকআপ-শিল্পী ও প্রশিক্ষক ফারজান মিতু।

তিনি জানান, ফাউন্ডেশন, কনসিলার ব্যবহার, ব্লাশন, চোখের সাজ এরকম মেইকআপের প্রতিটি ধাপেই বিভিন্ন ধরনের ব্রাশ ব্যবহার করা হয়। আর ব্যবহারের পর ব্রাশে লেগে থাকা বাড়তি মেইকআপ ঝেড়ে ফেলা গেলেও কিছুটা প্রসাধনী লেগেই থাকে।

দীর্ঘদিন ব্রাশ অপরিষ্কার থাকার কারণে ব্যাক্টেরিয়ার সংক্রমন হতে পারে। আর ওই অপরিষ্কার ব্রাশ থেকে ত্বকের সমস্যা হওয়াও স্বাভাবিক। তাই মেইকআপ ব্যবহার করলেই ব্রণ হবে তা কিন্তু নয়, অনেক সময় ব্রণের কারণ হতে পারে অপরিষ্কার ব্রাশ এবং ব্লেন্ডিং স্পঞ্জ।

ব্লেন্ডিং স্পঞ্জ ব্যবহারের সঙ্গে সঙ্গেই ধুয়ে ফেলতে হবে, নতুবা স্পঞ্জে ফাংগাসের সংক্রমণ বেড়ে গিয়ে তা ব্যবহারের অযোগ্য হয়ে যাবে।

ফারজান বলেন, “সুন্দরভাবে মেইকআপ করার পাশাপাশি ত্বকের যেন কোনো ক্ষতি না হয় সেজন্য নিয়মিত ব্রাশ পরিষ্কার করা উচিত। যারা ঘরোয়াভাবে মেইকআপ করেন তাদের উচিত প্রতিদিন যে ব্রাশগুলো ব্যবহার করা হচ্ছে সেগুলো অন্তত সপ্তাহে একবার পরিষ্কার করা।”

ব্রাশ পরিষ্কার করতে পানির সঙ্গে বেবি শ্যাম্পু বা সাবান ব্যবহার করার পরামর্শ দেন ফারজান।

তিনি বলেন, “ব্রাশ পরিষ্কার করতে ক্ষার নেই এমন ক্লিনজার ব্যবহার করা উচিত। বাজারে বিভিন্ন ব্র্যান্ডের মেইকআপ ক্লিনজার পাওয়া যায়, সেগুলো দিয়েও ব্রাশ পরিষ্কার করা সহজ। তবে ব্রাশ ক্লিনজার না থাকলে বেবি শ্যাম্পুও ব্রাশ পরিষ্কারের জন্য বেশ উপযোগী।”

“ব্রাশ ধোয়ার সময় শুধু ব্রিসেলস ধুতে হবে। এক্ষেত্রে পানি দিয়ে ভিজিয়ে ব্যবহৃত ক্লিনজার নিয়ে ব্রাশ উল্টা করে কোনো অসমান স্থানে ঘষে নিতে হবে। এতে ব্রাশে লেগে থাকা প্রসাধনী উঠে আসবে। বাজারে ব্রাশ পরিষ্কারের জন্য ব্রাশ এগ ও বিভিন্ন ধরনের ম্যাট পাওয়া যায়। তা না পাওয়া গেলে মাইক্রোয়েভ গ্লাভসও ব্যবহার করা যেতে পারে। এর উপরের অসমান আস্তর ব্রাশ গভীরভাবে পরিষ্কার করতে সাহায্য করে।” এমনটাই পরামর্শ দেন ফারজান।

ব্রাশ পরিষ্কারের জন্য ব্রাশ এগ ও ম্যাট।

বেশিরভাগ ব্রাশের হাতল তৈরি হয় কাঠ অথবা প্লাস্টিক দিয়ে। এর এক প্রান্তে ব্রিসেলসগুলো আঠার সাহায্যে আটকে দেওয়া হয়। তাই খেয়াল রাখতে হবে, ব্রিসেলসের একদম গোড়ায় যেন পানি বা ক্লিনজার না যায়। এতে আঠা নষ্ট হয়ে ব্রিসেলস খুলে আসতে পারে।

ব্রাশ ধোয়ার পর বাড়তি পানি ঝেরে উল্টা করে (ব্রিসলসগুলো নিচের দিকে) ঝুলিয়ে রাখতে হবে। এতে পানি নিচে পড়ে যাবে। তা সম্ভব না হলে নরম তোয়ালে দিয়ে চেপে পানি মুছে, বাতাস চলাচল করে এমন জায়গায় শুকাতে দিতে হবে। দ্রুত শুকাতে হেয়ার ড্রায়ার ব্যবহার করা যেতে পারে তবে অবশ্যই মৃদু মাত্রায়, জানান ফারজান।

বিউটি ব্লেন্ডার বা মেইকআপ স্পঞ্জ পরিষ্কার করার ক্ষেত্রেও কিছু পরামর্শ দেন তিনি।

কুসুম গরম পানিতে বেবি শ্যাম্পু বা হালকা কোনো ক্লিনজার গুলে তাতে স্পঞ্জটি ভিজিয়ে নিন। এরপর স্পঞ্জটি ভালোভাবে রগড়ে ও চেপে চেপে ভেতরে জমে থাকা প্রসাধনী ধুয়ে ফেলুন। যখন মনে হবে সব ফাউন্ডেশন ও কনসিলার ধোয়া হয়েছে তখন পরিষ্কার পানি দিয়ে ভালোভাবে স্পঞ্জটি ধুয়ে নিন। এরপর রোদে বা ফ্যানের নিচে পুরোপুরি শুকিয়ে নিন।

শুকনা ব্রাশ ও স্পঞ্জ কোনো বাক্সে রাখার পরামর্শ দেন ফারজান। এতে বাইরের ধুলাবালি অথবা পোকামকড় থেকে সুরক্ষিত থাকবে অনুষঙ্গগুলো। তবে সংরক্ষণ করার আগে অবশ্যই ভালোভাবে শুকিয়ে নিতে হবে।

তবে শুধু ব্রাশ নয় মেইকআপ ও সৌন্দর্যচর্চায় ব্যবহৃত আরও সব অনুষঙ্গ যেমন টুইজার বা শন, আইল্যাশ কার্লার, মেইকআপ পেন্সিল-ব্রাশ ইত্যাদিও নিয়ম করে পরিষ্কার করা উচিত। তাহলে এগুলো দীর্ঘদিন ব্যবহারযোগ্য থাকবে।