মোহাম্মদপুরের রেস্তোরাঁ পর্ব ১

ভোজনরসিকদের জন্য মোহাম্মদপুর বরাবরই পছন্দের জায়গা। বিশেষ করে বিহারি ক্যাম্প এলাকার চাপ ও কাবাবের দোকানগুলোর জন্য। তবে এই এলাকাতেও সম্প্রতি গড়ে উঠেছে বিভিন্ন খাবারের রেস্তোরাঁ।

শিশিরবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 12 May 2016, 12:05 PM
Updated : 18 May 2016, 08:24 AM

মোহাম্মদপুর রিং রোড এবং শেখেরটেক এলাকার এমনই তিনটি রেস্তোরাঁ ডুব, ফিল্মি ক্যাফে ও ক্যাফে সেলফি। 

ডুব: মোহাম্মদপুর রিং রোডে সূচনা কমিউনিটি সেন্টারের উল্টা পাশে এই রেস্তোরাঁ। বিভিন ধাঁচের খাবারের এই রেস্তোরাঁ চালু হয়েছিল ২০১৫ সালের অক্টোবরে।

ডুব।

রেস্তোরাঁর মালিক পেশায় একজন স্থপতি। নিজের হাতে গড়া অন্দরসজ্জায় রয়েছে ছিমছাম এবং পরিবার বান্ধব পরিবেশ। দেয়ালে আছে দেশীয় চিত্রশিল্পীদের আঁকা চিত্রকর্ম। শিল্পীদের আঁকা ছবি প্রদর্শনী ও বিক্রি করার সুযোগও দিচ্ছে এই রেস্তোরাঁ।

ম্যানেজার আরিফুল হক বলেন, “আমাদের খাবারের মধ্যে সবচাইতে জনপ্রিয় কাবাব, হায়দ্রাবাদি বিরিয়ানি, নুরজাহান বিরিয়ানি ইত্যাদি। এছাড়াও আমাদের ১৮টি সেট মেনু। দাম ১৬৫ থেকে ৩৫৫ টাকা পর্যন্ত। সন্ধ্যা থেকে রাত পর্যন্ত ক্রেতাদের ভিড় বেশি থাকে। ক্রেতাদের মধ্যে পরিবারই বেশি।

“খাবারের মানের পাশাপাশি দামটাও যথা সম্ভব কম রাখার চেষ্টা করেছি আমরা।” দাবী আরিফুল হকের।

বসার ব্যবস্থা আছে ১৮০ জনের। খোলা থাকে সকাল ১১টা থেকে রাত ১১টা পর্যন্ত। ওয়াইফাই আছে। শিশুদের জন্য আছে ‘কিডস জোন’।

ফিল্মি ক্যাফে: শেখেরটেক নয় নম্বর রোডের শুরুতেই এই রেস্তোরাঁর অবস্থান। কর্ণধার আহমেদ ইশতিয়াক হিমেল পেশায় স্থপতি এবং চলচ্চিত্র নির্মাতা।

তাই রেস্তোরাঁও তৈরি করেছেন চলচ্চিত্রের ছাপ রেখে। চালু হয়েছিল এবছরের ফেব্রুয়ারি মাসে।

রেস্তোরাঁর দেয়ালে ঝোলানো হয়েছে বাংলা, হিন্দি ও ইংরেজি সিনেমার পোস্টার। অন্দরসজ্জায় রিক্সার ব্যবহার চোখে পড়ার মতো। মুল ফটকেই চোখে পড়বে দেয়ালে বসানো রিক্সার ছাউনীসহ গদি। বসার টুলগুলোতে ব্যবহার করা হয়েছে রিক্সার গদি, টেবিলের পায়াগুলো আসলে রিক্সার ফ্রেম আর টেবিলের কাঁচটি বসে আছে রিক্সার চাকার রিমের উপর। দেয়ালে সিনেমার পোস্টার ছাড়াও রয়েছে রিক্সা পেইন্টিং।

মুলত বিভিন্ন ধরনের কাবাব মিলবে এই রেস্তোরাঁয়। কাবাবের নামগুলোতেও আছে চমক। ছাগলের তিন নম্বর চাপ (খাসির চাপ), বটি কেনো গরুর (বটি কাবাব), গিলা বড় না কলিজা বড়(গিলা কলিজা), পূর্ণদৈর্ঘ্য খিরি কাবাব (খিরি কাবাব), শামি কেন কাবাব(শামি কাবাব) ইত্যাদি আরও মজাদার নাম দিয়ে সাজানো হয়েছে খাবারের তালিকা।

ফিল্মি ক্যাফে।

কাবাবের পদগুলোর দাম ১৫ থেকে ১০০ টাকার মধ্যে। জীবন লুচিময় (লুচি) আর লুচি-দ্য পরোটার (পরোটা) দাম যথাক্রমে ৫ ও ১০ টাকা। আরও আছে বিভিন্ন ধরনের চিকেন ফ্রাই, মেজবানি মাংস এবং চা।

রেস্তোরাঁর ম্যানেজার কাজী সোহেল রানা বলেন, “গরুর চাপ, মুরগির চাপ, মগজ ফ্রাই, মেজবানি মাংস ও বাটার রাইস রেস্তোরাঁর সবচাইতে জনপ্রিয় খাবার। আর তিন ধরনের চায়ের মধ্যে পিকে মালাই চা বেশ জনপ্রিয়, দাম ২০ টাকা। বিকেলে প্রচণ্ড ভিড় হয়। ক্রেতাদের মধ্যে তরুণরাই বেশি।”

দুপুর ২টা থেকে রাত ১১টা পর্যন্ত খোলা থাকে। তবে শিগগিরই সকাল ১০টা থেকে খোলার পরিকল্পনা চলছে। থাকবে সকালের নাস্তার ব্যবস্থা। বসার ব্যবস্থা আছে ৪০ জনের। ওয়াইফাই আছে।

ক্যাফে সেলফি: রেস্তোরাঁটি জাপান গার্ডেন সিটির উল্টো পাশে রিং টাওয়ার ভবনের ছয় তলায়।

নামকরণের কারণ সম্পর্কে রেস্তোরাঁর ম্যানেজার নুসরাত জাহান বলেন, “বর্তমানে চারিদিকে সেলফি তোলার জনপ্রিয়তাকে কাজে লাগাতেই এই নাম রাখা হয়েছে। নামটির সার্থকতা বজায় রাখতে রয়েছে ‘সেলফি অফ দ্য ডে’ ও ‘সেলফি অফ দ্য মান্থ’ প্রতিযোগিতা।”

তিনি জানান, “রেস্তোরাঁয় বসে সেলফি তুলে ফেইসবুকে পোস্ট করলে যার সেলফিতে সবচেয়ে বেশি কমেন্ট পড়বে, তিনিই হবেন বিজয়ী। বিজয়ীরা পাবেন বিলের উপর ২০ শতাংশ ছাড়, বিনামূল্যে ‘কাপল ডিনার’ ইত্যাদি।

ক্যাফে সেলফি।

এছাড়াও প্রতি শুক্রবার সন্ধ্যা ৬টা থেকে রাত ১০টা পর্যন্ত থাকে ‘লাইভ মিউজিক’য়ের আয়োজন। গান পরিবেশন করে স্থানীয় ব্যন্ড ‘যাযাবর’।

“রেস্তোরাঁর জনপ্রিয় খাবার- চপসুই ও চাওমিন। এছাড়াও আছে নানারকম সেট মেনু। বিকেল ৪টা থেকে ক্রেতাদের ভিড় বাড়ে। পরিবার ও শিক্ষার্থী উভয় ধরনের ক্রেতাই এখানে আসেন”, বললেন নুসরাত।

খোলা থাকে সকাল ১১টা থেকে রাত ১১টা পর্যন্ত। বসার ব্যবস্থা আছে ৬০ জনের। ওয়াইফাই আছে।