যক্ষ্মায় রক্ষা

জেনে নিন এই রোগের কারণ, লক্ষণ এবং প্রতিকার।

ইশরাত মৌরিবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 27 March 2016, 10:47 AM
Updated : 24 July 2016, 10:52 AM

কয়েকদিন আগেই চলে গেল বিশ্ব যক্ষ্মা দিবস। পৃথিবীর এই প্রাচীনতম রোগ এখনও টিকে আছে এবং ওয়ার্ল্ড হেলথ অর্গানাইজেশনের তথ্য মতে প্রতিদিন এই রোগে আক্রান্ত হয়ে চার হাজার মানুষ মারা যাচ্ছে।

এক পরিসংখ্যানে দেখা গেছে প্রতিবছর বাংলাদেশে প্রায় ছয় হাজার যক্ষ্মারোগী মারা যাচ্ছে। সারাবিশ্বে এ সংখ্যা প্রায় ১৫ লাখ। অন্যান্য জেলার তুলনায় ঢাকা ও নারায়ণগঞ্জে যক্ষ্মারোগীর সংখ্যা দিন দিন বেড়ে চলছে।

যক্ষ্মা কীভাবে, কোথায় হয়, রোগের লক্ষণ এবং আরও কিছু বিষয় নিয়ে বলেছেন, বক্ষব্যধি বিশেষজ্ঞ এবং লাঙ ইণ্ডিয়া’র আন্তর্জাতিক সদস্য ডা. মোহাম্মদ আজিজুর রহমান।

যক্ষ্মা যাদের হতে পারে!

- যক্ষ্মারোগীর ঘনিষ্ঠ সম্পর্কে আসা লোকজন। অত্যাধিক ধূমপানকারি ব্যক্তি। অনিয়ন্ত্রিত ডায়েবেটিস (বিশেষ করে ফুসফুস বহির্ভূত যক্ষ্মার কারণ হিসেবে বিবেচিত)। মাদকসেবনকারি ব্যক্তি। বয়স্কব্যক্তি। পুষ্টির অভাবজনিত ব্যক্তি। যাদের শরীরে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা দুর্বল। যেমন- এইডস রোগে আক্রান্ত রোগী।

শরীরের যেখানে যক্ষ্মা হয়

শতকরা ৮৫ ভাগ যক্ষ্মা ফুসফুসে হয়ে থাকে। ফুসফুসের আবরণী- যাকে বলা হয়ে থাকে প্লুরা, সেখানে। লসিকা গ্রন্থি। মস্তিষ্কের আবরণী। হাড়, অন্ত্র ও ত্বক।

শুধুমাত্র হৃৎপিণ্ড, নখ এবং চুল যক্ষ্মা রোগের আওতামুক্ত।

যক্ষ্মার জীবাণু শরীরে প্রবেশ করলেই কি যক্ষ্মা রোগে আক্রান্ত হবে?

যক্ষ্মা রোগের জীবাণু শরীরে প্রবেশ করলেও যক্ষ্মারোগে আক্রান্ত নাও হতে পারে। শরীরের প্রতিরোধ ক্ষমতার কারণেও যক্ষ্মার জীবাণু ধ্বংস হয়ে যেতে পারে। অনেক সময় যক্ষ্মার জীবাণু ফুসফুসে বংশবৃদ্ধি করতে পারে, এর ফলে যক্ষ্মার সন্মক্রমক রোগ হতে পারে। তবে এর উপসর্গগুলো তেমন বোঝা যায় না এবং রোগ ছড়ায় না, বরং সুপ্ত অবস্থায় থাকে।

যাদের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা দুর্বল, যক্ষ্মার জীবাণু খুব দ্রুত তাদের শরীরে ছড়িয়ে যেতে পারে এবং দ্রুতাকারে শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতায় রক্ষাকারী কোষগুলো ধ্বংস করে দিতে পারে। একে সক্রিয় যক্ষ্মা বলা হয়ে থাকে।

আবার বছরের পর বছর যদি যক্ষ্মা রোগের জীবাণু শরীরে থেকে যায়, তাইলে কোনো এক সময় পরবর্তীতে সুপ্ত যক্ষ্মা থেকে সক্রিয় যক্ষ্মায় রূপ নিতে পারে।

ডা. মোহাম্মদ আজিজুর রহমান।

যক্ষার সাধারণ লক্ষণ:
অস্বাভাবিকভাবে ওজন হ্রাস পাওয়া। অবসাদ অনুভব করা। জ্বর। রাতে ঘাম হওয়া। কাপুনী। ক্ষুধা মন্দা।

অন্যান্য লক্ষণ: তিন সপ্তাহ বা বেশি সময় ধরে কাশি। কাশির সঙ্গে রক্ত যাওয়া। বুকে ব্যথা অথবা শ্বাস নেওয়ার সময় ও কাশির সময় ব্যথা হওয়া।

যক্ষ্মা রোগের চিকিৎসা

যক্ষ্মা রোগের চিকিৎসা সাধারণত দুই ভাগে বা ক্যাটাগরিতে ভাগ করা হয়ে থাকে।

ক্যাটাগরি এক: ছয় মাস ধরে ওষুধ খাওয়া।

ক্যাটাগরি দুই: আট মাস ধরে ওষুধ খাওয়া।

এছাড়া, চিকিৎসা ব্যর্থতা কিংবা রোগী পুনরায় যক্ষ্মা আক্রান্ত হলে সেভাবেই চিকিৎসা ব্যবস্থা অনুসরণ করা হয়।

তাই যক্ষ্মার লক্ষন দেখা দিলেই অতি দ্রুত চিকিৎসা নেওয়া প্রয়োজন।

ছবি: রয়টার্স।