চুল শুষ্ক ও রুক্ষ হয়ে যাওয়া, আগা ফাটা, খুশকি ও মাথার ত্বকে চুলকানি হওয়া, চুল পড়া ইত্যাদি— এই ধরনের বিভিন্ন জটিলতার জন্য রয়েছে সহজ প্রতিকার।
Published : 03 Mar 2016, 03:30 PM
সাজসজ্জাবিষয়ক একটি ওয়েবসাইটে এমনই কিছু সমস্যা ও সমাধান উল্লেখ করা হয়। এই সমস্যাগুলো সাধারণ হলেও এ থেকে মুক্তির উপায় পেতে অনেকেরই বেগ পেতে হয়। তাই এই প্রতিবেদনে কিছু উপায় উল্লেখ করা হল।
শুষ্ক চুল: শুষ্কতার কারণে চুল দেখতে উশকোখুশকো ও অস্বাস্থ্যকর দেখায়। চুলের আগা ফেটে যায় এবং ভঙ্গুর হয়ে যায়। তাই চুল কোমল ও স্বাস্থ্যজ্জ্বোল রাখতে কিছুটা বাড়তি যত্ন নেওয়া প্রয়োজন।
অলিভ অয়েল, ডিমের সাদা অংশ, মেয়োনেইজ’য়ের মিশ্রণ চুল ও মাথার ত্বকে ব্যবহার করলে চুল ময়েশ্চারাইজ হবে এবং আর্দ্রতা বজায় থাকবে। এর পাশাপাশি হেয়ার স্টাইলিং যেমন: স্ট্রেইটনার ও কার্লারের ব্যবহার, হেয়ার স্প্রে ইত্যাদি ব্যবহারে লাগাম টানুন। হেয়ার স্প্রে’তে থাকা অ্যালকোহল এবং রাসায়নিক উপাদান চুল শুষ্ক করে ফেলতে পারে।
তৈলাক্ত ত্বক: মানসিক চাপ, হতাশা, হরমোনের পরিবর্তন এবং চুলের যত্নের অভাবে চুল ও মাথার ত্বক তৈলাক্ত হয়ে যায়। অ্যাপেল সাইডার ভিনিগার ও লেবুর রস মাথার ত্বক ও চুলের তেল নিয়ন্ত্রণে বেশ কার্যকর। মাথার ত্বকে পরিমাণ মতো অ্যাপেল সাইডার ভিনিগার ও লেবুর রস নিয়ে হালকা হাতে মালিশ করতে হবে। এরপর শ্যাম্পু করে ফেলতে হবে।
যদি হাতে সময় না থাকে এবং চটজলদি চুলের তৈলাক্তভাব দূর করতে চান তাহলে বেইকিং সোডা ব্যবহার করা যেতে পারে। মাথার ত্বকে খানিকটা বেইকিং সোডা ছড়িয়ে আলতোভাবে মালিশ করে নিলে তা মাথার ত্বকে জমে থাকা বাড়তি তেল শুষে নেবে।
মাথার ত্বক চুলকানো: অতিরিক্ত শুষ্ক ত্বক এবং খুশকির সমস্যা থাকলে মাথায় চুলাকানি ও অস্বস্তি অনুভূত হতে পারে। তাছাড়া নিয়মিত শ্যাম্পু না করলেও মাথার ত্বকে চুলকানি হতে পারে। কয়েক ফোঁটা টি ট্রি অয়েল মিশিয়ে শ্যাম্পু করলে এ সমস্যা থেকে রেহাই পাওয়া যাবে।
এছাড়া মাথার ত্বকে অ্যালোভেরার জেল ঘষে নিলেও উপকার পাওয়া যায়। এতে থাকা ভিটামিন ই চুলের জন্য উপকারী।
খুশকি: মাথার ত্বকের খুবই পরিচিত সমস্যা খুশকি। অতিরিক্ত শুষ্ক ত্বক ও ছত্রাক সংক্রমণের কারণে মাথায় খুশকি হতে পারে। মাথার ত্বক ময়েশ্চারাইজ করতে বেশ উপকারী নারিকেল তেল। এতে মাথার ত্বক ও চুলে আর্দ্রতা জোগাবে এবং ছত্রাকের সংক্রমণও রোধ হবে। এছাড়াও ব্যবহার করা যায় টি ট্রি অয়েল। শ্যাম্পুর সঙ্গে টি ট্রি অয়েল মিশিয়ে নিলে খুশকি উপশম হবে।
চুল পড়া: প্রতিদিন কিছু সংখ্যক চুল পড়া স্বাভাবিক। ৫০ থেকে ১০০টি চুল পড়লে দুশ্চিন্তার কিছু নেই। তবে এর বেশি পড়তে শুরু করলে যত্ন নেওয়া উচিত। চুলের গোড়ায় পেঁয়াজের রস মালিশ করে ৩০ মিনিট অপেক্ষা করে শ্যাম্পু করে ফেলতে হবে। তাছাড়া চুলে অ্যালোভেরার জেল মেখে কয়েক ঘণ্টা অপেক্ষা করে শ্যাম্পু করলেও উপকার পাওয়া যাবে।
নারিকেলের দুধও চুল পড়া রোধ করতে পারে।
আগা ফাটা: শুষ্ক ও অপুষ্ট চুলের আগা ফাটা সমস্যা দেখা দিতে পারে। ডিমের সাদা অংশের সঙ্গে অ্যাভোকাডো বা পাকাপেঁপে চটকে মাথার চুলে মেখে কিছুক্ষণ অপেক্ষা করে ধুয়ে ফেলুন। উপকার পাওয়া যাবে। তাছাড়া খাবারের তালিকায় প্রচুর প্রোটিন ও ভিটামিন সি সমৃদ্ধ খাবার রাখলেও চুলের আগা ফাঁটা সমস্যা থেকে রেহাই পাওয়া যায়।
ভঙ্গুর চুল: দুর্বল চুল ভেঙে পড়া এবং ঝরে যাওয়ার সমস্যা বেশ পরিচিত। ভিটামিনের অভাব এবং অতিরিক্ত কেমিকলযুক্ত প্রসাধনী ব্যবহারের কারণে চুল দুর্বল ও ভঙ্গুর হয়ে যায়। অতিরিক্ত তাপ, জোরে জোরে চুল আঁচড়ানো ও কেমিকল সমৃদ্ধ প্রসাধনীর ব্যবহারে এ সমস্যা দেখা দেয়। এক্ষেত্রে নারিকেল তেল ও অলিভ অয়েল মিশিয়ে মালিশ করলে চুল হবে স্বাস্থ্যজ্জ্বোল।
পাতলা চুল: ঘন ঝলমলে চুল কার না পছন্দ। তবে অনেকের চুল তুলনামূলক পাতলা হয়ে থাকে। অ্যালোভেরা জেলে থাকা অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট চুল বৃদ্ধিতে সহায়তা করে। এছাড়া নারিকেল তেল ও অলিভ অয়েল সমপরিমাণে নিয়ে এরসঙ্গে একটি পাকাকলা চটকে মাথায় মাস্ক হিসেবে ব্যবহার করলেও উপকার পাওয়া যায়।
ছবির প্রতীকী মডেল: চৈতি। ছবি: ই স্টুডিও।