মিষ্টির দাসত্ব থেকে মুক্তি পেতে

মিষ্টিজাতীয় খাবার দেহের প্রচুর ক্ষতি করে। তবুও জেনেশুনে এর ক্ষতি থেকে আমরা নিজেদের বাঁচাতে পারি না।

লাইফস্টাইল ডেস্কবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 24 Feb 2016, 09:32 AM
Updated : 24 Feb 2016, 09:33 AM

স্বাস্থ্যবিষয়ক আমেরিকার একটি সংস্থা তাদের ওয়েবসাইটে চিনির প্রতি মানুষের এই প্রবল ভালোবাসা ত্যাগ করতে কী ধরনের পদক্ষেপ নেওয়া উচিত এই বিষয়ে একটি প্রতিবেদন প্রকাশ করে।

প্রতিবেদনে বলা হয় যারা সচেতন ভাবে চিনি বা চর্বি ত্যাগ করার চেষ্টা করেন তারাও মনের অজান্তে বিভিন্ন পণ্য থেকে চিনি খেয়ে ফেলেন। তাই চিনির এই কঠিন শৃঙ্খল থেকে রক্ষা পেতে কী করতে হবে এই বিষয়ে কিছু পরামর্শ দেওয়া হয়েছে।

মেটাবোলিজমে পরিবর্তন: বিশেষজ্ঞরা জানিয়েছেন, চর্বিজাতীয় খাদ্য আসলে আমাদের স্থূলতার কারণ নয়। শরীরের স্থূলতার পেছনে মূলত দায়ী চিনি এবং শর্করাজাতীয় খাদ্য। এইসব খাদ্যের আধিক্যের ফলে শরীরে ইনসুলিন নামক হরমোনের নিঃসরণ বেড়ে যায়। ইনসুলিন রক্তে উপস্থিত চর্বিকে শরীরে জমাট বাঁধতে নির্দেশ দেয়।

এছাড়াও মিষ্টিজাতীয় খাদ্য মস্তিষ্কে এক ধরনের আনন্দ তৈরি করে যার ফলে মস্তিষ্কও বারবার মিষ্টি খাওয়ার ইচ্ছা তৈরি করে।

‘ট্রান্সফ্যাট’কে না বলুন: যদি খাবারের লেবেলে লেখা থাকে ‘আংশিক হাইড্রোজেনেইটেড তেলযুক্ত’ তবে সেটাও ত্যাগ করা উচিত। এটি এক ধরনের শিল্পকারখানায় ব্যবহার্য তেল যা খাবারকে মচমচে করতে সহায়তা করে। সব ধরনের ফাস্টফুড, চিপস, কেক এবং কুকিজে এই তেল দেওয়া হয়। এটি শরীরের জন্য ক্ষতিকর এবং এর প্রভাব শরীরে অনেকক্ষণ থাকে।

কৃত্রিম মিষ্টিকারী পদার্থ: এ পদার্থগুলো মিষ্টির স্বাদ ভুলতে দেয় না ফলে সামনে একটা দুইটা মিষ্টি থাকলে লোভ সংবরণ করা সম্ভব হয় না। তবে আর দাসত্ব ঘুচবে কীভাবে! বরং এগুলোর বদলে প্রাকৃতিক মিষ্টিকারী পদার্থ, ফলের মিষ্টি, সবজির মিষ্টি, দারুচিনি, স্টেভিয়া ইত্যাদির মিষ্টত্ব ব্যবহার করে খাবার মিষ্টি করতে পারেন।

নো ফ্যাট বা নন ফ্যাট ফুডের ফাঁকিবাজি: অধিকাংশ লো-ফ্যাট বা নন-ফ্যাট লেবেল দেওয়া খাবারে চর্বি অংশর বাদ দিয়ে তাতে চিনি ঢুকিয়ে দেওয়া হয়। এতে লাভ বলতে কিছুই হয় না উল্টা শরীরে চিনির বোঝা বাড়িয়ে শরীরকেই চর্বি তৈরি কারখানা বানিয়ে ফেলে।

চলা-ফেরা বাড়ানো: ব্যায়াম করলে ওজন হ্রাস পায় এবং শরীর সুস্থ থাকে এটা সবাই জানে। তবে চিনির ফলে যে চর্বি শরীরে জমা হয় তা কমাতে ব্যায়াম যথেষ্ট নয়।

একটা গবেষণায় দেখা গেছে নিয়মিত ব্যায়াম করে এমন শহুরে কিছু লোক এবং কিছু শিকারিগোষ্ঠীর মানুষদের প্রতিদিনের ক্যালরির খরচ একই। তবে শিকারিগোষ্ঠীর লোকেদের চলাফেরার পরিমাণ বেশি তাই তাদের বেশি সবল দেখায়।

জরুরি একটা শান্তির ঘুম: কেউ যদি মানসিক চাপে থাকেন, মন খারাপ থাকে এবং ঘুম না আসে তবে অসময়ে অপ্রয়োজনীয় খাবার খাওয়ার একটা প্রবণতা তৈরি হয়। এছাড়াও অনুভূতির তারতম্য রক্ষায় অনেকেই মিষ্টিজাতীয় একটা খাবার খেয়ে মন ভালো করার চেষ্টা করেন। এটা আস্তে আস্তে মিষ্টির প্রতি একটা আসক্তি তৈরি করে।

এই আসক্তি থেকে বাঁচতে যখন মন খারাপ হবে বা রাত জাগা হবে নিজেকে অন্যভাবে খুশি রাখার চেষ্টা করা উচিত। ভালো গান শুনে, বই পড়ে, গোসল করে, চিনি ছাড়া মসলা-চা খেয়ে এবং সর্বোপরি একটা সুন্দর ঘুম দিয়ে নিজেকে সতেজ করার চেষ্টা করা উচিত।