স্বাস্থ্যবিষয়ক একটি ওয়েবসাইট থেকে জানা যায়, ডাক্তারি ভাষায় মুখের দুর্গন্ধ বা দুর্গন্ধযুক্ত শ্বাস পরিচিত ‘হ্যালিটোসিস’ নামে। এমনকী একটি মানসিক উপসর্গও আছে, যাকে বলা হয় ‘হ্যালিটোফোবিয়া’। এর কারণে মানুষ অকারণেই মুখে দুর্গন্ধের আশংকা করে।
মুম্বাইয়ের ডেন্টজ ডেন্টাল কেয়ার’য়ের কসমেটিক ডেন্টিস্ট ডা. কারিশমা জারাদি বলেন, “হ্যালিটোসিস অনেক কারণে হতে পারে। যেমন— ফিজিওলজিক, প্যাথলজিক্যাল, ওরাল কিংবা এক্সট্রা ওরাল।”
তিনি আরও বলেন, “অস্বাস্থ্যকর মুখগহ্বর বা মাঢ়ির রোগ যেমন— জিঞ্জিভাইটিস বা মাঢ়ি ফোলা ছাড়াও দন্তক্ষয়, দাঁতের ফাঁকে খাবার জমে থাকা, অপরিষ্কার দাঁতের কারণেও মারাত্মক দুর্গন্ধের জন্ম হয়।”
দিল্লির ক্লিয়ারপাথ (অর্থোডন্টিক্স) হেলথকেয়ার সার্ভিসেস’য়ের পণ্য বিশেষজ্ঞ ও ডেন্টাল সার্জন ডা. আথের ওয়ানি বলেন, “অনেক সময় মুখগহ্বর সুস্থ থাকলেও দুর্গন্ধ হয়। গ্যাস্ট্রোইনটেস্টাইনাল বা পাকস্থলি এবং ক্ষুদ্রান্ত ও বৃহদান্তের সমস্যার কারণেও তা হতে পারে। এমনকী রসুন ও পেঁয়াজ খেলেও মুখে দুর্গন্ধ হয়।”
তাই কারও সঙ্গে সাক্ষাতের আগে পেঁয়াজ ও রসুন পরিহার করার পরামর্শ দেন বিশেষজ্ঞরা।
মুম্বাইয়ের ইন্টারন্যাশনাল সেন্টার ফর ডেন্টাল কেয়ার’য়ের কসমেটিক ডেন্টিস্ট ডা. মুকুল দাভোলকার বলেন, “আজেবাজে জিনিস চাবানোর বদভ্যাস, ভিটামিনের অভাব, ক্যান্সার ও কেমোথেরাপি, মাদক ইত্যাদির কারণে মাঢ়িতে রক্তক্ষরণ থেকে হতে পারে হ্যালিটোসিস। এছাড়া পানিশূন্যতা থেকেও মুখে দুর্গন্ধ হয়।”
হ্যালিটোসিস সারানোর উপায়
- দিনে দুবার টুথপেস্ট দিয়ে দাঁত ব্রাশ করতে হবে। এটি দাঁতের ওপর প্লাক ও পাথর জমা না হওয়া নিশ্চিত করে, যা কিনা হ্যালিটোসিসের প্রধান কারণ।
- নিয়মিত মাউথওয়াশ ব্যবহার করুন।
- দাঁতের ফাঁকে অনেক জীবাণু থাকে যা ফ্লসিং ছাড়া পরিষ্কার করা অসম্ভব।
- দাঁত মাজার পাশাপাশি জিহবাও পরিষ্কার করা উচিৎ। এটি মুখগহ্বর সুস্থ রাখে।
- ছয়মাস পরপর ডেন্টিস্টের কাছে পরীক্ষা করানো উচিত। দাঁতের ওপরে জমে থাকা পাথর সরাতে স্কেলিং করানো যেতে পারে।
- দিনে অন্তত আট গ্লাস পানি পান করুন।
- প্রতি দুতিন ঘন্টা পরপর কম ক্যালোরির ছোট ছোট খাবার খান।
- কাঁচা রসুন, পেঁয়াজ এবং অ্যালকোহল পরিহার করুন।
- মাঢ়ি বা মুখে কোনো সমস্যা না থাকার পরেও দুর্গন্ধ হলে গ্যাস্ট্রিসাইটিস, হাইয়েটাস হার্নিয়া, ডায়বেটিস, যকৃতের রোগবিষয়ে ডাক্তারি পরীক্ষা করান।