কম বয়সে চুল পড়লে!

ছাত্রজীবন পার করছেন, অথচ এখনই মাথা খালি হতে শুরু করেছে। ভেবে পাচ্ছেন না কী করবেন? তাই জেনে নিন তরুণ বয়সে চুল পড়ার কারণ।

মামুনুর রশীদ শিশিরবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 30 Dec 2015, 09:36 AM
Updated : 30 Dec 2015, 09:39 AM

আর সমস্যা জানা থাকলে সমাধানও বের হয়।

চুল পড়ার রয়েছে নানান ধরণ ও কারণ। এই বিষয়ে জানিয়েছেন শহীদ সোহরাওয়ার্দী মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালের চর্মরোগ বিভাগের প্রধান এবং অধ্যাপক ডা. রাশেদ মোহাম্মদ খান।

তিনি বলেন, “তরুণ প্রজন্মের খাদ্যাভ্যাস এবং ঘুমের অনিয়ম চুল পড়ার আসল কারণ। তাছাড়া বর্তমানে পড়াশোনার চাপ এবং বিভিন্ন কারণে তাদের মধ্যে মানসিক চাপও থাকে বেশি। আর পর্যাপ্ত ঘুম না হলে এবং মানসিক চাপ বেশি থাকলে চুল পড়ার সমস্যা বেড়ে যেতে পারে।”

“সকালে নাস্তা না করা, অতিরিক্ত ফাস্টফুড খাওয়ার অভ্যাস, সবজি এবং ফলমূল এড়িয়ে চলা ইত্যাদি কারণে চুল বেশি পড়ে।” বলেন ডা. রাশেদ।

খাওয়া-দাওয়া এবং ঘুমের অনিয়ম ছাড়াও আরও অনেক কারণেই চুল পড়ার সমস্যা দেখা দিতে পারে।

যেমন, কোনও অস্ত্রোপচার হলে পরে চুল পড়া বেড়ে যেতে পারে। গর্ভাবস্থাতেও চুল পড়া বেড়ে যায়। তাছাড়া থাইরয়েডের সমস্যা বা ওষুধের পার্শ্বপ্রতিক্রিয়াতেও চুল পড়ে। তবে এক্ষেত্রে ভয় পাওয়ার কারণ নেই, আবার চুল গজাবে।

চুল স্ট্রেইট করা, কার্ল করা ইত্যাদি নারীদের চুল পড়ার একটি বড় কারণ। পাশাপাশি নারীদের শরীরের টেস্টোস্টেরনের পরিমাণ বেড়ে গেলেও চুল পড়ে যেতে পারে। 

চিকিৎসক বলেন, “চুল পড়ার আরেকটি ধরণ হল ‘অ্যালোপেসিয়া এরিয়েটা’। এক্ষেত্রে মাথার বিভিন্ন স্থানে গোলাকার আকৃতিতে চুল পড়ে যেতে থাকে। এর প্রধান কারণ আমাদের শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা। যার কাজ হল শরীরের বিভিন্ন ক্ষতিকর উপাদান ধ্বংস করা।”

তিনি আরও বলেন, “এক্ষেত্রে মাথার একটি নির্দিষ্ট জায়গার চুলকায়। তখন শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা মনে করে এটি ক্ষতিকর উপাদান। এবং ওই স্থানের ‘হেয়ার ফলিকল’ ধ্বংস করে দেয়। এক্ষেত্রে চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে হবে।”

“এছাড়াও জিনগত কারণে চুল পড়তে পারে। বংশের কারও চুল পড়ে যাওয়ার সমস্যা থাকলে উত্তরাধিকার সুত্রে টাক মাথা পেতে পারেন। এক্ষেত্রে মাথার পাশের চুলগুলো না পড়লেও মাথার মাঝের চুল পড়ে যেতে থাকে। আবার অনেক সময় এই বংশপরম্পরা আপনাকে দিয়েই শুরু হতে পারে। এক্ষেত্রে ওষুধের মাধ্যমে চুল ধরে রাখা যায়। তবে তা পুরোপুরি সারানো যায় না।”— বললেন এই চিকিৎসক।

চুল পড়া রোধ করার জন্য অন্যতম প্রয়োজনীয় পুষ্টি উপাদান হল, বায়োটিন। এজন্য প্রচুর ফলমূল এবং শাকসবজি খেতে হবে। তাছাড়া প্রতিদিন খাদ্য তালিকায় কার্বোহাইড্রেট এবং প্রোটিনজাতীয় খাবারও রাখতে হবে।

চুল পড়া রোধ এবং নতুন চুল গজানোর জন্য বিভিন্ন ধরনের হেয়ার ট্রিটমেন্ট থেরাপিও করা হয়ে থাকে। 

ডা. রাশেদ জানান, এক্ষেত্রে রয়েছে নেসো থেরাপি, পিআরপি থেরাপি এবং ফটো থেরাপি।

তবে এর কোনোটাতেই যদি ফল পাওয়া না যায় তাহলে হেয়ার ট্রান্সপ্লান্ট করা হয়। এ প্রক্রিয়ায় মাথার অন্য অংশের চুল এনে যেখানে চুল পড়ে যাচ্ছে সে অংশে লাগিয়ে দেওয়া হয়।

ছবি: রয়টার্স।