ঢাকার কাছে বনভোজন কেন্দ্র

রাজধানী থেকে বেশি দূরে নয় এরকম কিছু পিকনিক স্পট নিয়েই এই প্রতিবেদন।

মুস্তাফিজ মামুনবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 25 Dec 2015, 12:16 PM
Updated : 25 Dec 2015, 06:15 PM

শীত এলেই পিকনিক বা বনভোজনের ধুম পড়ে। স্কুল, কলেজ, বিশ্ববিদ্যালয়, অফিস, পাড়া-মহল্লা এমনকি পরিবারের সবাই মিলে আনন্দময় কিছুটা সময় কাটানোর জন্য এ সময়ে বের হন অনেকেই। তবে সেজন্য জায়গাটি সঠিক না হলে বনভোজন আনন্দময় নাও হতে পারে।

ভাওয়াল জাতীয় উদ্যান: গাজীপুর সদর ও শ্রীপুর থানা জুড়ে অবস্থিত ভাওয়াল জাতীয় উদ্যান। পৃথিবীর অন্যান্য জাতীয় উদ্যানের আদলে ৬৪৭৭ হেক্টর জমিতে ১৯৭৩ সালে এ উদ্যান সরকারী ভাবে গড়ে তোলা হয়। ভাওয়াল জাতীয় উদ্যানের মূল গাছ হল শাল। এছাড়াও নানা রকম গাছ গাছালিতে পরিপূর্ণ। বনভোজনের জন্য এ উদ্যান আদর্শ জায়গা।

ভেতরে ৩১টি বনভোজন কেন্দ্র আছে। এগুলো হল সোনালু, পলাশ, কাঞ্চন, মহুয়া, শিমুল-১, শিমুল-২, শিউলী-১, শিউলী-২, নিরিবিলি-১, নিরিবিলি-২, নিরিবিলি-৩, নিরিবিলি-৪, বনশ্রী-১, বনশ্রী-২, বনশ্রী-৩, বনশ্রী-৪, বনরূপা-১, বনরূপা-২, বনরূপা-৩, কদম, অবকাশ-১-অবকাশ-১০ এবং আনন্দ ইত্যাদি।

সঙ্গে আছে বিশ্রামাগারসহ বনভোজন করার সব রকম সুবিধা। ১ নভেম্বর থেকে ১৫ মার্চ পর্যন্ত এসব বনভোজন কেন্দ্রের প্রতিটির প্রতিদিনের জন্য ভাড়া ভ্যাটসহ ৬৩২.৫০ টাকা।

গাজিপুরের ভাওয়াল জাতীয় উদ্যান।

বনভোজনে যেতে হলে আগাম বুকিং নিশ্চিত করতে হবে। যোগাযোগ: বন ভবন, ১০১, মহাখালী, ঢাকা ফোন ০২৮৮৩৩৭০০।

আনসার একাডেমি, সফিপুর: গাজীপুর জেলার কালিয়াকৈর উপজেলায় অবস্থিত আনসার-ভিডিপি একাডেমিতে বনভোজনের জন্য আদর্শ একটি জায়গা। বেশ কয়েকটি আকর্ষণীয় বনভোজন কেন্দ্র আছে এখানে। বনভোজনে প্রয়োজনীয় সব সুবিধাও মিলবে।

শফিপুর আনসার একাডেমির কয়েকটি বনভোজন কেন্দ্র হল- চারশ জনের ধারণ ক্ষমতা সম্পন্ন লেক ভিউ, ভাড়া ২০ হাজার টাকা। আটশ জনের ধারণ ক্ষমতা সম্পন্ন তপোবন ও জুঁই, ভাড়া ১২ হাজার টাকা। তিনশ জনের ধারণ ক্ষমতা সম্পন্ন মালঞ্চ ও আনন্দ, ভাড়া ১২ হাজার টাকা। চারশ জনের ধারণ ক্ষমতা সম্পন্ন ছায়ানীড় ও হাসনাহেনা  ভাড়া ১২ হাজার টাকা।

এছাড়া পাঁচশ জনের ধারণ ক্ষমতা সম্পন্ন নিরিবিলি বনভোজন কেন্দ্রের ভাড়া ৮ হাজার টাকা। চারশ জনের ধারণ ক্ষমতা সম্পন্ন পল্লব, ভাড়া ৮ হাজার টাকা। তিনশ জনের ধারণ ক্ষমতা সম্পন্ন অনন্যা, অনামিকা, শাপলা, বর্ণালী, বর্ষা, তেতুলিয়া, বনরূপা, অবসর’য়ের ভাড়া ৮ হাজার টাকা। দুইশ জনের ধারণ ক্ষমতার তনুশ্রী, তরুলতা, বান্দরবান, বনশ্রী, বনলতা, মধুবন ও সৌখিন’য়ের ভাড়া ৮ হাজার টাকা।

এছাড়া একশ জনের ধারণ ক্ষমতার সূচনা বনভোজন কেন্দ্রের ভাড়া ৮ হাজার টাকা।

এসব পিকনিক স্পটে আছে গাড়ি পার্কিং, রোদ ছাউনি, পানি সরবরাহসহ রান্নার ব্যবস্থা। যোগাযোগ ০২ ৭২১৪৯৫১-৯।

নুহাশপল্লী: প্রয়াত কথাসাহিত্যিক ও চলচ্চিত্র নির্মাতা হুমায়ূন আহমেদের বাগানবাড়ি ও শুটিং স্পট। ৯০ বিঘারও বেশি জায়গা নিয়ে এই নন্দন কানন বনভোজনের জন্য আদর্শ একটি জায়গা।

এখানে আছে একটি ছোট আকারের চিড়িয়াখানা, সান বাঁধানো ঘাটসহ একটি বিশাল পুকুর। দৃষ্টিনন্দন কটেজ, ট্রি হাউস ইত্যাদি।

নুহাশ পল্লীর ভেতরের বিশেষ আকর্ষণ হল এর ঔষধি গাছের বাগান। ডিসেম্বর, জানুয়ারি ও ফেব্রুয়ারি এই তিন মাস নুহাশ পল্লী সাধারণত বনভোজনের জন্য ভাড়া দেওয়া হয়।

অনুর্ধ তিনশ জনের দলের জন্য নুহাশ পল্লীর ভাড়া সরকারী ছুটির দিনে ৬০ হাজার টাকা। সাধারণ দিনে ৫০ হাজার টাকা। যোগাযোগ ০১৭১২০৬০৯৭১।

ফ্যান্টাসি কিংডম: আশুলিয়ার জামগড়ায় বিনোদন কেন্দ্র ফ্যান্টাসি কিংডমেও আছে বনভোজনের ব্যবস্থা। এর ভেতরে বনভোজন করার জন্য রয়েছে সব ধরনের সুযোগ সুবিধা। তাছাড়া কর্তৃপক্ষ বনভোজনের এ মৌসুমে বিভিন্ন প্যাকেজও অফার দিয়ে থাকেন। যোগাযোগ ০২ ৯৮৯৬৪৮২, ৮৮৩৩৭৮৬

নন্দন পার্ক: সাভারের অদূরে চন্দ্রার বাড়ই পাড়ায় নন্দন পার্ক অ্যামিউজমেন্ট পার্কেও আছে বনভোজনের ব্যবস্থা। নন্দন পার্কের ড্রাই জোন ও ওয়াটার ওয়ার্ল্ডে মজার সব রাইড উপভোগের পাশাপাশি বনভোজন করারও ব্যবস্থা আছে।

বনভোজনের জন্য বিভিন্ন রকম প্যাকেজও থাকে মৌসুমে। যোগাযোগ ০১৭৫৫৬৬৭৭০৩, ০২ ৯৮৬২১৪৯।

লোক ও কারুশিল্প ফাউন্ডেশন, সোনারগাঁও।

লোক ও কারুশিল্প ফাউন্ডেশন, সোনারগাঁও

বাংলার প্রাচীন রাজধানী সোনারগাঁওয়ের লোক ও কারুশিল্প ফাউন্ডেশন চত্বরে আছে বেশ কয়েকটি পিকনিক স্পট। লোক ও কারুশিল্প ফাউন্ডেশন সপ্তাহের বুধ, বৃহস্পতি ও সরকারী ছুটির দিনগুলোতে বন্ধ থাকে। এখানকার পিকনিক স্পটগুলো আগে থেকে বুকিং নিশ্চিত করতে হবে। যোগাযোগ: ০২৭৬৫৬৩৩১। 

রাসেল পার্ক: ঢাকা থেকে প্রায় ২৫ কিলোমিটার দূরে রূপগঞ্জে রয়েছে মনোমুগ্ধকর এ পিকনিক স্পট। প্রায় ৩০ বিঘার মতো জায়গা জুড়ে এখানে রয়েছে সবুজের সমারোহ। রাসেল পার্কে রয়েছে তিনটি পিকনিক স্পট। এছাড়া পার্কের ভেতরেই রয়েছে ছোট একটি চিড়িয়াখানা।

এখানকার ভিন্ন ভিন্ন চারটি স্পটে একদিনে সর্বোচ্চ পাঁচশ জন বনভোজন করতে পারেন। তবে একই দিনে এখানে একটির বেশি দলকে বনভোজনের অনুমতি দেওয়া হয় না। কটেজসহ সবগুলো স্পটের একদিনের ভাড়া ২৫ হাজার টাকা। যোগাযোগ ০১৭১৫৪৬০৬৪।

এছাড়াও ঢাকার আশপাশের আরও কিছু ভনভোজন কেন্দ্র হল:-

উৎসব পিকনিক স্পট: ঢাকা থেকে প্রায় ৫০ কিলোমিটার দূরে ঢাকা ময়মনসিংহ সড়কের হোতাপাড়ার কাছেই এ বনভোজন কেন্দ্র। ছয়শ জনের বনভোজনের সব ব্যবস্থা আছে এখানে। ভাড়া ছুটির দিনে ভ্যাটসহ ৪০ হাজার টাকা। অন্যান্য দিনে এবং লোক সংখ্যা কম হলে ভাড়ায় ছাড় দেওয়া হয়। যোগাযোগ ০১৭১৩২৬০৪৭১, ০২৮৬২৬৩৭৬।

রাঙামাটি ওয়াটার ফ্রন্ট রিসোর্ট: গাজীপুরের চন্দ্রায় অবস্থিত। বনভোজন কেন্দ্র, সুইমিং পুল, লেকে মাছ ধরা ও নৌ ভ্রমণের ব্যবস্থা আছে। সর্বোচ্চ দুই হাজার জনের বনভোজনের ব্যবস্থা আছে। যোগাযোগ ০১৮১১৪১৪০৭৪।

গাজীপুরের উৎসব পিকনিক স্পট।

পন্ড গার্ডেন:
নারায়ণগঞ্জের কাঞ্চনে অবস্থিত। প্রায় পঁচিশ বিঘা জায়গাজুড়ে এ বনভোজন কেন্দ্র। যোগাযোগ ০১৭২৭৩৯১১৯৮।

দিপালি রিসোর্ট: গাজীপুরের মাস্টার বাড়িতে দিপালি রিসোর্টেও আছে বনভোজন কেন্দ্র। যোগাযোগ ০১৭৩৩৭১৮২৮৭।

আরশিনগর: গাজীপুরের ভাওয়ালে শালবনের মাঝে আরশিনগর পিকনিক স্পট। ঢাকা থেকে দূরত্ব প্রায় ত্রিশ কিলোমিটার। যোগাযোগ ০১৭৩২৩৫৪০০৭।

মোহাম্মদী গার্ডেন: আমরাইয়ের মহিষাশী এলাকায় অবস্থিত বনভোজন কেন্দ্র। যোগাযোগ ০১৭১৭৩৭৪৯০৪।

হ্যাপি ডে ইন: ভাওয়াল জাতীয় উদ্যানের বিপরীত দিকে অবস্থিত এ বনভোজন কেন্দ্র। যোগাযোগ ০১৯৩৯০৪৭৫৮৬।

পুষ্পদাম পিকনিক স্পট: গাজীপুরের বাঘারবাজারে অবস্থিত পুষ্পদাম পিকনিক স্পট। যোগাযোগ ০১৮১৯২১৬১৫৭।