যকৃত সুস্থ রাখতে

যকৃতের রোগ মানুষের নীরব ঘাতক। রোগের লক্ষণ সহজে প্রকাশ পায় না বলে আগে থেকেই যত্নে রাখা প্রয়োজন।

তানভীর মাহমুদবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 24 Dec 2015, 12:02 PM
Updated : 24 Dec 2015, 12:02 PM

অ্যালকোহল ত্যাগ, পর্যাপ্ত পানি পান, আঁশ ও ভিটামিন সমৃদ্ধ শাকসবজি খাওয়ার মাধ্যমে যকৃত ভালো রাখা যাবে। স্বাস্থ্যবিষয়ক একটি ওয়েবসাইটে বিভিন্ন রোগ ও জটিলতা থেকে যকৃত সুস্থ রাখার উপায় উল্লেখ করা হয়।

ভারতের ফোর্টিস এসকর্টস হার্ট ইনস্টিটিউটের পুষ্টি বিশেষজ্ঞ ডা. রূপালি দত্ত বলেন, “অধিকাংশ ক্ষেত্রেই রোগীরা বুঝতেও পারেন না যে, তাদের যকৃতের রোগ আছে, ততক্ষণে দেরি হয়ে যায়।”

তিনি জানান, প্রাথমিক পর্যায়ে রক্ত পরীক্ষাও যকৃতের রোগ ধরা যায় না। কেবল গুরুতর পর্যায়ে গেলেই লক্ষণ প্রকাশ পায়। এমনকি চূড়ান্ত পর্যায়েও উপসর্গ হতে পারে সাধারণ ক্লান্তি, রক্তশূন্যতা কিংবা পা ফোলা, ইত্যাদি।     

যকৃত সুস্থ রাখার জন্য নিম্নলিখিত বিষয়গুলো মাথায় রাখতে হবে

অ্যালকোহলকে না বলুন: অ্যালকোহল পান যকৃতের বহু জটিলতার একমাত্র কারণ। সুস্থ যকৃতের জন্য অ্যালকোহল ছেড়ে দেওয়া একটি বড় পদক্ষেপ।

ফোর্টিস এসকর্টস লিভার অ্যান্ড ডাইজেস্টিভ ইন্সটিটিউটের প্রধান পরিচালক ডা. অজয় কুমার বলেন, “সাধারণ মানুষের জানা থাকা উচিত, ঠিক কী মাত্রার বাইরে অ্যালকোহল পান স্বাস্থ্য ঝুঁকির কারণ হতে পারে। কেউ কেউ কোনো উপসর্গ ছাড়াই অধিক মাত্রার অ্যালকোহল দীর্ঘদিন সেবন করতে পারেন, আবার কেউ কেউ সামান্য পরিমাণ অ্যালকোহল সেবনেই আক্রান্ত হতে পারেন।”

মেদ ঝরানো: সমস্যাক্রান্ত যকৃতের একটি প্রাথমিক কারণ হচ্ছে স্থূলতা। তাই যকৃত সুস্থ রাখতে অতিরিক্ত ওজন ছেঁটে ফেলা জরুরি। নিয়মিত ব্যায়াম ও শরীরচর্চা আপনাকে এনে দেবে একটি স্বাস্থ্যকর ওজন, সঙ্গে কমাবে যকৃতরোগের ঝুঁকি। শুধু তাই নয়, শরীরচর্চার ফলে যকৃতের থেকে নিঃসৃত এনজাইমের কার্যক্রমও উন্নত হয়।

পর্যাপ্ত পানি পান: যকৃতের একটি প্রধান কাজ হল অক্ষতিকর বিষাক্ত পদার্থগুলো, যা আমরা খাদ্য, পানীয় ও বাতাসের মাধ্যমে গ্রহণ করি, সেগুলো নিষ্কাশন করা। এই নিষ্কাশন প্রক্রিয়াকে ত্বরান্বিত করতে দৈনিক আট থেকে দশ গ্লাস পানি পান করা উচিত।

নিয়ম করে পাঁচ ফল ও সবজি: ডা. রূপালি পরামর্শ দেন যে, দৈনিক অন্তত পাঁচটি ফল ও সবজি খাওয়া স্বাস্থ্যকর খাদ্যাভ্যাসের লক্ষণ। যা যকৃত ভালো রাখায় সহায়ক।

প্রোবায়োটিক: বেশ কিছু গবেষণায় ‘ফ্যাটি লিভার’ রোগের সঙ্গেও বিঘ্নিত আন্ত্রিক কার্যক্রমের জোরালো সংযোগের প্রমাণ পাওয়া গেছে। প্রোবায়োটিক অন্ত্রের ভেতর ভারসাম্য রাখতে এবং দেহ থেকে ক্ষতিকর পদার্থ বের করে নিতে সহায়তা করে।

উল্লেখ্য, প্রোবায়োটিক হল কিছু উপকারী জীবন্ত ব্যাকটেরিয়া ও ইস্টের মিশ্রণ। এটা পাকস্থলি এবং অন্ত্রে প্রবেশের পর নিজেদের সংখ্যা বৃদ্ধি করে অন্ত্রের পিএইচ নিয়ন্ত্রণ করার পাশাপাশি কিছু নির্যাস তৈরি করে যা অপকারী ব্যাকটেরিয়ার বংশ বিস্তারে বাধা সৃষ্টি করে।

ভিটামিন বি ও ভিটামিন সি: ভিটামিন সি’তে আছে নিরাময়কারী বৈশিষ্ট্য ও রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধির ক্ষমতা। ভিটামিন বি কমপ্লেক্স যকৃতের কার্যক্রমে সহায়তা করে।

আমিষ: আমিষ যকৃতের উপকারী কোষগুলো পুনরায় তৈরিতে সাহায্য করে।

আঁশ ও খনিজ পদার্থ: সকালের নাস্তায় চর্বির ভাগ কম এবং আঁশ ও খনিজ পদার্থের পরিমাণ বেশি হওয়া জরুরি।

ড্যান্ডিলাইয়ান চা: যকৃতের অসুখের জন্য পরীক্ষিত প্রতিষেধক। এটা পিত্তের একধরনের পাচক রস নিঃসরণে সহায়তা করে।

ছবি: রয়টার্স।