শরীরের নানাবিধ উপকার করার পাশাপাশি সৌন্দর্য্যচর্চাতেও ব্যবহার হয়।
Published : 03 Dec 2015, 03:03 PM
বাংলাদেশ গার্হস্থ্য অর্থনীতি কলেজের খাদ্য ও পুষ্টিবিজ্ঞান বিভাগের প্রধান ফারাহ মাসুদা বলেন, “টমেটোকে মৌসুমি ফল বা সবজি যে যাই বলুক না কেনো এর গুণাগুণ নিয়ে কারো দ্বিমত থাকার কথা না। রয়েছে অনেক পুষ্টিগুণ।”
তিনি আরও বলেন, “টমেটো পেকে লাল হওয়ার সঙ্গে এর পুষ্টিগুণ আরও বৃদ্ধি পায়।”
এই টাটকা ফলের প্রধান অংশ পানি। এর প্রায় ৮০ থেকে ৯৫ শতাংশ পানি। ফলে প্রোটিন ও কার্বোহাইড্রেট তুলনামূলক কম থাকে। দ্রবণীয় শর্করা ও প্রোটিন বাদে ফলের পুষ্টিমান মূলত খনিজ ও ভিটামিন। এইসবের জন্য ফলকে দেহ রক্ষাকারী খাদ্য বলা হয়।
টমেটোর পুষ্টিগুণ সম্পর্কে ফারাহ মাসুদা জানান-
প্রতি ১০০ গ্রাম টমেটোতে রয়েছে ৩৫১ মাইক্রো গ্রাম ক্যারোটিন। ক্যারোটিন মানব দেহে ভিটামিন এ’র কাজ করে। অর্থাৎ দৃষ্টিশক্তি প্রখর রাখে ও রেটিনা সুস্থ রাখে।
পাকা-টমেটোতে আছে ভিটামিন সি। যা দাঁত ও হাড়ের সুস্থতা বজায় রাখে। প্রতি ১০০ গ্রাম টমেটোতে ২৭ মি.গ্রা ভিটামিন সি থাকে।
প্রতি ১০০ গ্রাম পাকা-টমেটোতে ০.১৩ মি.গ্রা থায়ামিন থাকে। থায়ামিন পরোক্ষভাবে স্নায়ুতন্ত্র, হৃদপিণ্ড ও পরিপাকতন্ত্রের সুস্থতা রক্ষা করে।
প্রতি ১০০ গ্রাম পাকা-টমেটোতে ০.০৬ মি.গ্রা রিবোফ্লেভিন পাওয়া যায়। এটি বিভিন্ন গ্রন্থি ও কলা- ত্বক, চোখ, স্নায়ু ইত্যাদির সুস্থতা রক্ষা করে।
টমেটোতে সামান্য পরিমাণে লৌহ পাওয়া যায়। প্রতি ১০০ গ্রাম পাকা-টমেটোতে ০.৪০ মি.গ্রা লৌহ থাকে।
পাকা-টমেটোতে হাড় ও দাঁত গঠনকারী ক্যালসিয়াম পাওয়া যায়। সাধারণত প্রতি ১০০ গ্রাম পাকা-টমেটোতে ৪৮ মি.গ্রা ক্যালসিয়াম থাকে।
ফসফরাস দেহের কোষকলার সুস্থতা রক্ষা করে। প্রতি ১০০ গ্রাম টমেটোতে ২০ মি.গ্রা ফসফরাস পাওয়া যায়।
পাকা-টমেটো রান্নার পরে পুষ্টিগুণে বৃদ্ধি পায়।
টমেটোর উপকারিতা: অনেক গবেষণায় দেখা গেছে,পাকা-টমেটো হৃদরোগ ও বিভিন্ন ধরনের ক্যান্সার প্রতিরোধে সাহায্য করে। এটি হৃদপিণ্ডের কার্য ক্ষমতাকে আরও শক্তিশালী করে। টমেটো দেহের হাড় মজবুত করে।
টমেটো রাতকানা রোগ নিরাময়ে সাহায্য করে। এটি কিডনিতে পাথর জমা রোধ করতে সাহায্য করে। এছাড়াও পাকা-টমেটো বাতের ব্যাথা দূর করতে সাহায্য করে।
পাকা-টমেটো ফুসফুস ও যকৃতের ক্যান্সার প্রতিরোধক হিসেবে পানি শূন্যতারোধে সাহায্য করে।
টমেটোর পাতার রসে ভিটামিন ডি সামান্য পরিমাণে থাকে। যা ক্যালসিয়াম ও ফসফেটের বিপাকে প্রভাব বিস্তার করে রিকেটস, অস্ট্রিওম্যালেয়শিয়া, অস্ট্রিওপেরোসিসের ঝুঁকি কমায়।
দৃষ্টি আকর্ষণের জন্য বর্তমানের ব্যবসায়ীরা নানারকমের রাসায়নিক পদার্থ ব্যবহার করে থাকেন। এতে টমেটোর পুষ্টিগুণ অনেকাংশে নষ্ট হয়ে যায় এবং এটি স্বাস্থের পক্ষে ক্ষতিকারক। তাই অতিরিক্ত উজ্জ্বল টকটকে লাল রংয়ের টমেটো না কেনার পরামর্শ দেন ফারহ মাসুদা।
প্রচ্ছদের ছবি: দিপ্ত।